সৎমা ও এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে পিতাকে গুম করার অভিযোগ তুলে নিখোঁজ পিতার সন্ধানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) এক শিক্ষার্থী সংবাদ সম্মেলন করেছেন। শনিবার (১৩ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সাবিত সিয়াম সংবাদ সম্মেলনে তার পিতা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড অবসরপ্রাপ্ত সহকারী সচিব মোঃ সোলায়মান আলী তালুকদারকে উদ্ধারের আহ্বান জানান।
লিখিত বক্তব্যে সিয়াম দাবি করেন, ২০২০ সালের ২২ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লা থেকে গুম করা হয় তার পিতাকে। মাসুদ মোল্লার নামে যাত্রাবাড়ীর এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে প্রতারণা, সৎমার বিরুদ্ধে পিতাকে নির্যাতন ও পিবিআই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রভাবিত হয়ে রিপোর্ট করার অভিযোগ করেন তিনি।
আরও পড়ুন…স্বপ্ন ছুঁতে অদম্য তারা
তিনি বলেন, ‘চাকুরী থেকে অবসরে যাওয়ার সময় বাবা একটি ফ্ল্যাট বন্ধক নেওয়ার জন্য মাসুদ মোল্লার সাথে পরিচয় হয়। মাসুদ আলম মোল্লা যাত্রাবাড়ীর একজন অসাধু প্রকৃতীর লোক। মাসুদ আলম মোল্লা বাবার লালবাগের বাসায় যাতায়াত করতো।
মাসুদ আলম মোল্লা বাবার নিকট থেকে ৫,০০,০০০/- (পাঁচ লক্ষ) টাকা নিয়ে ফ্ল্যাট বন্ধকের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়। কিছুদিন পর মাসুদ প্রস্তাব দেন পিতার পেনশনের টাকা তাকে দিলে সে আরও ভালোভাবে ব্যবসা করতে পারতো। এজন্য ৩৭,০০,০০০/- (সাইত্রিশ লক্ষ) টাকা সুচতুরভাবে বাবার কাছ থেকে ধার নেয়।
সম্পূর্ণ টাকা পাওয়ার পর বাবাকে ফ্ল্যাট থেকে বেদখল করে। অতপর বাবা টাকা ফেরত চাইলে মাসুদ মোল্লা ইসলামি ব্যাংক লিঃ এর চেক বই (চেক নং- এমসিই ১২২১৯৫৬) দ্বারা ১২,০০,০০০/ (বার লক্ষ) টাকা এবং উত্তরা ব্যাংক লিঃ এর চেক বই (চেক নং- ৭৪৯৩৫৬৭) দ্বারা ১৭,০০,০০০/- (সতের লক্ষ) টাকার দুটি ভূয়া চেক প্রদান করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই বিষয়ে বাবা আইনি সহায়তার জন্য যাত্রাবাড়ী থানায় দ্বারস্থ হন এবং বাবা ২০২০ সালের ৭জুন ৪১৫ নং জিডি দায়ের করেন। পরবর্তী সময়ে আমার বড় ভাই সাকিব তালুকদার একই মাসের ২২ তারিখ ১৩০৮ নং জিডি করেন।
পিতার এই দুঃসময়ে সত্মা মাহফুজা বেগম তাকে বাসা থেকে বের করে দেয়। অসুস্থ পিতাকে নিয়ে আমি মিরপুরের বাসায় সুস্থ রাখার চেষ্টা করি। পিতার যেই সময় একা বাসায় থাকতো, সেই সময় মাহফুজা বেগম বাসায় এসে নির্যাতন চালাতো। এমতাবস্থায় বাবা সত্মা মাহফুজা বেগমকে তালাক দেন।
আরও পড়ুন…সারাদেশের সমাবেশে চা শ্রমিকরা অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করার হুসিয়ারী
এ বিষয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে মাহফুজা বেগম কৌশলে সৎ বোন ফারিয়া তালুকদার দ্বারা বাবাকে নারায়ণগঞ্জ নিয়ে নির্যাতন চালান এবং ওই বছর ২২ ডিসেম্বর মাহফুজা বেগম ফতুল্লা থানায় যান। ২৩ ডিসেম্বর নিজেকে রক্ষার জন্য ১২৯৯ নং জিডি করেন। আমার পিতাকে উদ্ধারের উদ্দেশ্যে থানায় মামলা করতে চাইলে আমাদের মামলায় ফাসানোর হুমকি দেন মাহফুজা বেগম। করোনাকালীন সময়ে বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যায়।’
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ কোর্টে আমি নিজে বাদী হয়ে ২৭৩/২১ নং মামলা দায়ের করি। বিষয়টি পিবিআই নারায়ণগঞ্জকে দায়িত্ব দিলে আইও আসামী কর্তৃক প্রভাবিত হয় এবং আমার পিতা পাগল হয়ে হারিয়ে গিয়েছে বলে রিপোর্ট করে। কিন্তু আমার পিতা পঙ্গু অবস্থায় করোনাকালীন এ সময়ে কি করে হারিয়ে যায়। সব ঘটনা শুনে, দেখে আমরা নিশ্চিত হলাম তাকে গুম করা হয়েছে।
ইবাংলা/জেএন/১৪ আগস্ট,২০২২