মানুষ সৃষ্টির প্রায় দুই হাজার বছর আগেই জিনরা পৃথিবীতে আসে বলে জানা যায়। জিনদের আদি পিতা সামুম। জিন তৈরি করে আল্লাহ সামুমকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, তুমি আমার কাছে কিছু কামনা করো। সামুম দুটি বিষয় কামনা করেছিলেন। এক. জিন মানুষকে দেখতে পারবে কিন্তু মানুষ জিনকে দেখতে পারবে না। দুই. জিনরা বৃদ্ধ বয়সে যুবক হয়ে মৃত্যুবরণ করবে। আল্লাহপাক সামুমের দুটি চাওয়া পূরণ করেন।
জিনরা গায়েবের খবর ও ভবিষ্যৎ জানে না। কোনোভাবেই মানুষের চেয়ে জিন জাতি শ্রেষ্ঠ নয়। মানুষ আল্লাহর সেরা সৃষ্টি। আশরাফুল মাখলুকাত। মানুষকে আল্লাহ শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন সব জীবের মধ্যে। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আমি আদম সন্তানকে মর্যাদা দান করেছি, আমি তাদের স্থলে ও জলে চলাচলের বাহন দান করেছি; তাদের উত্তম জীবন উপকরণ দিয়েছি এবং তাদের অনেক সৃষ্ট বস্তুর ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি।’ (বনি ইসরাইল, আয়াত : ৭০)
তবু কিছু অপরিণামদর্শী মানুষ জিনদের শরণাপন্ন হয়। তাদের কাছে ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানতে চায়। এটা শুধু একটা ভুল নয়; শিরকের মতো জঘন্য গুনাহ। জিনদের বুদ্ধিমত্তা কতটুকু এবং তারা ভবিষ্যৎ জানে কি-না এর প্রমাণ সুলাইমান (আ.)-এর মৃত্যুর ঘটনায় দেখা যায়।
পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘যখন আমি সুলাইমানের মৃত্যু ঘটালাম, তখন জিনদের তার মৃত্যু-বিষয় জানাল শুধু মাটির পোকা (উইপোকা); যা সুলাইমানের লাঠি খাচ্ছিল। যখন সুলাইমান (আ.) পড়ে গেলেন তখন জিনরা বুঝতে পারল যে, তারা যদি অদৃশ্য বিষয় জানত, তাহলে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তিতে আবদ্ধ থাকত না।’ (সুরা সাবা, আয়াত : ১৪)
রাসুল (সা.) বলেছেন, মানুষের বাড়িঘরে জিনরা থাকে। এদের মধ্যে কাউকে তোমরা যখন দেখবে, তখন তিনবার তাকে বের করে দেবে। এতে যদি সে চলে যায়, তো ঠিক আছে। অন্যথায় তাকে মেরে ফেলবে। কারণ (যে জিন এমন করে) সে কাফির হয়ে থাকে।
আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, মদিনার কিছুসংখ্যক জিন মুসলমান হয়েছে। এদের (প্রাণী হিসেবে) যদি কেউ দেখো, তাহলে তিনবার সাবধান করবে। তারপরও আবার এলে সেই প্রাণীকে হত্যা করবে। (মুসলিম, হাদিস : ২২৩৬)
ইবাংলা/ নাঈম/ ০৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২