ঘূর্ণিঝড় থেকে নিম্নচাপে রুপ নেওয়া জাওয়াদ সোমবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে ভারতের উড়িষ্যায় গেলেও এর কিছুটা প্রভাব পড়েছে মোংলা ও সুন্দরবন উপকূল অঞ্চলে। জাওয়াদের কারণে মোংলা সমুদ্র বন্দরে তিন নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এ অবস্থায় গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরা নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। এর প্রভাবে রাতভর একটানা ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে এখানে। সোমবার (৬ ডিসেম্বর) সকালেও সেটি অব্যাহত আছে। এতে দূর্ভোগে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ।
এদিকে মোংলা বন্দরে অবস্থানরত চাল, গম ও সারসহ ১২ টি বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজের পণ্য খালাস সাময়িক বন্ধ করেছে কর্তৃপক্ষ। বন্দর কর্তৃপক্ষের মাষ্টার কমান্ডার শেখ ফখর উদ্দিন বলেন, রাতভর টানা বৃষ্টিতে পণ্যবাহী জাহাজে কাজ বন্ধ রয়েছে। আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে আবার কাজ শুরু হবে।
ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ এর প্রভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে পশুর ও মোংলা নদীর পানি কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই অবস্থায় উত্তাল সাগেরে টিকতে না পেরে সকাল থেকে নিরাপদ মাছধরা ট্রলার গুলো সুন্দরবনের ছোট ছোট খালসহ জেলার শারণখোলা, মোংলা ও বাগেরহাটের প্রধান মৎস্য অবতরন কেন্দ্র কেবি ফিশারী ঘাটে অবস্থান নিয়েছে। এমন অবস্থায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসন।
তবে শীত ও বৃষ্টিতে ভোগান্তিতে পড়েছেন এখানকার নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষেরা। পৌর শহরের
শিকারীরর মোড়ের ভ্যান চালক মোঃ নুরুজ্জামান ও মোস্তফা শেখ বলেন, “গত দুইদিন ধরে বৃষ্টি পড়ছে। আজকে মনে করলাম বৃষ্টি থামবে। কিন্তু না, বৃষ্টি থামার কোন লক্ষন দেখিনা। আমরা গরিব মানুষ ভাই, বৃষ্টি ও এই ঠান্ডা মাথায় নিয়ে ভ্যান নিয়ে বের হয়েছি। আমাদের তো ছেলে-মেয়ে আছে ভাই, তাই কষ্ট হলেও উপায় নেই।
পৌরসভার ১ নং জেটির চা দোকানী এনায়েত হাওলাদার বলেন, “বৃষ্টি থামার তো কোন লক্ষন নেই, উল্টে আরও বেড়েছে। সাথে যে কি ঠান্ডা পড়ছে, তা আর কি বলবো। বৃষ্টিতে তো মানুষ-জন ঘর থেকেই বের হচ্ছে না। তাই বেচা-কেনা ভালো হচ্ছে না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কমলেশ মজুমদার বলেন, ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ এর প্রভাবে রাত খেকে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। যা এখনও অব্যাহত আছে। এমন অবস্থায় আবহাওয়া পরিস্থিতির ওপর আমরা সতর্ক দৃষ্টি রাখছি।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্রের আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ এখন গভীর নিম্নচাপে পরিনত হয়েছে। এটি আরও উত্তর-উত্তর পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমন্বয়ে দূর্বল হয়ে পরছে। মোংলা সমুদ্র বন্দরসহ দেশের সব সমুদ্র বন্দর গুলোকে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেষ না দেওয়া পর্যন্ত বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার ট্রলার ও জেলেদের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
ইবাংলা /টিআর/ ৬ ডিসেম্বর ২০২১