খাস জমি দখলের অভিযোগ, প্রশাসন নির্বিকার

নোয়াখালী প্রতিনিধি

নোয়াখালীল কোম্পানীগঞ্জের মুছাপুর ইউনিয়নের মুছাপুর ক্লোজারে ভুয়া ভূমিহীন সাজিয়ে ৬০০ একর সরকারি খাসজমি দখল করে বসত ভিটা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় মেম্বার আলী আজগর জাহাঙ্গীর ও তাঁর লোকজনের বিরুদ্ধে। এরই মধ্যে প্রায় দেড় শতাধিক মাটির ভিটা বানানোর হয়েছে।

গতকাল সোমবার (২৮ মার্চ) উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের ৭নম্বর ওয়ার্ডের ক্লোজারে গিয়ে দেখা যায় প্রশাসনের কোন তদারকি না থাকায় কোন বাধা ছাড়াই ইচ্ছেমত ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর ও তাঁর লোকজন ভিটি বাধছেন। ফলে সরকারের শত কোটি টাকার জায়গা বেহাত হবার উপক্রম হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহনও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ডাকাতিয়া নদীর ওপর বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়। এর ফলে বেড়িবাঁধের মুখে ডাকাতিয়া নদী থেকে আনুমানিক ৭০০ একর নতুন চর জেগে উঠে। এক সময় বনবিভাগ ওই জায়গায় চারাগাছ রোপণ করে। নতুন জেগে উঠা চরে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের পর্যটন এলাকা গড়ে তোলার ঘোষণা দিলে বনবিভাগ ২০১৮সালে তাদের চারা গাছ সরিয়ে নেয়।

কিন্তু এখন স্থানীয় ইউপি সদস্য দুই শতাধিকের উপরে ভুয়া ভূমিহীন সাজিয়ে ৬০০ একর আবাদযোগ্য ও অনাবাদি খাস জমি দখল করে সেখানে বসত ঘর করার জন্য মাটির ভিটা বানাচ্ছে। প্রত্যেকটি ভিটার পরিমাণ হবে এক একর। অভিযোগ রয়েছে এরজন্য ভিটা প্রতি নেওয়া হচ্ছে ১লক্ষ টাকা থেকে দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত।

সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, মুছাপুর ক্লোজারের সামনে জেগে উঠা চরে পাঁচটি স্কেবেটারে মাটি কেটে ভিটা বাধার কাজ চলছে। এতে তদারকি চালাচ্ছে প্রায় শতাধিক মানুষ। গণমাধ্যম কর্মিদের সেখানে যাওয়া নিষেধ বলেও জানান তারা। ওই সময় দেখা যায় চর দরবেশ এলাকার আবদুস সোবহানের ছেলে কালাম খাস জায়গায় মাটি কাটার কাজ করছে। কালাম জানান, মুছাপুরের চরদরবেশ গ্রামের স্থানীয় জনগণ এখানে ভিটা ভরাটের কাজ করছে।

আনুমানিক ৩০০ থেকে ৪০০ পরিবার হবে বলেও মন্তব্য করেন। তিনি আরও জানান, এ জায়গার মধ্যে বাড়ি হবে। স্থানীয় মেম্বার জাহাঙ্গীর জানে। তাঁরা অর্ডার দিয়েছে। মেম্বারের ভাই জালাল সবাইকে বসিয়ে দিচ্ছে। আপনারা কি কাউকে টাকা দেওয়া লাগছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন আমরা নিজেদের ভিটা নিজেরা বেঁধে নিচ্ছি। যা চার-পাঁচ হাজার টাকা খরচ যায়।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৭নম্বর মেম্বার আলী আজগর জাহাঙ্গীর বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানিনা। তবে উপজেলা থেকে অথবা বোর্ড অফিস থেকে কোন নির্দেশ আসলে আমি সঙ্গে সঙ্গে গিয়ে এটার প্রতিবাদ করব এবং বন্ধ করব। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা খাস জায়গা, না ব্যক্তি মালিকানার জায়গা এ সম্পর্কে আমি কিছুই জানিনা। আমি জানি এটা নদী ছিল তারপর চর জাগে। এরপর কাউকে বন্দোবস্ত দিছে কিনা এ বিষয়ে জানা নেই। কাউকে বন্দোবস্ত দিলে সে পাইছে। আর খাস থাকলে সরকার ব্যবস্থা নিবে।

তিনি আরও বলেন, আমার দুই ভাই এবং আমি খাস জায়গা দখলের সাথে জড়িত নেই। আমি খাস জায়গা দখলের বিষয়ে পরিষদে জানিয়েছি।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো.আল আমিন বলেন, অভিযোগ পেয়ে আমার নায়েব সাহেবকে কালকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। তবে খাস জমি দখলের কাজ বন্ধ হয়নি এমনটি জানানে তিনি জানান, আইন-শৃঙ্খলা মিটিং শেষে আমি নিজে ঘটনাস্থলে যাব।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.খোরশেদ আলম চৌধুরী বলেন আমি মেম্বারকে ফোন দিচ্ছি।

ইবাংলা/ জেএন /৩০মার্চ, ২২

খাসজমিদখর
Comments (0)
Add Comment