পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে রোয়াংছড়ি-রুমা ২০ কিলো সড়ক নির্মাণ কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ হচ্ছে না। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই অজুহাত দেখিয়ে মেয়াদ বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। এদিকে ৪৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন ওই সড়কটির একটি অংশের ঠিকাদাররা দীর্ঘদিন কাজ না করেই উধাও হয়ে যায়। ফলে নির্ধারিত সময়ে সড়কটির নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় সরকারের কাঙ্খিত লক্ষ্য মাত্রা যেমন ব্যহত হচ্ছে, তেমনি এলাকার মানুষের দুর্ভোগও লাঘব হচ্ছে না।
প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে আসলেও এখনও অনেক কাজ বাকি রয়েছে। তবে প্রকল্প কর্মকর্তা দাবি করেন, ইতি মধ্যে কাজের ৭৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ শেষ করতে সময় বেশি লাগায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর চেষ্টা চলছে বলে জানা গেছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের বান্দরবান ইউনিটের প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে বান্দরবানের রোয়াংছড়ি-রুমাসংযোগ (লিঙ্ক) সড়কটি নির্মাণ কাজ শুরু হয়। প্রায় ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ রোয়াংছড়ি-রুমা সড়ক নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৪৮ কোটি টাকা। ওই সময় এ রাস্তার নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন করেনপার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয় মন্ত্রী বীরবাহাদুর উশৈসিং এমপি।
উক্ত প্রকল্পের দায়িত্বে রয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের বান্দরবান ইউনিটের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) আবদুল আজিজ। উক্ত সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে মাটি কেটে রাস্তা নির্মাণ, নালা (ড্রেন) ও কালভার্ট নির্মাণ এবং রাস্তা কার্পেটিং করা। এদিকে উক্ত রাস্তার নির্মাণ কাজের মেয়াদ আগামী বছরের জুন মাসে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ঠিকাদার নুরুর আবছারের কাজ বন্ধ থাকায় উক্ত সড়কটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ হচ্ছে না।
অভিযোগ রয়েছে, নির্মাণ সামগ্রীর দাম বাড়ার অজুহাত দেখিয়ে কাজ বিলম্ব করা হ”েছ। এছাড়া প্রকল্পের কাজ শেষ করার মেয়াদ বাড়িয়ে প্রকল্প ব্যয়ও বাড়ানোর পাঁয়তারা করা হচ্ছে । ঠিকাদার আবছার কাজ শুরু না করেন না অজুহাত দেখায়। উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে রোয়াংছড়ি-রুমা সড়কটির নির্মাণ কাজও নানা অজুহাত দেখিয়ে বিলম্ব করেন।
এ ব্যাপারে এলাকার ৩৪১নং পাইক্ষ্যং মৌজার কারবারী মানিক খেয়াং বলেন, রোয়াংছড়ি-রুমাসড়কটি নির্মাণ হলে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগে অনেক সুবিধা হবে। বর্তমানে রোয়াংছড়ি ও রুমার মানুষ বান্দরবান সদর হয়ে যাতায়াত করেন। এ সড়কটি নির্মাণ হলে দুই উপজেলার মানুষ সরাসরি যাতায়াত করার সুবিধা পাবে। সড়কটি নির্মাণ হলে প্রায় ২০ কিলোমিটার পথ কমে যাবে। এতে করে লোক জনের সময়, পরিশ্রম ও অর্থেও সাশ্রয় হবে। পাড়াকারবারী মানিক খেয়াং বলেন, এখন শোনা যা”েছ উন্নয়ন বোর্ড প্রকল্পের কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ করবে না। প্রকল্পের মেয়াদ আরও বাড়ানো হবে। ফলে এলাকার মানুষের দুর্ভোগ থেকেই যাচ্ছে।
এদিকে পার্বত্য চট্টগ্রামউন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে রোয়াংছড়ি-রুমা সড়কের নির্মাণ কাজের প্রকল্পপরিচালক আবদুল আজিজ বলেন, উক্ত সড়কটি ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রকল্পটি আগামী ২০২৩ সালের জুন মাসে শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু রাস্তার কিছু অংশের ঠিকাদার নুরুল আবছার কাজ যথা সময়ে শুরু করতে পারেনি। ফলে কাজ শেষ হতে কিছুটা বিলম্ব হ”েছ। এবং যে হারে বাজারে রড সিমেন্টের দাম বেড়ে গেছে তাই নিধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে পারছে না ঠিকাদাররা।
প্রকল্প পরিচালক আবদুল আজিজ দাবি করেন, এ পর্যন্ত সড়কের ৭৫ শতাংশ কাজ সম্পন হয়েছে। তবে অবশিষ্ট কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করা সম্ভব হবে না বলে তিনি স্বীকার করেন। তিনি জানান, ইতিমধ্যে প্রকল্পের মেয়াদ আগামী ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানোর জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
ইবাংলা/ নাঈম/ ০৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২