চারদিনের দ্বিপক্ষীয় সরকারি সফরে চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের পথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুদেশের মধ্যকার সম্পর্ক ‘কৌশলগত অংশীদারিত্ব’ থেকে ‘কৌশলগত বিস্তৃত সহযোগিতা অংশীদারিত্বে’ উন্নয়নের ক্ষেত্রে তার এ সফরকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে।
সোমবার (৮ জুলাই) বেলা ১১টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে যাবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি চার্টার্ড ফ্লাইট। বেইজিং সময় সন্ধ্যা ৬টায় বেইজিং ক্যাপিটাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইটটি অবতরণের কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন…বাংলাদেশে বন্যা ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে ৬.২ মিলিয়ন ডলার সহায়তা সিইআরএফের
জানা গেছে, ৮-১১ জুলাই বেইজিংয়ে অবস্থানকালে ১০ জুলাই চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিংপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক এবং চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের সঙ্গে একটি প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চার দিনের এই দ্বিপাক্ষিক সফরে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে ২০ থেকে ২২টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এ সফরকালে অর্থনৈতিক ও ব্যাংকিং খাতে সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, ডিজিটাল অর্থনীতি, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সহায়তা, ৬ষ্ঠ ও ৯ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু নির্মাণ, বাংলাদেশ থেকে কৃষিপণ্য রফতানি ও দুদেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগের সমঝোতা স্মারকগুলো স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, দুই দেশের বেশ কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধনেরও ঘোষণা করা হবে এ সফরে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রে পাওয়া সফরসূচি অনুযায়ী, সফরের দ্বিতীয় দিনে ৯ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের (এআইআইবি) প্রেসিডেন্ট জিন লিকুন।
আরও পড়ুন…কোপা থেকে এবারও ছিটকে পড়লো পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা
এরপর বেইজিংয়ের সাংগ্রি-লা সার্কেলে চীনের ওয়ার্ল্ড সামিট উইং-এ বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য, ব্যবসা ও বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধা বিষয়ক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন বাংলাদেশ সরকারপ্রধান।
একইদিন বিকেলে বেইজিংয়ের গ্রেট হল অব দ্য পিপল-এ প্রধানমন্ত্রী ও কনসাল্টেটিভ পার্টির প্রেসিডেন্ট মি. ওয়াংয়ের মধ্যে একটি বৈঠক হওয়ারও কথা রয়েছে।
শেখ হাসিনা পরে তিয়েন আনমেন স্কয়ারে পিপলস হিরোদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। সন্ধ্যায় বাংলাদেশ হাউসে চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আয়োজিত এক নৈশভোজে যোগ দেবেন তিনি।
তৃতীয় দিন ১০ জুলাই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও চীনের স্টেট কাউন্সিলের প্রিমিয়ার লি কিয়াং-এর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে গ্রেট হল অব দ্য পিপল-এ। এ সময় তাদের উপস্থিতিতে সমঝোতা স্মারকসহ বেশ কিছু নথিতে স্বাক্ষর করা হবে।
পরে একই স্থানে চীনের স্টেট কাউন্সিলের প্রিমিয়ার আয়োজিত মধ্যাহ্ন ভোজসভায় যোগ দিবেন শেখ হাসিনা। বিকেলে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন তিনি।
সফর শেষে ১১ জুলাই বেইজিং সময় বেলা ১১টায় বেইজিং ক্যাপিটাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি চার্টার্ড ফ্লাইটে (বিজি১৭০৪) দেশের উদ্দেশে রওনা দেবেন প্রধানমন্ত্রী। ফ্লাইটটি একইদিন বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন…অপূর্ব আলাউদ্দিন লাঞ্ছিতের ঘটনায় ডিইউজে নেতাদের নিন্দা ও প্রতিবাদ
এর আগে সবশেষ ২০১৯ সালের জুলাইয়ে বেইজিং সফর করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারও বছর তিনেক আগে ২০১৬ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। দুই দেশ আগামী বছর তাদের প্রথম কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করবে।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.