বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের ডাক্তার হলেও পরিচয় দেওয়া যাবে না

 বরগুনা  প্রতিনিধি:

বরগুনায় মিথ্যা জখমি সার্টিফিকেট দেওয়ার অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় ডাক্তার নিহার রঞ্জন বৈদ্যের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে ডাক্তার পরিচয় না দেওয়ার জন্য মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল। ডাক্তার নিহার রঞ্জন বৈদ্য বরগুনা সদর হাসপাতালে মেডিকেল অফিসার হিসাবে দায়িত্বরত আছেন।

জানা যায়, ওই ডাক্তার দেড় বছর আগে বরিশালের গৌরনদী হাসপাতালে থাকাকালিন সময় লক্ষন বৈদ্য নামের এক রোগীকে না দেখে গুরুতর জখম না থাকা সত্ত্বেও তিনি মিথ্যা ডাক্তারী সনদ প্রদান করেন ডাক্তার নিহার রঞ্জন বৈদ্য। এক অভিযোগের ভিত্তিতে বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের তদন্তে প্রতীয়মান হয় তাঁর প্রদত্ত ডাক্তারী সনদ মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত ছিল।

আরও পড়ুন…তারেক কানেকশন : আওয়ামী লীগে ভর করে হাশেম রেজার অস্বাভাবিক উত্থান

মঙ্গলবার ওই প্রতিষ্ঠান এক বিজ্ঞপ্তিতে সকলের অবগতির জন্য জানান, ডা: নীহার রঞ্জন বৈদ্য, (কোড নং : ১২০৩৬০), ইমারজেন্সি মেডিকেল অফিসার, ১০০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতাল, বরগুনায় কর্মরত। তিনি লক্ষন বৈদ্য নামের একজন রোগীকে গুরুতর জখম না থাকা সত্ত্বেও মিথ্যা ডাক্তারী সনদ প্রদান করেন।

বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল এর তদন্তে প্রতীয়মান হয় তাঁর প্রদত্ত ডাক্তারী সনদ মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত ছিল। বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল আইন, ২০১০ (৬১ নং আইন) এর ২৩ (১) ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে বিএমএন্ডডিসি হতে প্রদত্ত তাঁর রেজিষ্ট্রেশন (A-45464, Date of Registration : 3rd June, 2007) ২৩ আগস্ট হতে ০৬ (ছয়) মাসের জন্য স্থগিত করা হল।

উল্লেখিত সময়ে বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল আইন, ২০১০ (৬১ নং আইন) এর ধারা ২২ (১) অনুযায়ী তিনি ( নিহার রঞ্জন বৈদ্য) কোথাও কোনরূপ চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে পারবেন না । এমনকি উক্ত সময়ে তিনি নিজেকে চিকিৎসক হিসাবে পরিচয় দিতে পারবেন না। ডাঃ মোঃ লিয়াকত হোসেন রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল এর স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তি জনস্বার্থে প্রকাশ করলে বরগুনায় ডাক্তার নিহার রঞ্জন বৈদ্যকে নিয়ে কৌতুহল সৃস্টি হয়।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ডাক্তার নিহার রঞ্জন বৈদ্যর বক্তব্য নিতে চাইলে তাকে একাধিক বার ফোন করে পাওয়া যায়নি।ডাক্তার নিহার রঞ্জন বৈদ্য দেড় বছর আগে বরগুনা সদর হাসপাতালে যোগদান করে এখানেও সার্টিফিকেট ব্যবসা শুরু করেন। টাকা দিলেই সাধারণ জখম হলে মারাত্মক জখমের সার্টিফিকেট দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।

আরও পড়ুন…আওয়ামী লীগের আগামী দিন পতনের দিন, আগামী সময় দুঃসময় : বিএনপির

একটি সুত্র জানান, ডাক্তার নিহার রঞ্জন বৈদ্য বরগুনা সদর হাসপাতালে নাইট ডিউটি করার সময় নেশা করেন। এক বছর আগে নেশার ভিডিও ভাইরাল হয়। মেডিকেল সার্টিফিকেট আদালতে দাখিল করার পরে কোর্টের আদেশ না থাকা সত্বেও তিনি টাকার বিনিময় নিজের দেওয়া মেডিকেল সার্টিফিকেট রিভাইজ করেন। সূক্ষ্ম চলের আঘাত মারাত্মক গুরুতর আঘাতের সার্টিফিকেট দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।

এ বিষয়ে বরগুনা সদর হাসপাতালের তত্বাবদায়ক ডাক্তার সোহরাফ হোসেন বলেন, আমি যত টুকু জানি ডাক্তার নিহার রঞ্জন বৈদ্যকে মন্ত্রনালয় মাফ করে দিয়েছে। আমার নিকট কোন নির্দেশনা নেই। তবে আজকে নাইট ডিউটি করার পরে তাঁকে বাদ দিয়ে দেব। নিহার রঞ্জন বৈদ্য নাইট ডিউটির সময় নেশা করতেন। চেইন স্মকার। রোগীদের সামনে সব সময় সিগারেট খায়। তিনি আরো বলেন, আগে খারাপ ছিল। এখন এতটা খারাপ নেই। অনেকটা ভাল হয়েছে।

ইবাংলা/জেএন/২৩ আগস্ট,২০২২

পরিচয় দেওয়া যাবে না