ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ

বান্দরবান প্রতিনিধি

বান্দরবানের আলীকদম উপজেলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের রাস্তার উন্নয়ন কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অঝোর বৃষ্টিতে ময়লাযুক্ত সড়কে কার্পেটিং করায় স্থানীয়দের বাধাঁর মুখে পড়েছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। অনিয়মের এই সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ক্ষোভের সৃষ্টি হয় স্থানীয় মানুষের মাঝে।

আর তখনই টনকনড়ে কর্তৃপক্ষের। জনরোষ থেকে বাঁচতে ঘটনার একদিন পর (গতকাল সোমবার) ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করে সড়কের সামান্য কিছু অংশ তুলে ফেলার নির্দেশনা দিয়েছেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি)র উপজেলা প্রকৌশলী।

আলীকদম উপজেলার নয়াপাড়া ইউনিয়নের ওয়াইহ্লা মারমা পাড়া সড়কটি বহুল ব্যবহৃত। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন শত শত মানুষ নিয়মিত যাতায়তসহ যানচলাচল করে। দীর্ঘদিন পড়ে থাকা ভাঙ্গাচোরা সড়কটি সম্প্রতি কার্পেটিং এর কাজ বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেয় উপজেলা এলজিইডি। তারই ধারাবাহিকতায় পাচঁটি প্যাকেজে প্রায় ৮শ মিটার দৈর্ঘ্য এবং প্রস্ত ৩মিটার সড়ক উন্নয়নে কার্পেটিং এর কাজ শুরু হয় কয়েকদিন পূর্বে।

পার্বত্য অঞ্চলে গ্রামীণ মৌলিক ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন (ডিডিআরআরআইপি) প্রকল্পের আওতায় প্রায় ১২কোটি টাকা বরাদ্দের এই সড়কের প্রথম প্যাকেজে ৬কোটি ১৮লক্ষ ৬৭হাজার টাকা বরাদ্দে অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরার নামে লাইসেন্সে কাজটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায় স্থানীয় বিএনপি নেতা আবু বক্কর।

বেশ কয়েক মাস আগে সড়কটিতে নিম্মমানের ইটের ম্যাকাডম দিয়ে সাববেজ তৈরী করা হলেও কার্পেটিং এর কাজ চলছে বর্তমানে। স্থানীয়দের অভিযোগ জেলা নির্বাহী প্রকৌশলীর দোহাই দিয়ে কাজের শুরু থেকে নানা অনিয়ম করে আসছে ঠিকাদার। দীর্ঘদিন পড়ে থাকা সাববেজ ও ম্যাকাডমের উপর দিয়ে গাড়ি চলাচলের ফলে সড়কটি ইতিমধ্যেই স্থায়ীত্ব হারিয়েছে।

তার উপর গত শনিবার অঝোর বৃষ্টির মধ্যে অপরিষ্কার পাথরের সংমিশ্রণে রাস্তায় করা হয় কার্পেটিং এর কাজ। সোমবার সকালে সরেজমিনে স্থানীয়রা জানান, জেলা নির্বাহী প্রকৌশলীর প্রভাব খাটিয়ে এভাবে নিম্মমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় পুরো প্রকল্পের কাজ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

এই উন্নয়ন কাজের সঙ্গে স্থানীয় রাজনৈতিক ও জনপ্রতিনিধি সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ তুলে স্থানীয়রা কেউ ক্যামরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি। তাদের অভিযোগ কাজের সময় এলজিইডির কেউ উপস্থিত না থাকায় ঠিকাদার তার নিজের খেয়াল খুশি মতো কাজ করেছে।

তবে এই বিষয়ে কাজের ঠিকাদার আবু বক্কর বলেন- স্থানীয়রা অভিযোগ তুলায় কার্পেটিং তুলে ফেলা হচ্ছে। এজন্য কর্তৃপক্ষ তাকে কিছু বলেনি। ময়লা ও কাদাপানিতে বিভাবে কাপেটিং করছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন হালকা ময়লা থাকবে বর্ষার দিনে।

কাজ করার সময় অফিসের লোকজন থাকে তারা কের বাধা দিচ্ছেন না। নয়া পাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কফিল উদ্দিন বলেন, হঠাৎ করে বৃষ্টি চলে আসায় এমন পরিস্থিতি তৈরী হয়েছিল। তবে বিষয়টি নিয়ে তিনি এলজিইডির সঙ্গে কথা বলার পরদিন বৃষ্টিতে করা কার্পেটিং তুলে ফেলা হয়েছে।

এদিকে অঝোর বৃষ্টিতে রাস্তায় কার্পেটিং এর একটি ভিডিও প্রকাশ করেন স্থানীয় ক্ষুব্ধ এক নাগরিক। পরে চাপের মুখে পোষ্টটি ডিলিট করলেও ততোক্ষণে বিভিন্ন পর্যায়ে টনকনড়ে এলজিইডির। স্থানীয় মানুষকে শান্তনা দিতে সোমবার সকালে ওই সড়ক পরিদর্শণ করে সামান্য কিছু কার্পেটিং অংশ তুলে নেওয়ার নির্দেশ দেন উপজেলা রকৌশলী আসিফ মাহমুদ। পাশাপাশি কাজের ঠিকাদারকে করা হয় শোকজ।

ইবাংলা /জেএন /২৩ মে,২০২২

ক্ষোভমাঝেস্থানীয়দের
Comments (0)
Add Comment