কেরাণীগঞ্জের শাক্তা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার হানিফ মিয়ার বিরুদ্ধে অপহরণ, বিচারের নামে নির্যাতন ও জমি দখলের অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। গত ২১ আগস্ট র্যাব পরিচয়ে অপহরণের ফাঁদে ফেলে অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগে ইউপি মেম্বার হানিফসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করে তেজগাঁও থানা পুলিশ।
এ ঘটনায় হানিফ জেল খেটে আবারও আসছে ২৮ নভেম্বর কেরাণীগঞ্জের শাক্তা ইউপি নির্বাচনে ১নং ওয়ার্ডে মেম্বার প্রার্থী হিসাবে অংশ নিয়েছে। সাধারণ ভোটারদেরে মধ্যে একাধিক ভোটার এ প্রতিবেদককে জানান, তারা আশঙ্কা করছেন যে- হানিফ মেম্বার জনপ্রিয়তায় শূণ্য হলেও জোর করে তার কথিত বাহিনী দিয়ে কেন্দ্র দখল করে মেম্বর নির্বাচিত হবেন। আবার সক্রিয় হবে তার ভূমিদস্যুতা আর মাদক ব্যবসা।
স্থানীয়দের মধ্যে অনেকে জানান, কেরাণীগঞ্জের মধ্যর চর, হিন্দুপাড়া, উত্তর বালুরচরে তার রয়েছে মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী বাহিনী। এ এলাকার সাধারণ ভোটার ও অন্যতম প্রতিদ্বন্দী হারুন অর রশিদ ও রতনের সমর্থকরা এ বাহিনীর ভয়ে আতঙ্কে রয়েছে। তারা জানান, হানিফ বাহিনী জোড় করে ভোট ছিনতাই বা সিল মেরে নিতে পারে ।
জানা যায়, এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে মেরে ফেলতে কথিত র্যাব পরিচয় দেয়া এমন একটি চক্রের সঙ্গে ১০ লাখ টাকার চুক্তি করেছিলেন এই হানিফ মেম্বার। কিন্তু উপস্থিত জনতার তৎপরতায় হাতেনাতে ওই ইউপি সদস্যসহ তার ৫ সহযোগীকে ধরে ফেলে রাজধানীর তেজগাঁও থানা পুলিশ।
কেরাণীগঞ্জের শাক্তা ইউনিয়নের উত্তর বালুরচরের বাসিন্দা ব্যবসায়ী সজিব বেপারীর সঙ্গে একই এলাকার মেম্বার হানিফ মিয়ার আগে থেকেই জমিজমা নিয়ে বিরোধ ছিল। সেই সূত্র ধরে হানিফ মেম্বার একটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয় দেয়া চক্রের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে সজিব বেপারীকে অপহরণ এবং মুক্তিপণ আদায় করে। সে সময় পুলিশ মুক্তিপণের ওই টাকাও উদ্ধার করেছিল।
খোজ নিয়ে জানা গেছে,বিগত ২৮ অক্টোবর ২০২০ তারিখ সকলের হাতে রামদা, ছুরি, হ্যামার ও বিভিন্ন দেশীয় অবৈধ অস্ত্র নিয়ে হানিফ মেম্বার নিজে ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে ক্যামেরা ঢাকার এবং সকলকে অন্যদিকে যাওয়ার নির্দেশ দিচ্ছে। অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মোঃ ইব্রাহীম বেপারীর ছেলে আলি হোসেন সজীব ও তার পরিবারকে আক্রমণ করতে গিয়ে তাদের না পেয়ে, বাড়ি-ঘর ভাংচুর করে এবং ঐ জমি দখলের চেষ্টা করে। এর ৩/৪ দিন পর জামিন নিয়ে ফের এলাকায় প্রবেশ করে সরব হয় হানিফ মিয়া। বর্তমানে এলাকাবাসী আতঙ্কে আছে।
হানিফ মেম্বার ২০১৬ সালে নিজ এলাকার কয়েক কিলোমিটার অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিয়ে গ্রামের সহজ সরল প্রায় ৭০০ পরিবারের ৭ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছিলেন। সরকারি গ্যাস চুরির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলেও কর্তৃপক্ষের কোন তৎপরতা চোখে পড়েনি। সাধারন মানুষের টাকা উদ্ধার ও দুর্ধর্ষ হানিফ মেম্বারের দখলবাজী ঠেকানো আজও সম্ভব হয়নি।
ইবাংলা / আমিন/ টিপি /২৩ নভেম্বর ২০২১