টাঙ্গাইলের মধুপুর বনের গাছ চুরি খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে বুধবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে মধুপুরের দুই সাংবাদিক বন এলাকার একাধিক মামলার আসামী চিহ্নিত বনদস্যুদের হামলার শিকারের ঘটনা ঘটেছে।
বনদস্যুরা সাংবাদিকদের কাছে থাকা একটি ডিজিটাল ক্যামেরা ও দুটি মোবাইল ছিনতাই করেছে। এই ঘটনায় সাংবাদিক মহলে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় বইছে। ঘটনার সাথে জড়িত চিহ্নিত বন অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী সাংবাদিকদের।
জানা যায়, টাঙ্গাইল বন বিভাগের দোখলা রেঞ্জের হরিণধরা এলাকায় দীর্ঘ দিন যাবত চিহ্নিত বনদস্যু একাধিক বন মামলার আসামীর একটি চক্র নির্বিচারে সামাজিক বনায়নের গাছ কেটে সাবাড় করে যাচ্ছে।
এ খবর পেয়ে আকবর হোসেন ও মেহেদী হাসান বকুল নামের মধুপুরের দুই গণমাধ্যম কর্মী সংবাদ সংগ্রহের জন্য সরেজমিনে হরিণধরা এলাকায় গিয়ে সামাজিক বনায়নের চুরি হওয়া গাছের ছবি ও তথ্য সংগ্রহ করে।
হরিণধরা এলাকার সামাজিক বনায়নের অংশিদার রজব আলী (৭৬) এর প্লট থেকে ২০-৩০টি গাছ স্থানীয় একাধিক বন মামলার আসামী বনদস্যু একই এলাকার মোহাম্মদ আলীর ছেলে দুলাল, আলেমের ছেলে সেলিম, সোহেল, হাছান, হোসেন গাছ চুরি করে।
শুধু রজব আলীই নয় আব্দুর রাজ্জাক, রহমত, মহিরসহ স্থানীয়দের সামাজিক বনায়নের প্লট থেকে ১৫-২০ জনের গাছ চুরের সিন্ডিকেট বনদস্যুরা প্রকাশ্যে দিবালোকে প্রতিনিয়ত গাছ চুরি করে ওই এলাকায় রাজত্ব কায়েম করেছে। চোরের এ সিন্ডিকেট গাছ চুরি করে অরণখোলা ইউনিয়নের ভুটিয়া গ্রামের একাধিক বন মামলার আসামী গাছ চোরের হোতা অবৈধ কাঠ ব্যবসায়ি আব্দুল বাছেদ ওরফে বেøড বাছেদের নিকট বিক্রি করে।
এ তথ্য ও ছবি সংগ্রহ করে ফেরার পথে গতিরোধ করে দুলাল, সেলিম , সোহেল, বেøড বাছেদ, হাছেন হোছেনসহ দশ পনের জনের গাছ চোর ও অবৈধ চোরাই কাঠ ব্যবসায়ীর একটি দল সাংবাদিকদের উপর হামলা ও হেনস্তা করে ক্যামেরা, দুটি মোবাইল ও তথ্য সংগ্রহের নোটবুক ছিনিয়ে নেয়।
হামলাকারীরা সাংবাদিকদের শাসিয়ে দেয় ভবিষ্যতে এ এলাকায় কোন সাংবাদিক প্রবেশ করলে বের হয়ে যেতে দেয়া হবে না। এ ব্যাপারে সাংবাদিকদ্বয় মধুপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। এসব তথ্য অভিযোগ ও সাংবাদিকদ্বয়ের সাথে কথা বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে হামলার শিকার আকবর হোসেন ও মেহেদী হাসান বকুল জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সামাজিক বনায়নের গাছ চুরির খবর পেয়ে হরিণধরা এলাকায় গিয়ে ছবি ও তথ্য সংগ্রহ করে ফেরার পথে দুলাল, সেলিম, বেøড বাছেদ গং বনদস্যুদের হামলার শিকার হন। এ সময় তাদের কাছ থেকে ক্যামেরা, মোবাইল ও তথ্য সংগহ নোটবুক ছিনতাই করা হয়।
এ ব্যাপারে স্থানীয় শোলাকুড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন এ ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবী জানান।
মধুপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল আজিজ ক্যামেরা মোবাইল ও নোটবুক উদ্ধার পূর্বক ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচার দাবী করেন। লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন মধুপুর থানার ডিউটি অফিসার আব্দুস সামাদ।
ইবাংলা/ টিএইচকে/ ৮ এপ্রিল, ২০২২