অর্থ পাচারের অপরাধে সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গে গ্রেফতার হওয়া পি কে হালদারের আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম চাপা দিতে নিয়মিত ঘুষ নেয়ার অভিযোগ রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের উর্ধতন কর্মকর্তাসহ বেশ কয়েকজন পরিদর্শন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, প্রতিমাসে তাদের দিতে হতো পাঁচ থেকে সাত লাখ টাকা। শুধু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের তৎকালীন মহাব্যবস্থাপক শাহ আলমকে প্রতিমাসে দেয়া হতো দুই লাখ টাকা। এসব অনিয়ম ম্যানেজ করার অভিযোগ রয়েছে সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরীর বিরুদ্ধেও।
বাংলাদেশ ছাড়িয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গেও এখন সবচেয়ে আলোচনায় আর্থিক খাতের বড় অনিয়মের অন্যতম হোতা পি কে হালদার। গ্রেফতারের পর থেকেই প্রতিদিনই তার সম্পদের খোঁজ পাচ্ছে গোয়েন্দারা।
পশ্চিমবঙ্গেও তার ১৫০ কোটি টাকার সম্পদের খোঁজ মিলেছে। তবে, এক দিনেই এসব অর্থ লুট ও পাচার করেননি পিকে। এজন্য সহায়তা করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থার একাধিক কর্মকর্তা। দুদকের অনুসন্ধানে নামও উঠে এসেছে একাধিক ব্যক্তির।
দুদক বলছে, ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাশেদুল হক পি কে হালদারের অর্থ লুটের অন্যতম সহায়ক। পিকের হয়ে ৭১ কোটি টাকা অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। গত বছরের ২৩ জানুয়ারি তাকে সেগুনবাগিচা থেকে গ্রেফতার করে দুদক। এরপর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে তিনি অর্থ আত্মসাতে সহায়তায় বেশ কয়েকজনের নাম বলেন।
শাহ আলম, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের তৎকালীন মহাব্যবস্থাপক। রাশেদুলের দেয়া স্বীকারোক্তিতে উঠে আসে অনিয়ম চাপা দিতে পিকের প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতি মাসে তাকে দেয়া হতো দুই লাখ টাকা।
এই রাশেদুল হকের সময়েই দেশের কমপক্ষে ১০টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বড় ধরনের দুর্নীতির অভিযোগ উঠে। আর এসব দুর্নীতির মাঠ থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন পিকে হালদার। এরই মধ্যে পিকে সংশ্লিষ্টতায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
রাশেদুলের জবানবন্দি অনুযায়ি পিকের অন্যতম ক্ষমতার উৎস ছিলো বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী । তার মাধ্যমেই পি কে তার বিভিন্ন অনিয়ম ম্যানেজ করতেন। কেউ পরিদর্শনে আসলে তাদের ঘুষের বিনিময়ে ইতিবাচক প্রতিবেদন দেয়া হতো।
এছাড়াও পিকে হালদারের সহযোগী হিসেবে তার বেশ কয়েকজন নারীর নামও রয়েছে। যদিও এখনো পিকে সংশ্লিষ্টতায় আর কারা জড়িত তাদের খোঁজে মাঠে রয়েছে গোয়েন্দারা। সূত্র : ডিবিসি নিউজ
ইবাংলা/টিএইচকে/১৮মে.২০২২