গোপন কক্ষে সিল মারছেন এজেন্টরা

বগুড়ায় সকাল থেকে শুরু হয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। নির্বাচনে বিভিন্ন কেন্দ্রে নৌকা প্রার্থীর এজেন্টরা ভোটারদের সঙ্গে বুথে প্রবেশ করে নৌকা মার্কায় সিল নিশ্চিত করছেন। এমন অভিযোগ করছেন অন্যান্য প্রার্থীরা।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বগুড়ার শেরপুর ধড় মোকাম উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের পরিস্থিতি নিয়ে এমন কথা বলেন চেয়ারম্যান প্রার্থী সিদ্দিক ভূঁইয়া।

তিনি বলেন, ওই কেন্দ্রে নৌকা মার্কার লোকজন বুথে প্রবেশ করে প্রকাশ্যে সিল মারছে। প্রতিবাদ করলে পুলিশ তাকে ধাক্কা দিয়ে কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়েছে।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, ওই কেন্দ্রের পাশেই আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবু তালেব আকন্দের বাড়ি। ফলে নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রকাশ্যে কেন্দ্রের মাঠে মহড়া দিচ্ছেন তিনি। নৌকার এজেন্টরা ভোটারদের সঙ্গে গোপন কক্ষে প্রবেশ করে সিল মেরে দিচ্ছেন।

এছাড়াও অনেক বুথে নৌকা প্রার্থীর একাধিক এজেন্টকে বসে থাকতে দেখা গেছে। তাদের গলায় নৌকার কার্ড থাকলেও বেশির ভাগের গলায় এজেন্টের কার্ড দেখা যায়নি।

এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে শেরপুর ধড় মোকাম উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার সালেহ আল রেজা বলেন, এমন কোনো ঘটনা এখানে ঘটেনি। ভোটাররা সুষ্ঠুভাবে ভোট দিচ্ছেন।

তবে ওই কেন্দ্রের বিভিন্ন বুথ ঘুরে বিশৃঙ্খলা লক্ষ্য করা গেছে। ৩ নম্বর বুথে গিয়ে দেখা যায়, নৌকার এজেন্ট ফজিলা বেগম প্রকাশ্যে নৌকায় সিল দেয়ার জন্য ভোটারদের সঙ্গে গোপন কক্ষে প্রবেশ করছেন। ওই কেন্দ্রের ৫নং বুথে স্বতন্ত্রপ্রার্থী আবুল কালাম আজাদের আনারস প্রতীকের এজেন্টকে সকালেই কক্ষ থেকে বের করে দিয়েছে।

এছাড়াও শিক্ষাপল্লী আদর্শ কেজী স্কুল, দুবলাগাড়ী হাফেজিয়া মাদরাসাসহ বিভিন্ন কেন্দ্রে নৌকা মার্কার নেতাকর্মীরা বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করছেন।

এদিকে দুপুর ১২টার দিকে বগুড়া শেরপুরের খানপুর ইউনিয়নের খাকা দোলন এসি দাখিল মাদরাসায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির কারণে ভোটগ্রহণ স্থগিত রয়েছে। নৌকার প্রার্থী পরিমল দত্তের কিছু কর্মী-সর্মথকরা স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম রানজু (আনারস প্রতীক) ও অপর এক স্বতন্ত্র প্রার্থী পিয়ার উদ্দিনের (ঘোড়া প্রতীক) এজেন্টদের ভোটকেন্দ্র থেকে জোরপূর্বক বের করে দেন। তখন উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর দুজন কর্মী আহত হন।

শেরপুরের নির্বাচন কর্মকর্তা আছিয়া খাতুন জানান, বিশৃঙ্খলার কারণে আপাতত ভোটগ্রহণ বন্ধ রয়েছে। সবকিছু স্বাভাবিক হলে আবার ভোটগ্রহণ শুরু করা হবে।

অপরদিকে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলাতেও সকাল থেকে ভোটগ্রহণ চলছে। সেখানেও কয়েকটি কেন্দ্রে নৌকায় সিল মেরে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। দেউলী ইউপির লক্ষিকোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নৌকার এজেন্টরা ভোটারদের নৌকায় ভোট দিতে বাধ্য করছে বলে জানিয়েছেন মাহবুবুর রহমান নামের এক ভোটার।

ইবাংলা/টিআর/ ১১ নভেম্বর ২০২১