সবজিতে স্বস্তি নেই, পেঁয়াজের দামে বেড়েছে ঝাঁজ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

কাঁচাবাজারে শীতের সবজি প্রচুর। কিন্তু ক্রেতাদের নেই স্বস্তি। দাম চলে গেছে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। সরকারের তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহের তুলনায় এই সপ্তাহে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ২০ শতাংশের বেশি। আর গত সপ্তাহের তুলনায় প্রতি কেজি আলুর দাম বেড়েছে ১৬ শতাংশের বেশি। এছাড়া সব ধরনের সবজি বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সয়াবিন ও পামওয়েলের দাম বেড়ে গেছে। পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ৫ টাকার বেশি। আর আলুর দাম বেড়েছে ৩ টাকার মতো।রাজধানীর বাজারগুলোতে পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সয়াবিনের দাম বেড়েই চলেছে। গত সপ্তাহে এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকা লিটার। এই সপ্তাহে সেই একই বোতলের দাম রাখা হয়েছে ১৫৩ টাকা। অর্থাৎ প্রতি লিটারে দাম বেড়েছে তিন টাকার মতো। এছাড়া ৫ লিটার বোতলের দাম বেড়েছে ২০ টাকার মতো। অর্থাৎ গত সপ্তাহে ৫ লিটার সয়াবিন বিক্রি হয়েছে ৭২০ টাকা। শুক্রবার সেই একই বোতল বিক্রি হয়েছে ৭৪০ টাকায়। এদিকে, মাঝারি চালের দাম বেড়েছে। গত সপ্তাহে যে চাল ৫৬ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে, এই সপ্তাহের সেই চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৮ টাকা কেজি দরে।

গোপীবাগ কাঁচাবাজারে বাজার করতে আসা নাসরিন আক্তার বলেন, শীতকাল চলে যাচ্ছে, কিন্তু এখন পর্যন্ত জিনিসপত্রের দাম কমছেই না। তিনি জানান, তার আয়ের অধিকাংশই চলে যাচ্ছে পণ্য কেনার পেছনে। গত সপ্তাহের তুলনায় গোপীবাগ বাজারে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে।

সবজির বাজার: শুধু তাই নয়, শীতের সবজিও সস্তায় পাওয়ার সুযোগ নেই। চড়া দামের মধ্যে আবারও অধিকাংশ সবজির দাম বেড়েছে। শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর কারওয়ান বাজারসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা ছোট ফুলকপির পিস বিক্রি করছেন ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। আর বড় ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে ছোট ফুলকপি ৩০ টাকা এবং বড় ফুলকপি ৫০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছিল। দাম বেড়েছে পাকা টমেটোর। এক সপ্তাহ আগে ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পাকা টমেটো এখন ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাছাই করা ভালো মানের পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা।

দাম বাড়ার এ তালিকায় রয়েছে বেগুন। সপ্তাহের ব্যবধানে বেগুনের দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। গাজরের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ২০ থেকে ৩০ টাকা। করলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকা। শালগমের (ওলকপি) কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। লাউয়ের পিস বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। লালশাকের আঁটি ১০ থেকে ১৫ টাকা, পালংশাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা।

সবজির দামের ব্যাপারে গোপীবাগ বাজারের ব্যবসায়ী রমজান আলী বলেন, সরবরাহ কমে আসায় জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। তাছাড়া বৃষ্টিতে কিছু সবজি নষ্ট হয়েছে। এ কারণে সবজির দাম বেড়েছে। মুরগির বাজারে ব্যবসায়ীরা ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকা। সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা। অর্থাৎ মুরগির দামে পরিবর্তন আসেনি।

মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শোল মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা। তেলাপিয়া ও পাঙাশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা। রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৪৫০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে কাতল মাছ। শিং ও টাকি মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা। নলা মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ২০০ টাকা কেজি। চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা কেজি। এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা। ছোট ইলিশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা।

ইবাংলা/ নাঈম/ ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

কাঁচাবাজারক্রেতাদের নেই স্বস্তিমাছ বাজার
Comments (0)
Add Comment