আর্জেন্টাইন এই সাবেক কিংবদন্তির বিপক্ষে এর আগেও ধর্ষণ নিয়ে কম অভিযোগ আসেনি। নানারকম অপরাধে জড়িত থাকা ম্যারাডোনা বহুবার সমালোচনায় এসেছেন। কিন্তু এবারের সমালোচনা যেন ভিন্ন। মারা যাওয়ার পরেও তার বিরুদ্ধে এমন গুরুতর অভিযোগ এনেছেন তারই একসময়কার বান্ধবী।
আর দুই দিন পর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী ডিয়েগো ম্যারাডোনার। গত বছরের ২৫ নভেম্বর ফুটবল বিশ্বকে কাঁদিয়ে ৬০ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান ছিয়াশির মহানায়ক।
তবে প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীর আগে আগেই ম্যারাডোনার বিরুদ্ধে ঘোরতর অভিযোগ আনলেন মাভিস আলভারেস নামের এক কিউবান নারী। দুই দশক আগে প্রয়াত আর্জেন্টাইন ফুটবল কিংবদন্তির সঙ্গে সম্পর্ক ছিল তার।
এবার মাভিস তার ‘শৈশব চুরির অভিযোগ’ আনলেন ম্যারাডোনার বিরুদ্ধে। জানালেন, কিশোরী থাকাকালীন তাকে ধর্ষণ করেছিলেন ছিয়াশির মহানায়ক।
বর্তমানে মাভিসের বয়স ৩৭। গত সপ্তাহে আর্জেন্টিনার বিচার মন্ত্রণালয় আদালতে স্বাক্ষ্য দিয়েছেন তিনি। যেখানে ওই কিউবান নারী জানান, তার বয়স যখন ১৬ তখন তাকে ধর্ষণ করেছিলেন ম্যারাডোনা। এমনকি নাপোলি কিংবদন্তি তাকে বাক্সে ভরে পাচার করতে চেয়েছিলেন বলেও অভিযোগ করেন।
মাঠে ও মাঠের বাইরে উদ্যম জীবন কাটিয়েছেন ম্যারাডোনা। ২০০১ সালে ম্যারাডোনার বয়স যখন ৪০ আর মাভিসের বয়স ছিল ১৬, ওই সময় সম্পর্কে জড়ান দুজনে। তাদের এই সম্পর্ক টিকে ছিল চার বছর।
মাভিস অভিযোগে জানান, ম্যারাডোনা তার থেকে সন্তান চেয়েছিলেন। যদিও তারা কখনো পারিবারিক জীবন কাটাননি।
গত অক্টোবরের শুরুতে আমেরিকা তেভে নামের এক টেলিভিশন চ্যানেলকে মাভিস জানিয়েছিলেন, ‘আমার চোখে, আমি ডিয়েগোর সন্তান নেওয়ার কথা ভাবছিলাম। যখন আমার মাসিক বন্ধ হয়ে গেল, আমি প্রেগনেন্সি পরীক্ষা করালাম। আমি সুস্থ ছিলাম না। সে সন্তান চেয়েছিল। তবে আমার সন্তানেরা ম্যারাডোনার নয়।’
আলভারেস আরও জানান, ম্যারাডোনার চাওয়ায় তিনি স্তন পরিবর্ধনের জন্য অস্ত্রোপচার করান। আর এর ফলে তার পড়ালেখাও বন্ধ করতে হয়।
তিনি বলেন, ‘ম্যারাডোনা আমাকে স্তনের অপারেশন করতে বলে। সে আমার মধ্যে পরিবর্তন চেয়েছিল। এটা সত্য যে, আমি পড়ালেখা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। কারণ ম্যারাডোনা কলেজ পড়ুয়া গার্লফ্রেন্ড চায়নি। সকালবেলা ওঠে আমার স্কুলে যাওয়ার বিষয়টি সম্ভবত সে পছন্দ করত না। আমি ১৬ বছরের বালিকা ছিলাম। আমি তখন দশম গ্রেডে পড়তাম।’
মাভিস আরও জানান, এমনকি ম্যারাডোনা তাকে তার মায়ের সঙ্গে দেখা করতে দিত না। আমার মা আমাকে দেখার জন্য দরজায় দাঁড়িয়ে কাঁদত। কিন্তু সে (ম্যারাডোনা) আমার মুখ চেপে ধরতো এবং দরজা খুলত না।
আলভারেস এরপরের বর্ণনা দেন, কীভাবে তিনি ম্যারাডোনার হাতে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন তা। তিনি বলেন, ‘এটা সত্য যে, সে আমাকে মারতো এবং তা অনেকবার তা ঘটেছে। একবার সে আমাকে ডাইনিং রুম থেকে বের করে দিয়েছিল। আরেকবার গাড়িতে করে বাড়ি ফেরার পথে চুল টেনে ধরেছিল।’
ইবাংলা / এইচ /২৩ নভেম্বর, ২০২১