ঢাবির প্রোভস্টসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা – তোফাজ্জলকে পিটিয়ে হত্যা

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদন

 বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আক্তারুজ্জামানের আদালতে তোফাজ্জলের বোন বাদী হয়ে মামলাটি করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক তোফাজ্জল হোসেনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের প্রভোস্টসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের করা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত এ মামলার কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বলেছেন।

বাদীর আইনজীবী জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মামলায় কাউকে নির্দিষ্ট করে আসামি করা হয়নি। অথচ ঘটনার ভিডিওতে সবার চেহারা পরিষ্কার দেখা গেছে। তারপরও তাদের আসামি করা হয়নি। আসামি করা হয়েছে অজ্ঞাতদের।

তিনি বলেন, এ মামলার ভবিষ্যৎ নিয়ে বাদীপক্ষ ন্যায়বিচার পাবেন কিনা, তা নিয়ে সন্দিহান। তাই নতুন করে আসামিদের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়েছে। এ সময় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কোনোভাবে দায় এড়াতে পারে না বলেও উল্লেখ করেন আইনজীবী।

নিহত তোফাজ্জলের বোন জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি জায়গায় একজন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে পিটিয়ে মেরে ফেলা মানা যায় না। সেই সঙ্গে ঘটনায় দায়ীদের কঠিন সাজা নিশ্চিতের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, এমন সাজা নিশ্চিত করতে হবে যাতে আর কেউ এভাবে মানুষকে পিটিয়ে হত্যা করতে না পারে।

আরও পড়ুন…বাংলাদেশ পুনর্গঠনে পাশে থাকার আশ্বাস জো বাইডেনের

গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে ৮টার দিকে এক যুবককে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের গেটে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। ওই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র তাকে আটক করে প্রথমে ফজলুল হক মুসলিম হলের মূল ভবনের গেস্ট রুমে নিয়ে যায়। এরপর মোবাইল চুরির অভিযোগ এনে তারা ওই যুবককে এলোপাতাড়ি চর-থাপ্পড় ও কিল-ঘুষি মারেন।

পরবর্তীতে জিজ্ঞাসাবাদে ওই যুবক তার নাম তোফাজ্জল বলে জানায়। পরে তোফাজ্জল মানসিক রোগী বুঝতে পেরে তাকে হলের ক্যান্টিনে নিয়ে খাবারও খাওয়ানো হয়। পরবর্তীতে তাকে হলের দক্ষিণ ভবনের গেস্ট রুমে নিয়ে জানালার সঙ্গে হাত বেঁধে স্ট্যাম্প, হকিস্টিক ও লাঠি দিয়ে কিছু ছাত্র বেধড়ক মারধর করলে তোফাজ্জল অচেতন হয়ে পড়ে। এরপর কয়েকজন শিক্ষার্থী তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তোফাজ্জলকে মৃত ঘোষণা করেন।

আরও পড়ুন…বাংলাদেশ পুনর্গঠনে পাশে থাকার আশ্বাস জো বাইডেনের

তোফাজ্জলের বাড়ি বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠালতলী ইউনিয়নে। ঘটনার পরদিন দুপুরে শাহবাগ থানায় মামলা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসের সুপারভাইজার মোহাম্মদ আমানুল্লাহ। ওই মামলার পর ৬ শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন এবং বর্তমানে কারাগারে আছেন। ওই ৬ শিক্ষার্থী হলেন- জালাল মিয়া, সুমন মিয়া, মো. মোত্তাকিন সাকিন, আল হোসেন সাজ্জাদ, আহসান উল্লাহ ও ওয়াজিবুল আলম।

ইবাংলা/রাজিব

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.

Contact Us