একদিকে ভাসমান টার্মিনাল সংকট, অন্যদিকে এলএনজির দামও উর্দ্ধমুখী। সংকটে পড়ে তাই গ্যাসভিত্তিক ২০টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে গ্যাস আমদানি বাড়াতে পারছেনা সরকার।
মজুদ ফুরিয়ে আসতে থাকায় অভ্যন্তরীন উৎপাদনও কমছে ক্রমাগত। বিশেষজ্ঞরা জলে স্থলে গ্যাসের অনুসন্ধান বাড়ানোর পরামর্শ দিলেও সরকার নির্ভর করছে আমদানির ওপরই।
সাশ্রয়ী দাম আর পরিবেশ সুরক্ষা-দুই দিক থেকেই এই মুহুর্তে সবচেয়ে উপযোগী জ্বালানি প্রাকৃতিক গ্যাস। কিন্তু অভ্যন্তরীণ উৎপাদন কমতে থাকায় সরবরাহ কমছেই।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘এখন গ্যাস আল্টিমেটাম দিয়ে তুলতে হচ্ছে। শেষ হবে হবে এরকম একটা অবস্থা। কিন্তু অন্যদিকে আমাদের গার্মেন্টস বা টেক্সটাইলের ডেভেলপমেন্টটা বেশি হয়ে যাচ্ছে। এসকল জায়গাতে গ্যাস লাগছে।’
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ আরও বলেন, ‘অনুসন্ধান যে হচ্ছেনা তা নয়। প্রচুর পরিমানে অনুসন্ধান হচ্ছে। গভীর সমূদ্রের বিষয়টি অনেক সময়ের ব্যাপার। ১০ থেকে ১৫ বছর লাগে সেখান থেকে গ্যাস উৎপাদন করতে। এটা অনেক বড় একটা ব্যাপার, এটাতে অনেক রিস্ক থাকে।’
বৈশ্বিক বাজারে জ্বালানি তেলের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে এলএনজির দামও। দুই মাসের ব্যবধানে জুনে দ্বিগুণ দামে খোলাবাজার থেকে ৪৪৮ কোটি ১৬ লাখ ৮২ হাজার টাকায় ৩২লাখ ৭৮ হাজার এমএমসিএফডি সমপরিমান আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
আবার কেবল দুটি ভাসমান টার্মিনাল থেকে গড়ে ৮৫০ এমএমসিএফডির বেশি এলএনজি জাতীয় গ্রিডে দেয়া সম্ভব হয়না। জ্বালানি বিশেষজ্ঞ খন্দকার সালেক সুফি বলেন, ‘এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের জন্য একটা গভীর সংকট সৃষ্টি হবে।
কারণ আমাদের এলএনজি আমদানি করার জন্য মাতারবাড়িতে যে টার্মিনালটা হওয়ার কথা সেখানে কেবল মাত্র কনসালটেন্ট এখন কাজ করছে।’ জ্বালানির সংকটের বড় কোন সমাধান এই মুহুর্তে নেই সরকারের হাতে। তবে, গ্যাসের অনুসন্ধান নিয়ে আছে দুরকম মত।
সালেক সুফি আরও বলেন, ‘আগামী দুই তিন বছরের মধ্যে চট্টগ্রাম অঞ্চলে যেগুলো আমাদের নন-প্রোস্পেক্ট আছে সেখানে যদি এক টিসিএফ গ্যাসও উৎপাদন করা যায় তাহলে সেখান থেকে আমরা জাতীয় উৎপাদনে ১০০ থেকে ২০০ মিলিয়ন গ্যাস যোগ করতে পারব।’
বেসরকারি পর্যায়ে কুতুবদিয়া ও পায়রায় দুটি ভাসমান টার্মিনাল বসানোর প্রস্তাব বিবেচনাধীন আছে। তবে এর বাস্তবায়ন সময় সাপেক্ষ। আর সীমান্ত সঞ্চালন লাইন দিয়ে দীর্ঘমেয়াদে‘রিগ্যাসিফায়েড এলএনজি’ আমদানির জন্য ভারতে কোম্পানির সাথে সমঝোতা স্মারকে সই করেছে পেট্রোবাংলা।
ইই/ গ্যাস/ ১ জুলাই, ২০২১