নদীতে মাছ শিকারে দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা

জেলা প্রতিনিধি চাঁদপুর

ইলিশ পোনা সংরক্ষণে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনাসহ দেশের অভয়াশ্রমগুলোতে মাছ ধরা কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার। শুরু হয়েছে অভিযান হয়েছে। চাঁদপুরের মতলব উত্তরের ষাটনল থেকে হাইমচর চর ভৈরবী পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটার পদ্মা-মেঘনা নদীতে অভয়াশ্রম চলাকালে কোনো জেলেকেই নদীতে নামতে দেওয়া হবে না। দেয়া হয়েছে কঠোর নিষেধাজ্ঞা জেলেরাও তাদের নৌকা তুলে রেখেছে ডাঙ্গা।

সরকার মার্চ-এপ্রিল দু’মাস অভয়াশ্রমগুলোতে মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন। সরকারি এমন নিষেধাজ্ঞার কারণে এই সময় জেলেরা নদীতে নেমে মাছ ধরতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, অভয়াশ্রম এলাকায় জাটকা ধরা ক্রয় বিক্রয় এবং বিপনন নিষিদ্ধ থাকবে।

এমন পরিস্থিতিতে শুধু চাঁদপুরেই বেকার হচ্ছে ৫০ হাজারের বেশি জেলে। তবে সরকারি তালিকায় চাঁদপুরে ৪৪ হাজার ৩৫ জন জেলে রয়েছে। আর তালিকাভুক্ত এসব জেলেদেরকে ৪০ কেজি করে চার মাস খাদ্য সহায়তা দেওয়া হবে সরকারের পক্ষ থেকে।

তবে সরকারিভাবে তাদের যে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়, তা পর্যাপ্ত নয় বলেও জানান অধিকাংশ জেলে পরিবার। খাবার তৈরি করতে চালের সঙ্গে অন্যান্য উপকরণও প্রয়োজন হয়। আর্থিক দৈন্যতার কারণে তা সংকুলান করা তাদের জন্য কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। তাছাড়া জাল নৌকা তৈরি করতে বিভিন্ন সমিতি আর এনজিও থেকে নেওয়া ঋণের কিস্তি পরিশোধের দু:শ্চিন্তা তো রয়েছেই।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তারা জানিয়েছনে, চাঁদপুর সদর, হাইমচর, মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণের নদী পাড়ের মিলিয়ে ৪ উপজেলায় ৪৪ হাজার ৩৫জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন। এ সপ্তাহ থেকে তাদের চাউল দেওয়া শুরু হবে। জনপ্রতি ৪০ কেজি করে চাউল দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসের চাউল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কেউ জাটকা কিংবা অন্য মাছ শিকারে নদীতে নামলে তার বিরুদ্ধে মৎস্য সংরক্ষণ আইনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে কড়া হুশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।

এদিকে নদীতে সবদিক নৌ পুলিশের নজরদারিতে রাখার কথা জানিয়ে নৌ পুলিশের চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার মোঃ কামরুজ্জামান। চাঁদপুর অঞ্চলে নৌ পুলিশের ১২টি ষ্টেশন রয়েছে এবং ১৭৫ জনের মতো পুলিশ সদস্য এতে কর্মরত রয়েছেন। সব মিলিয়ে ২৪টা টিম দিনে রাতে কাজ করার ডিউটি বন্টন করেছে।

জেলেদের অভিযোগ, জাটকা চাঁদপুরের জেলেরা নয় বরং পাশের জেলার জেলেরা এখানে এসে জাটকা ধরে। তারা চাঁদপুরের জেলেদের বদনাম করে দিচ্ছে। প্রকৃত জেলেদের বাদ দিয়ে স্বজন প্রীতির মাধ্যমে দোকানদার, রিক্সাচালকরাও জেলে কার্ড পেয়ে যাচ্ছেন। সরকার যদি এই সময় কিস্তি নেওয়া লোকদের বলে দেয় কিস্তি না নিতে। তাহলে একটু স্বস্তি পেতাম।

ইবাংলা/ ই/ ১ মার্চ, ২০২২

দুই মাসেরনিষেধাজ্ঞা
Comments (0)
Add Comment