চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। তবে আগের দিনের তুলনায় কমেছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন প্রায় ৮ হাজার মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা নেমে এসেছে পৌনে ১৮ লাখের নিচে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে রাশিয়ায়। অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে রাশিয়া, ব্রাজিল, ফ্রান্স, ইতালি, কলম্বিয়া ও তুরস্ক। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৩৯ কোটি ৭৯ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫৭ লাখ ৬৭ হাজার।
মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭ হাজার ৯১৬ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে দেড় হাজারের বেশি। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৫৭ লাখ ৬৭ হাজার ৯৬৬ জনে।
একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১৭ লাখ ৬৬ হাজার ৫১৭ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমেছে প্রায় ৯০ হাজার। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৯ কোটি ৭৯ লাখ ৩ হাজার ৬২৫ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে রাশিয়ায়। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬০৯ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১ লাখ ৭১ হাজার ৯০৫ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ২৯ লাখ ৮২ হাজার ২৩ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৩৬ হাজার ২৩ জনের।
অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৩৫ হাজার ৫৪১ জন এবং মারা গেছেন ১ হাজার ১২৩ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৭ কোটি ৮৩ লাখ ১ হাজার ৩১১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৯ লাখ ২৮ হাজার ৪৫১ জন মারা গেছেন।
ফ্রান্সে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৬ হাজার ১ জন এবং মারা গেছেন ৪১৭ জন। মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ৮ লাখ ৪ হাজার ৩৭২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৩২ হাজার ৯২৩ জন মারা গেছেন। একই সময়ে স্পেনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪০ হাজার ২৭২ জন এবং মারা গেছেন ১১১ জন।
লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪৩১ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৬৮ হাজার ৫৪০ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২ কোটি ৬৬ লাখ ৫ হাজার ১৩৭ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ৩২ হাজার ৭২০ জনের।
গত ২৪ ঘণ্টায় তুরস্কে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৯৬ হাজার ৫১৪ জন এবং মারা গেছেন ২৩৬ জন। একই সময়ে ইতালিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪১ হাজার ২৪৭ জন এবং মারা গেছেন ৩২৬ জন।
এছাড়া গত একদিনে যুক্তরাজ্যে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৭ হাজার ৬২৩ জন এবং মারা গেছেন ৪৫ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৭৮ লাখ ৬৬ হাজার ৬৩২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৫৮ হাজার ৩৬৩ জন মারা গেছেন। গত একদিনে কলম্বিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৯ হাজার ৮০ জন এবং মারা গেছেন ২৩৫ জন।
এছাড়া জার্মানিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৩৮ হাজার ৮৬৭ জন এবং মারা গেছেন ১২৯ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ১১ লাখ ৯৮ হাজার ৭৪০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ১৯ হাজার ৪৯৫ জন মারা গেছেন। একই সময়ের মধ্যে ইউক্রেনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২২ হাজার ৩৭৮ জন এবং মারা গেছেন ১১৫ জন।
এদিকে করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ৪ কোটি ২৩ লাখ ৩৪ হাজার ৫২১ জন এবং মারা গেছেন ৫ লাখ ৪ হাজার ৭৮ জন।
এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দক্ষিণ আফ্রিকায় ১৮৬ জন, কানাডায় ৯৩ জন, আর্জেন্টিনায় ২৫৯ জন, গ্রিসে ১১৬ জন, হাঙ্গেরিতে ২৩৪ জন, ইরানে ১০৪ জন, জাপানে ৬৭ জন এবং ভিয়েতনামে ১০০ জন মারা গেছেন। অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় মেক্সিকোতে মারা গেছেন ১২৯ জন। মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৯ হাজার ৫৪৬ জনের।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০২০ সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।
ইবাংলা/ নাঈম/ ০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২