নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে হাজীপুরে বাবার কোলে শিশু তাসপিয়া আক্তার জান্নাতকে (৩) গুলি করে হত্যার ঘটনায় অস্ত্রের যোগানদাতাকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
গ্রেপ্তারকৃত সাকায়েত উল্যাহ জুয়েল (২৯) উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের লক্ষীনারায়ণপুর গ্রামের বজু মিকার বাড়ির মৃত হাবিব উল্যার ছেলে।
রোববার (২৪ এপ্রিল) দুপুর পৌনে ১টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) শহীদুল ইসলাম। এর আগে শনিবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে বেগমগঞ্জের হাজীপুর থেকে ডিবির (ওসি) সাইফুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মো.সবজেল হোসেনের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এসপি আরও জানান, শিশু তাসপিয়া হত্যা মামলার প্রধান আসামি মামুন উদ্দিন ওরফে রিমন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। ওই জবানবন্দিতে প্রকাশিত আসামি সাকায়েত উল্যাহ জুয়েল। জবানবন্দিতে রিমন জানায় শিশু তাসপিয়া হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রের যোগানদাতা জুয়েল।
পরে গ্রেপ্তারকৃত জুয়েলের তথ্য অনুযায়ী উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের ৯নম্বর ওয়ার্ডের সোলাইমানের পরিত্যক্ত বসতঘরে শনিবার দিবাগত রাত ২টা ১৫ মিনিটের দিকে অভিযান চালিয়ে দেশীয় তৈরী দুটি কিরিচ ও একটি রামদা উদ্ধার করা হয়। রাত পৌনে ৩টার দিকে একই মামলার পলাতক আসামি পলাতক আসামি বাদশার বসত ঘর থেকে আসামি জুয়েলের দেওয়া তথ্য মতে একটি পাইপগান ও দুই রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করা ডিবি পুলিশ। এ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত জুয়েল ও পলাতক আসামি বাদশার বিরুদ্ধে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় অস্ত্র আইনে মামলা রুজু প্রক্রিয়াধীন।
এ মামলার প্রধান আসামি রিমন বেগমগঞ্জ উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীনারায়ণপুর গ্রামের মোমিন উল্যাহর ছেলে। শিশু তাসপিয়া হত্যা মামলা ছাড়াও তাঁর বিরুদ্ধে বেগমগঞ্জ ও সুবর্ণচরের চরজব্বর থানায় মারামারি, হত্যাচেষ্টা ও অস্ত্র আইনে আরও নয়টি মামলা রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বুধবার (৯ এপ্রিল) বিকেলে শিশু তাসপিয়া আক্তারকে চিপস-জুস কিনে দিতে বেগমগঞ্জ উপজেলার হাজীপুর মালেকার বাপের দোকান এলাকায় যান প্রবাসী আবু জাহের। তিনি তাঁর ভাগনে আবদুল্লা আল-মামুনের দোকানে কথা বলছিলেন। এমন সময় পূর্ববিরোধের জের ধরে রিমন কয়েকজন সহযোগীকে নিয়ে সেখানে হামলা চালান।
এ সময় জাহের তাঁর মেয়েকে কোলে নিয়ে পালানোর চেষ্টা করলে তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি চালান রিমন। এতে শিশু তাসপিয়ার মাথা ও মুখমণ্ডল গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যায় এবং তার বাবা আবু জাহেরেরও চোখসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলি লাগে। গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকায় নেওয়ার পথে কুমিল্লায় মারা যায় তাসপিয়া।
এ ঘটনায় তাসপিয়ার খালু হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে বুধবার বেগমগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় মো. রিমনসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মামলাটি বর্তমানে জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পুলিশ তদন্ত করছে। এ মামলায় পুলিশ,র্যাব ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) এ পর্যন্ত নয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
ইবাংলা /জেএন /২৪ এপ্রিল,২০২২