পাহাড়ি ঢলে ৩০০ হেক্টর জমি পানির নিচে, দুশ্চিন্তায় কৃষকরা

ডেস্ক রিপোর্ট

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নদ-নদীগুলোর পানি বাড়ার ফলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর সদর, ভলাকুট, বুড়িশ্বর, গোয়ালনগর,পূর্বভাগসহ অন্তত ৬টি ইউনিয়নের হাওর এলাকার ২০০ হেক্টর ধানের জমি পানিতে তলিয়ে গেছে।

এর ফলে কৃষকরা তাদের আধাপাকা ধান কেটে ফেলছেন। আবার অনেকে ধান কাট শ্রমিকের অভাবে পানির নিচ থেকে ধান উঠাতেও পারছে না। এই পাহাড়ি ঢলে ধানের জমি তলিয়ে যাওয়াতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে কৃষকরা।

ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা জানিয়েছেন, সুনামগঞ্জ থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নাসিরনগরের নদ-নদীগুলোতে অন্তত ২ ফুট পানি বেড়েছে। এতে করে নদী ও বিল এলাকা সংলগ্ন জমিগুলো তলিয়ে গেছে। এতে করে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা।

ভলাকুটের কৃষকরা জনান, কয়েকদিন আগে শিলাবৃষ্টিতে ধানের অনেক ক্ষতি হয়েছে। এবার সুনামগঞ্জের পানি এসে সব ধান ভাসিয়ে নিয়ে গেছে।

কৃষক আলী নেওয়াজ জানান, নাসিরনগরে মেদির হাওরে তার পাঁচ কানি জমি ছিল। প্রায় সব জমি উজানে পানিতে ভাসিয়ে নিতে দেখে আধাপাকা জমি কেটে আনছেন। ফলে তার লোকসান গুনতে হচ্ছে।

ক্ষতিগ্রস্থ চারজন কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় ২০০ হেক্টর জমির ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। তাদের অনেক কৃষক ঋণ নিয়ে জমিতে ধান চাষ করেছিলেন। এখন ঋণ শোধ করা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

নাসিরনগর কৃষি কর্মকর্তা আবু সাঈদ তারেক বলেছেন, ২০০ হেক্টর জমি হয়তো তলিয়ে যায়নি, কিছু কম হতে পারে।তবে পানিতে তলিয়ে যাওয়ার জমির পরিমাণ নির্ধারণ ও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরিতে কাজ চলছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক রবিউল হক মজুমদার বলেন, উজানের পানি নেমে আসার কারণে নাসিরনগরের তিতাস নদী, বলভদ্র নদী এবং লঙঘর নদী সংলগ্ন প্রায় দুইশ হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তবে হাওরেরে উজানের জমি এখনো সুরক্ষিত আছে।

আরও পানি বাড়লে হাওরের মারাত্মক ক্ষতি হবে। হাওর এলাকায় প্রায় ৩২ হাজার দুই হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে নয় হাজার ৩১০ হেক্টর জমি কাটা হয়ে গেছে। যা মোট জমির শতকরা উনত্রিশ ভাগ। আর আট-দশ দিন সময় পেলে সব জমি কাটা হয়ে যাবে।

অন্যদিকে, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার বিভিন্ন হাওরের আরও ১০০ একর জমির ধান পানিতে তলিয়ে গেছে।

বুধবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে লাখাই উপজেলার সদর ইউনিয়নের কৃষি অফিসার অমিতাভ ভট্টাচার্য এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে শ্রমিক সংকটের কারণে কৃষকদের আধাপাকা ধান কাটতেও অসুবিধা হচ্ছে।

লাখাই উপজেলার সদর ইউনিয়নের কৃষি অফিসার অমিতাভ ভট্টাচার্য জানান, গত কয়েকদিনের উজান থেকে আসা পানিতে লাখাই উপজেলার ৫০০ একর জমির ধান ইতোমধ্যে তলিয়ে গেছে। আশঙ্কা ছিল আরও ২০০ একর জমির ধান তলিয়ে যাওয়ার। কিন্তু পানি কিছুটা স্থিতি থাকার কারণে ভালই ছিল। কিন্তু সকাল থেকে প্রচুর পরিমাণ বৃষ্টিপাত হওয়ার কারণে আরও ১০০ একর ধান নতুন করে তলিয়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা কৃষকদের দ্রুত সময়ের মধ্যেই ধান কাটার জন্য পরামর্শ দিয়েছি। এছাড়া যে জমিতে এখনো পানি উঠেনি, সেই জমির ধান কাটার জন্য কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে মেশিন দেওয়া হয়েছে। যাতে করে কৃষকরা পানি উঠার আগেই ধান ঘরে তোলতে পারে।

ইবাংলা /জেএন /২০ এপ্রিল,২০২২

৩০০ হেক্টরজমিদুশ্চিন্তায় কৃষকরাপানির নিচেপাহাড়ি ঢলে
Comments (0)
Add Comment