আবারও ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছে উত্তর কোরিয়া। রোববার জাপান সাগরে মধ্য পাল্লার এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালায় দেশটি। ২০১৭ সালের পর এটিই উত্তর কোরিয়ার সবচেয়ে বড় মধ্যপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা। রোববার (৩০ জানুয়ারি) এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা নিয়ে উত্তর কোরিয়া চলতি মাসে মোট সপ্তম বারের মতো ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাল, যা দেশটির সাম্প্রতিক ইতিহাসে একমাসে সর্বোচ্চ।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক, সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের তথ্য বলছে, পিয়ংইয়ং কয়েক দশক ধরে এক মাসে কখনো এতসংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়েনি।
দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলের জয়েন্ট চিফ অব স্টাফের এক বিবৃতিতে বলা হয়, আমাদের সামরিক বাহিনী ধারণা করছে যে স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ৫২ মিনিটে সমুদ্রের পূর্ব উপকূলের জাগাং প্রদেশ থেকে উত্তর কোরিয়া একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। জাপান সরকারও বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
জাপানি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দক্ষিণ কোরিয়ার ছোঁড়া এই ক্ষেপণাস্ত্রটি ৮০০ কিলোমিটার (৪৯৭ মাইল) দূরত্ব পাড়ি দিতে সক্ষম হয়েছে এবং ভূমি থেকে ২,০০০ কিলোমিটার (১,২৪৩ মাইল) উচ্চতায় পৌঁছেছে।
এর আগে বৃহস্পতিবারও দেশটি দুটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালায়। দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রকে চাপে ফেলা এই মিসাইল নিক্ষেপের আংশিক লক্ষ্য বলে মনে হচ্ছে। এই দুটি দেশ উত্তর কোরিয়াকে পারমাণবিক অস্ত্র সংক্রান্ত আলোচনায় ফেরত আসতে আহবান জানিয়েছে।
জাপান এবং কোরিয়া সংক্রান্ত যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অফ স্টেট মার্ক ল্যামবার্ট জানান, উত্তর কোরিয়ার সাথে ‘যেকোনো জায়গায়’ এবং ‘যেকোনো বিষয়ে’ কথা বলতে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত। তবে উত্তর কোরিয়া এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বলে, আগে সামরিক ও অর্থনৈতিক বিষয়ে ছাড় দিতে হবে।
দেশের ভেতর কিম জং উনের পক্ষে রাজনৈতিক সমর্থন বাড়ানো, নতুন অস্ত্রের কার্যক্ষমতা নিশ্চিত ও প্রতিরোধ প্রদর্শন করাসহ মিসাইল পরীক্ষার কিছু সম্ভাব্য কারণ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর ঐ উৎক্ষেপণের নিন্দা করে বলেছে যে উত্তর কোরিয়া জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের একাধিক প্রস্তাব লঙ্ঘন করেছে এবং তারা প্রতিবেশী দেশ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য হুমকিস্বরূপ।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা এই পরীক্ষাকে ‘খুবই দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছেন। দক্ষিণ কোরিয়ার ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলও অত্যন্ত দুঃখ প্রকাশ করে বলেছে, এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য উৎক্ষেপণগুলো হুমকিস্বরূপ। কিছুদিন আগেও উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচিতে সহায়তার অভিযোগে সে দেশের পাঁচ ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। সূত্র: সিএনএন
ইবাংলা /নাঈম/ ৩০ জানুয়ারি, ২০২২