প্রেমে পড়ে মনের মানুষের সঙ্গে নতুন জীবন শুরু করা এক অপূর্ব অনুভূতি। ভালোবাসার জন পাশে থাকলে মানসিক শক্তি বেড়ে যায় অনেক গুণ। কিন্তু প্রেমকে দীর্ঘজীবী করতে চাইলে, অনেকদিন পর্যন্ত প্রেমের আকর্ষণ বজায় রাখতে হলে, প্রয়োজন দূরত্ব। শুনতে আশ্চর্য লাগলেও প্রেমে কাছাকাছি আসতে প্রয়োজন দূরত্ব।
এই দূরত্ব অবশ্য মানসিক দূরত্ব নয়। বরং এ হলো পোশাকি ভাষায় যাকে বলে ‘স্পেস’। যেকোনো সম্পর্কে, প্রেম হোক দাম্পত্য, এই স্পেসটুকু প্রয়োজন। তবে কোনো কিছুই অতিরিক্ত কাম্য নয়। দু’জনের মধ্যে বন্ধনের রাশ খসে পড়ে যাওয়া যেমন ভালো নয়। আবার একে অন্যের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেললেও দমবন্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়। তাই প্রয়োজন উপযুক্ত ভারসাম্য।
যখন আমরা কোনো সম্পর্কের সীমারেখা নিয়ে কথা বলি, আমরা স্পেসের প্রসঙ্গ তুলি। এই স্পেস হলো সেই পরিসর যা আমাদের স্বকীয়তা ফুটিয়ে তোলে। আমাদের মনে রাখতে হবে, সম্পর্কে থাকলেও এক জনের উপস্থিতি যে তার সঙ্গীর ব্যক্তিগত বিকাশের পথে বাধা না হয়ে দাঁড়ায়। ভালো ও সুস্থ সম্পর্ক হলো সেটাই, যেখানে দুই সঙ্গীই সম্পর্কে থেকে নিজস্ব পরিসর উপভোগ করেন নিজস্বতার মানসিক বৃদ্ধির পথে। এর ফলে দুই সঙ্গীর একে অন্যের প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা কমে না, বরং বাড়ে। অন্যদিকে, পরিপুষ্ট হয় তাদের সম্পর্কও।
নিজস্ব পরিসরটুকু সঙ্গীর কাছে চেয়ে নিতে প্রয়োজন মানসিক শক্তি। সঙ্গীর মনে হতেই পারে তার প্রতি আকর্ষণ হারাচ্ছেন হয়তো আর একজন। মনের কোণে উঁকি দেয় প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা, এমনকি সন্দেহও। সেক্ষেত্রে তাকে বোঝাতে হবে সম্পর্কে কিছু সীমারেখা পালিত হওয়া উচিত শ্রদ্ধা বজায় রেখেই। একজন সঙ্গীর আবেগের বহিঃপ্রকাশ সহমর্মিতার সঙ্গে সামলাতে হবে অন্য সঙ্গীকেই।
কোনো সম্পর্কে ভুল বোঝাবুঝি থাকলে সেই সম্পর্ক কোনোদিন দীর্ঘস্থায়ী হবে না। সঙ্গী স্পেস বা নিজস্ব পরিসর চাইলে অন্যজনের উচিত ধৈর্য ধরে তার বক্তব্য শোনা। যুক্তি দিয়ে বিচার করা। এই ভাবে দুই সঙ্গীর একে অন্যে পরষ্পরকে বুঝতে পারবেন। যা যেকোনো সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার অন্যতম শর্ত।
ইবাংলা / নাঈম/ ১৬ জানুয়ারি, ২০২২