হেনোলাক্স গ্রুপের মালিক ও তার স্ত্রী গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে নিজের গায়ে আগুন দেয়া সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও ব্যবসায়ী গাজী আনিসকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলায় আমিন ম্যানুফাকচারিং কোম্পানির (হেনোলাক্স গ্রুপ) মালিক নুরুল আমিন এবং তার স্ত্রী ফাতেমা আমিনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। মঙ্গলবার (৫ জুলাই) রাতে রাজধানীর উত্তরা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

মঙ্গলবার (৫ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তরা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

মঈন বলেন, গাজী আনিসের মৃত্যুর পর এ ঘটনায় ছায়া তদন্ত করে র‍্যাব-১। এরপর রাতে উত্তরায় অভিযান চালিয়ে আমিন ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির (হেনোলাক্স) ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরুল আমিন ও তার স্ত্রী ফাতেমা আমিনকে গ্রেফতার করা হয়।

মঙ্গলবার (৫ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তরা থেকে তাদের গ্রেফতারের আগে সকাল ৬টায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় গাজী আনিসের মৃত্যু হয়।

এরপর দুপুরে আনিসের বড় ভাই নজরুল ইসলাম শাহবাগ থানায় হেনোলাক্সের কর্ণধার নুরুল আমিন ও তার স্ত্রী ফাতেমা আমিনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। শাহবাগ থানার এসআই গোলাম হোসেন খান জানান, মামলায় আত্মহত্যায় প্ররোচণার অভিযোগ আনা হয়েছে।

সোমবার (৪ জুলাই) বিকেল ৫টার দিকে গাজী আনিস জাতীয় প্রেস ক্লাবে নিজের গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।

শাহবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মওদুদ হাওলাদার জানান, খবর পেয়ে প্রেস ক্লাবের ভেতর থেকে দ্রুত তাকে উদ্ধার করা হয়। সঙ্গে সঙ্গে তাকে বার্ন ইনস্টিটিউটে নিয়ে যাওয়া হয়।

তিনি বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে জানতে পেরেছি তার নাম গাজী আনিস। বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালীর পানটি গ্রামে। কী কারণে তিনি এই ঘটনা ঘটিয়েছেন তা এখনও জানা সম্ভব হয়নি। তবে তিনি নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

প্রেস ক্লাবে উপস্থিত থাকা একাধিক সাংবাদিক জানান, সোমবার বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে তিনি চায়ের দোকানে বসেছিলেন। তখন ওই ব্যক্তিকে হঠাৎ নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিতে দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গে তিনি তার কাছে গিয়ে পানি ঢেলে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। পরে ৯৯৯-তে কল দেন। পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে।

তিনি আরও জানান, গাজী আনিস নামে ওই ব্যক্তি কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। দুই-আড়াই মাস আগে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি ‘হেনোলাক্স কোম্পানি’র কাছে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা পান বলে দাবি করেন।

তার ভাই নজরুল ইসলাম জানান, তাদের বাবা মৃত ইব্রাহীম হোসেন বিশ্বাস। ৯১-৯৫ সাল পর্যন্ত গাজী আনিস কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। তার স্ত্রী স্বপ্না। ৩ মেয়ের জনক তিনি। ব্যবসার পাশাপাশি চাকরিও করতেন। ওই কোম্পানির কাছে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা পেতেন। এ জন্য কয়েক দফায় সংবাদ সম্মেলনও করেছেন। ওই টাকা না পাওয়ায় তিনি এই ঘটনা ঘটিয়েছেন।

ইবাংলা/জেএন/৫জুলাই,২০২২

স্ত্রী গ্রেফতার
Comments (0)
Add Comment