১০ বছর আগে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে জামায়াতের ৪ নেতাকর্মিকে হত্যার ঘটনায় বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র আব্দুল কাদের মির্জা ও সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.নুরুজ্জামান সহ ১১২ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হয়েছে আদালতে।
আরো পড়ুন …ডিসির গাড়ির সঙ্গে বাইকের সংঘর্ষ, প্রাণ গেল পথচারী শিশুর
এছাড়া মামলার আবেদনে কোম্পানীগঞ্জ থানার সাবেক পরিদর্শক (তদন্ত) মো.শফিকুল ইসলাম, সাবেক উপপরিদর্শক (এসআই) সুধীর রঞ্জন বড়ুয়া, (এসআই) আবুল কালাম আজাদ, শিশির কুমার বিশ্বাস,উক্যসিং মারমার নামও উল্লেখ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) জামায়াত কর্মি ও নিহত সাইফুল ইসলামের বড় ভাই মোহাম্মদ আমিরুল ইসলাম বাদী হয়ে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো.ইকবাল হোসেনর আদালতে এই মামলার আবেদন করেন। মামলার আবেদনে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ১০০-১৫০জনকে।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেন কোর্ট ইন্সপেক্টর শাহ আলম। তিনি বলেন, নোয়াখালীর ২নং আমলি আদালতের বিচারক অভিযোগটি আমলে নিয়ে এ ঘটনায় পূর্বের কোনো মামলা আছে কিনা তা আদালতকে অবহিত করতে বলেছেন কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি)। একই সাথে মামলা না হয়ে থাকলে নিয়মিত মামলা হিসেবে (এফআইআর) রেকর্ড করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
আরো পড়ুন …ক্রিকেটে সাকিবের অবসরের ঘোষণা
মামলার আবেদনের বিবরণে জানা যায়, মামলার বাদী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার জামায়াত ইসলামীর একজন কর্মি। ২০১৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর শনিবার জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা কাদের মোল্লার অবৈধ ফাঁসি কার্যকর করার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বসুরহাট বাজারে বিক্ষোভ মিছিল ঘোষণা করে। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কোম্পানীগঞ্জ জামায়ত ইসলাম এক শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল আয়োজন করে। কর্মসূচিতে অংশ গ্রহণ করার জন্য ২৫০০-৩০০০ হাজার লোক কেজি স্কুলে সমবেত হয়। ওই সময় মামলার বাদী ও তার ভাই সাইফুল ইসলাম মিছিলে অংশ গ্রহণ করার জন্য কেজি স্কুলে যান। তখন উপজেলা জামায়াত নেতাদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিলটি কেজি স্কুলের পূর্ব দিকে অগ্রসর হলে অভিযোগে বর্ণিত আসামি ও অজ্ঞাত ১০০-১৫০জন মিছিলে অতক্রিত ভাবে আগ্নেয়াস্ত্র, দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। হামলাকারীদের মধ্যে স্থানীয়,যুবলীগ,ছাত্রলীগ কর্মিরা ছিল।
হামলাকারীদের মধ্যে অনেকে হেলমেট পরে অস্ত্রেসস্ত্রে সজ্জিত ছিল। কাদের মির্জা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজনুর রহমান বাদল ও সিরাজপুর ইউনিয়ন পরিষ চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন মিকন নিজে এবং তাদের নির্দেশে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আজম পাশা চৌধুরী রুমেল ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নিজাম উদ্দিন মুন্নাসহ ৫০জন আসামি মিছিলে এলোপাতাড়ি গুলি করতে থাকে। এরপর লাঠি সোঠা দিয়ে মিছিলের লোকজনের ওপর আঘাত করতে থাকে। কাদের মির্জার গুলিতে মামলার বাদীর ভাই সাইফুল ইসলামের বুকের বাম পাশে গুলিবিদ্ধ হয় এবং মিকনের ছোঁড়া গুলি পেট ছিদ্র হয়ে বের হয়ে যায়।
মামলায় আরও বলা হয়েছে, তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.নুরুজ্জামানের নির্দেশে পরিদর্শ (তদন্ত) সাইফুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে এসআই শিশির কুমার বিশ্বাস জামায়াত কর্মি মশিউর রহমান সজিবের উপর গুলি করে। এসআই ঊক্যসিং মারমা সজিবের বুকের নিচে গুলি করে।
নোয়াখালী জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা ইসহাক খন্দকার বলেন, ২০১৩ সালে কোম্পানীগঞ্জে জামায়াতের মোট ৭জন নেতাকর্মি মারা যায়। ওই সময় ৩জনের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। ওই ঘটনায় উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। ৪জনের মরদেহ ময়না তদন্ত হয়নি এবং মামলা হয়নি। বর্তমানে স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই নিহতের স্বজনেরা।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.