দেশে জ্বালানি তেলের দাম পার্শ্ববর্তী দেশের তুলনায় কম

নিজস্ব প্রতিবেদক

ল্যবৃদ্ধির পরও দেশে জ্বালানি তেলের দাম ভারতের সমান ও আশেপাশের অনেক দেশের তুলনায় কম জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামালের ৭৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী কেন্দ্র টিএসসি মিলনায়তনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা আয়োজিত ‘স্পর্ধিত তারুণ্যের প্রতিচ্ছবি শেখ কামাল’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সমসাময়িক প্রসঙ্গে তিনি এ কথা বলেন।

আরও পড়ুন…বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফরেন অফিস স্পাউসেস এসোসিয়েশনের শ্রদ্ধা নিবেদন

বক্তব্যের শুরুতেই মন্ত্রী শহীদ শেখ কামালের স্মৃতিচারণ করেন। তিনি বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল ছিলেন অনবদ্য ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সংগঠক। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, ততদিন শেখ কামাল প্রতিটি তরুণের অন্তরে তারুণ্যের শক্তি হয়ে বেঁচে থাকবেন।

ড. হাছান বলেন, সরকার গত অর্থবছরে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে ৫৩ হাজার কোটি টাকা বা প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলার ভর্তুকি দিয়েছে। আশেপাশের দেশগুলো এধরণের ভর্তুকি দেয়নি ফলে সেসব দেশে জ্বালানি তেলের মূল্য অনেক আগেই বাড়ানো হয়েছে এবং তাদের মূল্য আমাদের চেয়ে অনেক বেশি ছিল। পাশের দেশ ভারতে অনেক আগে থেকে ডিজেলের দাম বাংলাদেশি ১১৪ টাকা ও অকটেনের দাম ১৩৪-৩৫ টাকা। আমাদের দেশে মূল্য কম হওয়ায় সীমান্ত দিয়ে প্রচুর জ্বালানি তেল পাচার হয়ে যাচ্ছিল।

সরকারের পক্ষে অনির্দিষ্টকালের জন্য ভর্তুকি দেয়া সম্ভব নয় এবং বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্যের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণে আমাদের আজকে যে মূল্যবৃদ্ধি, আশেপাশের দেশগুলোতে বহু আগেই তারা জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে উল্লেখ করে পরিসংখ্যান তুলে ধরেন তথ্যমন্ত্রী।

আরও পড়ুন…জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি: দৈনন্দিন জীবনে পড়বে ব্যাপক প্রভাব

তিনি বলেন, বাংলাদেশে মূল্যবৃদ্ধির পর ডিজেলের দাম এখন প্রতি লিটারে ১১৪ টাকা, এ দেশি মুদ্রামানে ভারতের কলকাতায় ১১৪ টাকা, সর্বভারতীয় মূল্য ১১২ টাকা, চীনে ১১৮ টাকা, জ্বালানি রপ্তানিকারী দেশ আরব-আমিরাতে লিটারপ্রতি ডিজেলের দাম ১২৩ টাকা, নেপাল ১২৭.৮২ টাকা, ইন্দোনেশিয়ায় ১৩৮.২৪ টাকা, সিঙ্গাপুরে ১৮৯.৭৮ টাকা , হংকংয়ে ২৬০.৭৫ টাকা। অর্থাৎ আমাদের দেশে মূল্য সমন্বয়ের পরও আশেপাশের এসব দেশের চেয়ে মূল্য কম ও ভারতের সমান রয়েছে।

পরিবহন খাতে জ্বালানি মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবের বিষয়ে ড. হাছান বলেন, একটি ৫০ সিটের বাসে ৭০% যাত্রী থাকলে প্রতি কিলোমিটারে মূল্যবৃদ্ধি ঘটবে মাত্র ২৯ পয়সা। এখন যাত্রীপ্রতি কিলোমিটারে ১ টাকা ৮০ পয়সা ভাড়া নেয়া হয়, এখন ২৯ পয়সা বেড়ে হবে ২ টাকা ৯ পয়সা। সরকার শিঘ্রই পরিবহন খাতের সবাইকে নিয়ে বসবে যাতে কেউ অন্যায় সুযোগ না নিতে পারে। মন্ত্রী এসময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদেরকে এবিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঠিক তথ্য নিয়ে সরব হওয়ার আহবান জানান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ এবং যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন। বিশেষ বক্তা ছিলেন ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।

আরও পড়ুন…চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে

এদিন বিকেলে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী জাতীয় শোক দিবসকে সামনে রেখে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিট কমান্ড আয়োজিত আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হাজার বছরের ঘুমন্ত বাঙালির হৃদয়ে জাতিসত্তার চেতনা জাগ্রত করে মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়ে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ রচনা করেছেন এবং দেশকে একটি উন্নত সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত করার লক্ষ্যে কাজ করে গেছেন, অকাতরে নিজের জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন। এজন্যই তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি এবং আমাদের জাতির পিতা। শুধু তাই নয়, তিনি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ নেতাদের মধ্যে অনন্য।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যাকারীরা শুধু তাকে নয়, আমাদের স্বাধীনতাকে হত্যা করতে চেয়েছিল উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আজ বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত করছেন। আমাদের সবাইকে বঙ্গবন্ধুকন্যার সাথে ঐক্যবদ্ধ ও কর্মপ্রাণ থাকতে হবে।

আরও পড়ুন…শাহজালালে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্বাগত (ভিডিও)

চট্টগ্রাম মুক্তিযোদ্ধা সংসদের চেয়ারম্যান মোজাফফর আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়শা খান এমপি প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহকাহান, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব সভাপতি আলী আব্বাস ও সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ।

ইবাংলা/জেএন/৬ আগস্ট,২০২২

তুলনায় কম