আসছে ঈদ, অন্যদিকে গৃহে বদ্ধ বর্ষা। রাস্তাতে নামতেই কেউ খাচ্ছে আছাড়, কেউ খাচ্ছে বৃষ্টির ঘোলা জল। আবার মেঘের আড়াল থেকে আশা জাগানিয়া সুর্যের মন ভালো হলেই উঁকি দিচ্ছে সময়ে অসময়ে। নানাবিধ প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও কাজ থেমে নেই- দেশের, মানুষের। এসব প্রতিবন্ধকতা এবং সীমাবদ্ধতা সঙ্গে নিয়েই কাজ চলছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থীদের। শুষ্ক মুখে হাসির ফোয়ারা জাগিয়ে তুলতে ব্যস্ততম নগরীর অনুসন্ধিৎসু একদল শিক্ষার্থী।
করোনাক্রান্তির পর নাট্যকলা বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ, ৩য় বর্ষ ২য় সেমিস্টার পরীক্ষা প্রযোজনা ‘এ মিডসামার নাইট’স ড্রিম’ প্রথমবারের মতো মঞ্চায়িত হতে যাচ্ছে। শনিবার(২ জুলাই)-সন্ধ্যা ৭:০০ টা ও রবিবার(৩ জুলাই) বিকেল ৫:০০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তন হলে নাটকটি প্রদর্শিত হবে। নাটকটির নির্দেশনা দিচ্ছেন কোর্স শিক্ষক সঞ্জীব কুমার দে (সহকারী অধ্যাপক, নাট্যকলা বিভাগ)।
ধারণা করা হয় ১৫৯০ থেকে ১৫৯৬ সালের মধ্যবর্তী কোনো এক সময়ের শেক্সপিয়ার রচিত কমেডি এটি। এথেন্সের ডিউক থিসিয়াস ও আমাজনদের রানি হিপ্পোলিটার বিবাহের পারিপার্শ্বিক ঘটনা অবলম্বনে এই নাটক রচিত। নাটকে দুই প্রণয়ীযুগল ও একদল শখের অভিনেতার অ্যাডভেঞ্চার প্রদর্শিত হয়েছে। এটি শেক্সপিয়রের অন্যতম জনপ্রিয় নাটক ও সারা বিশ্বে অভিনীত। নাটকের মূল ঘটনায় দেখা যায় হার্মিয়া নামের এক যুবতীকে তার পিতা দিমেত্রিয়াস নামের এক যুবকের সাথে বিয়ে দিতে চায়। কিন্তু হার্মিয়া ভালোবাসে লাইস্যান্ডারকে। লাইসেন্ডার ও হার্মিয়া সিদ্ধান্ত নেয় দূরে কোথাও পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করবে। কিন্তু সে সিদ্ধান্ত ফাঁস হয়ে যায়।
অন্যদিকে পরী রাজ্যের রাজা ওবেরন ও রাণী টিটানিয়া একটি ভারতীয় বালককে কেন্দ্র করে ঝগড়ায় মত্ত হয়। ওবেরন রাণী টিটানিয়ার কথায় ক্ষুব্ধ হয় এবং রাণীকে উপযুক্ত জবাব দেওয়ার পরিকল্পনা করে। ওবেরন তার অনুচর পাককে একটি শ্বেতশুভ্র ফুল এনে দিতে বলে। যে ফুলের নির্যাস ঘুমন্ত কারো চোখে এক ফোঁটা ঢেলে দিলেই ঘুম হতে জেগে ওঠে সে যাকে দেখবে তারই প্রেমে পড়ে যাবে।
শ্রমিকদল জঙ্গলে নাটকের মহড়া দিতে এসেছে। পাক ইতিপূর্বে জাদুবলে বটমের মাথাকে গাধার মাথাতে পরিণত করে দেয়। টিটানিয়া গাধারূপী বটমকে দেখেই ভালোবেসে ফেলে। এদিকে লাইসেন্ডার ঘুম হতে জেগে হার্মিয়াকে ভুলে হেলেনাকে প্রেম নিবেদন করে। পরী রাজা ওবেরনের নির্দেশে পাক সবার দৃষ্টি হতে মোহজাল সরিয়ে দেয়। অবশেষে মোহভঙ্গ ঘটে সবার। রাজা থিসিয়াস ও রাণী হিপোলিটার বিবাহ অনুষ্ঠানে যোগ দেয় এবং একসাথে সবাই শ্রমিক দলের নাটক উপভোগ করে। এমন ত্রিমুখী প্রেমের সংঘর্ষে সৃষ্টি হয় দারুণ এক হাস্যরসাত্মক পরিস্থিতি। যা নাটকটির মূল দিক।
নাটকটির আলোক পরিকল্পনা করেন বিভাগীয় চেয়ারম্যান শামস্ শাহরিয়ার কবি। পোষাক পরিকল্পনা ও অঙ্গরচনা তত্ত্বাবধায়ন করেন বিভাগীয় শিক্ষক আফরিন হুদা তোড়া। দেহবিন্যাস তত্ত্বাবধায়নে আছেন বিভাগীয় শিক্ষক রুবাইয়া জাবীন প্রিয়তা ও কৃপাকণা তালুকদার। নাটকটিতে অভিনয় করবেন- শফিকুল, আরিফ, মৌমিতা, সাবরিনা, পরমা, অনামিকা, মৃত্তিকা, বৃষ্টি, সাবিহা, প্রিয়া, শাকিল, নিবিড়, জিন্নাত, নাফিস, মিল্টন, রিয়াজ, জান্নাতুল, লামিয়া, স্বর্ণা, উম্মেহানি, রিমি, বিথী, ফারজানা, সায়লা, সুজানা, আশরাফুল, উচ্ছ্বাস, হৃদয়, ইব্রাহিম, আলিমুল, আবেশ ও এলিন। এছাড়া, বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীরা নেপথ্যে রয়েছেন।
ইবাংলা / জেএন / ০১ জুলাই,২০২২