বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগ সম্পন্ন একটি দেশ। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ফসল ও অন্যান্য সম্পদ যাতে নষ্ট না হয় সে জন্য বিভিন্ন ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ করে থাকে।
এজন্য কৃষিতে বন্যা, খরা, সাইক্লোনসহ যে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের সার্বক্ষণিক প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক।
তিনি বলেন, দেশের কৃষি প্রকৃতিনির্ভর এবং কৃষি সবসময়ই বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকিতে থাকে। সাম্প্রতিক বন্যায় সিলেট, সুনামগঞ্জসহ ১২টি জেলায় ফসলের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, আগস্টে আরেকটি ভয়াবহ বন্যার পূর্ভাবাস রয়েছে।
আরও পড়ুন… নোয়াখালী জেলা আ.লীগের আহবায়ক করোনায় আক্রান্ত
কৃষি মন্ত্রণালয় সেভাবেই প্রস্তুতি নিয়েছে, এটি একটি রুটিন কাজ। আমরা ব্যাপক পুনর্বাসন কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। একইসাথে, নাবী জাতের (লেইট ভ্যারাইটি) ধান চাষে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের কনফারেন্স রুমে কৃষিখাতে সরকারি বেসরকারি অংশিদারিত্ব (পিপিপি)নিয়ে পর্যালোচনা সভায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
কৃষিসচিব মো. সায়েদুল ইসলামের সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, সংস্থা প্রধান এবং কৃষি-শিল্প উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, কৃষিতে সরকারের এখন মূল লক্ষ্য হলো কৃষিকে সত্যিকার অর্থে বাণিজ্যিকীকরণ করা, যাতে কৃষকের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটে। সেলক্ষ্য সরকার কাজ করছে। তবে এক্ষেত্রে বেসরকারি শিল্পোদ্যোক্তাদেরও সহযোগিতা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন...হাসিবুল হত্যা মামলার প্রধান আসামি আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেফতার
বিশেষ করে কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ ও যান্ত্রিকীকরণে বেসরকারি শিল্পোদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসতে হবে। কৃষিযন্ত্র অনেক ব্যয়বহুল, ৯০% যন্ত্র আমদানিনির্ভর। এসব কৃষিযন্ত্র আমরা দেশে উৎপাদন করতে চাই। পিপিপি এখানে বিরাট ভূমিকা রাখতে পারবে।
বেসরকারি শিল্পোদ্যোক্তারা এগিয়ে আসলে তাদেরকে প্রযুক্তিগত, অর্থনৈতিক, পলিসিসহ সকল বিষয়ে সহযোগিতা প্রদান করা হবে বলে জানান মন্ত্রী। এছাড়া, বর্তমানে ডাল, তেলসহ যেসব কৃষিপণ্য আমদানি করতে হয়, তা উৎপাদনে ৪% সুদে ঋণ দেয়া হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে সকল কৃষিপণ্যে ৪% সুদে ঋণ দেয়ার প্রচেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।
অন্যদিকে চালের বাজার স্থিতিশীল ও চাল আমদানিতে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হবে না বলে মন্ত্রী আশ্বস্ত করেন। সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী বলেন, চাল আমদানির ফলে কৃষকদের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা নেই। ‘বাজার স্থিতিশীল রাখতেই সরকার চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছে।
চাল আমদানির আমাদের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টার্গেট আছে। সেই পরিমাণ চাল দেশে এসে গেলে আমদানি বন্ধ করে দেওয়া হবে। আমরা প্রতিদিনই নিবিড়ভাবে বাজার মনিটর করছি।
এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয় এবং কৃষি মন্ত্রণালয় একত্রে কাজ করছে। কাজেই চাল আমদানির ফলে দেশীয় কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা নেই’।মন্ত্রী বলেন, চালের দাম চাহিদা-সরবরাহের উপর নির্ভরশীল।
তবে সিন্ডিকেট করে অনেকে বেশি মুনাফা করার চেষ্টা করে। এদেরকে নিবৃত করার জন্যও চাল আমদানির অনুমতি দেয়া হয়েছে। আমদানির ফলেই চালের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। এবং আমার ধারণা, দাম কিছুটা কমেছে।
দেশে ধানের অবৈধ মজুত সন্ধানে অভিযান থেমে যায়নি বলেও জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী। ভবিষ্যৎ – এ বাংলাদেশ কৃষিতে আরো সমৃদ্ধ হবে এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
ইবাংলা/বায়েজীদ/১৪জুলাই,২০২২