দেশের একমাত্র উৎপাদনশীল কয়লাখনি দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি থেকে কয়লা উত্তোলন শুরুর তিন দিন পর ৩৪ জন চীনা শ্রমিকসহ ৫২ জন শ্রমিক করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় আবারো গত শনিবার (৩০ জুলাই) থেকে বন্ধ হলো কয়লা উত্তোলন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন বড়পুুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম সরকার। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।
বড়পুুকুরিয়া কয়লাখনির ১৩১০ নং ফেইজ (কুপ) পরিত্যক্ত হওয়ার দীর্ঘ ৮৭ দিন পর নতুন ফেইস (কূপ) ১৩০৬ নং থেকে গত বুধবার (২৭ জুলাই) থেকে পরিক্ষামূলক কয়লা উত্তোলন শুরু হয়।
আরও পড়ুন…বিদ্যুৎ সাশ্রয় নীতিকে সংকট বলে প্রচার করছে বিএনপি
কয়লা উত্তোলন শুরু থেকে ২৭, ২৮ ও ২৯ জুলাই পর্যন্ত কয়লা উত্তোলন যথারিতি চললেও; গত ২৬ জুলাই ৪০০ জন স্থানীয় (দেশি) শ্রমিকের র্যাম ড্যাম করোনা পরীক্ষা করা হলে ১৬ জন শ্রমিকের করোনা পজিটিভ আসে।
একইভাবে গত ২৮ জুলাই ২৯২ জন চীনা শ্রমিকের র্যামড্যাম করোনা পরীক্ষা করা হলে তাদের মধ্যে ৩৪ জন ও ১৩ জন দেশি শ্রমিকের মধ্যে ২ জনের করোনা পজিটিভ আসে।
এদিকে খনি শ্রমিকদের মাঝে ব্যাপকহারে করোনা ছড়িয়ে পড়ায় বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির চায়না ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিএমসি, এক্সএমসি কনসোটিয়াম কয়লা উত্তোলন সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন…আ. লীগের বঙ্গভবন ইউনিট কমিটির শীর্ষ পদে মাদক ব্যাবসায়ি ও জামাত কর্মী
বন্ধকালিন সময়ে ১৩০৬ নং নতুন ফেইজ (কূপ) অ্যাডজাস্টম্যাণ্ট চালু থাকবে। একইসাথে সকল খনি শ্রমিককে পুণরায় করোনা পরীক্ষা করানো হবে। তাদের করোনা পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ হলে তাদেরকে কাজে যোগদানের মধ্যদিয়ে কয়লা উত্তোলন শুরু করা হবে বলে জানান।
বড়পুুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম সরকার জানান, দীর্ঘ ৮৭ দিন পর গত বুধবার (২৭ জুলাই) কয়লা উত্তোলন শুরু হয়।
গত তিনদিন ঠিকঠাকভাবে কয়লা উত্তোলন হলেও ব্যাপকহারে করোনা ছড়িয়ে পড়লে শনিবার (৩০ জুলাই) থেকে কয়লা উত্তোলন সাময়িকভাবে বন্ধ করতে বলে চায়না ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিএমসি ও এক্সএমসি কনসোর্টিয়াম।
আরও পড়ুন…আওয়ামী লীগকে ভয় দেখিয়ে লাভ নেই: এনামুল হক শামীম
তবে এসময়ে করোনা ম্যানেজম্যাণ্ট এবং নতুন ফেইস (কূপ) অ্যাডজাস্টমেন্টের কাজ চলমান থাকবে। তিনি আরো জানান, খনিতে কমর্রত চীনা শ্রমিকরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, আগের মতো যারা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, তাদেরকে খনির বাইরে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে।
যারা আক্রান্তদের সংস্পর্শে ছিলেন তারাও খনির বাইরে চলে গেছেন। শিগগির যে সকল শ্রমিক বাইরে আছে, তাদেও করোনা পরীক্ষার মাধ্যমে খনিতে ফিরিয়ে আনা হবে।
আরও পড়ুন…কামরুল হত্যা মামলার আসামীদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন
উল্লেখ্য, চলতি বছরের গত ১ মে খনির ১৩১০ নম্বর ফেইজ (কুপ) থেকে কয়লা উত্তোলন শেষ হলে, ওই কুপটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়।
পরবর্তীতে পরিত্যক্ত ফেইজ থেকে নতুন ফেইজে যন্ত্রপাতি স্থানান্তর ও সংস্কার কাজ শেষ করে আগস্টের মাঝামাঝি খনির নতুন ১৩০৬ নম্বর ফেইজ থেকে কয়লা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে নির্ধারিত সময়ের ২০ দিন আগেই গত বুধবার (২৭ জুলাই) পরীক্ষামূলকভাবে উত্তোলন শুরু হয়।
কিন্তু করোনার কারনে তা গতকাল শনিবার (৩০ জুলাই) থেকে আবারো সাময়িক বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে এক শ্রমিক জানান, যদি করোনায় আক্রান্ত হয় তাদেরকে পর্বতীতে ফিরিয়ে আনা দাবি জানান শ্রমিকেরা। ইতি পূর্বে খনির শ্রমিকদেরকে নিয়ে খনি কর্তৃপক্ষ নানা রকম নাটক করেছেন, তা যে না হয়।
ইবাংলা/জেএন/৩০ জুলাই,২০২২