ফৌজদারি মামলায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গ্রেফতারে সরকারের পূর্বানুমতি নেওয়ার বিধান বাতিল করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, সরকারি কর্মচারীদের গ্রেফতারে পূর্বানুমতির বিধান বেআইনি, সংবিধান পরিপন্থি ও মৌলিক অধিকার পরিপন্থি।
বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) সকালে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আরও পড়ুন…
রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, সরকারি কর্মচারী আইনের ৪১ ধারা মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। তাই এটি বাতিল করা হয়েছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একটি মামলার তদন্ত শেষ হতে দীর্ঘ সময় লাগে। এমন পরিস্থিতিতে সরকারি কর্মচারীদের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ ও গ্রেফতার করতে যদি পূর্ব অনুমতি প্রয়োজন হয় তবে সেটি মামলার তদন্ত কাজকে আরো বেশি দীর্ঘায়িত করবে। যা কখনোই ন্যায় বিচারসম্মত নয় বলে জানান আদালত।
এর আগে বুধবার ফৌজদারি মামলায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেফতার করতে সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি নেওয়ার প্রশ্নে জারি করা রুলের শুনানি শেষ হয়। পরে আদালত রায়ের জন্য বৃহস্পতিবার ধার্য করেন।
২০১৮ সালের নভেম্বরে সরকারি চাকরি আইন প্রণয়ন করা হয়। ২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে একই বছরের ১ অক্টোবর থেকে আইনটি কার্যকর হয়।
আরও পড়ুন…বিএনপির নির্বাচনে আসার কারণ জানালেন ওবায়দুল কাদের
এ অবস্থায় সরকারি কর্মচারীদের বিশেষ সুবিধাসংক্রান্ত আইনের ৪১ (১) ধারাটি সংবিধানের কয়েকটি অনুচ্ছেদের পরিপন্থী উল্লেখ করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে ২০১৯ সালের ১৪ অক্টোবর হাইকোর্টে একটি রিট করা হয়।
রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৯ সালের ২১ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল দেন। রুলে সরকারি চাকরি আইনের ৪১ (১) ধারাটি কেন সংবিধানের কয়েকটি অনুচ্ছেদের পরিপন্থী ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। এ রুলের ওপর গতকাল বুধবার শুনানি শেষে রায় দেওয়া হলো।
গত বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর সরকারি কর্মচারীদের গ্রেফতারে সরকারের পূর্বানুমতি নেওয়ার বিধান কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। সে রুল বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট।
রায়ে হাইকোর্ট বলেন, সংবিধানের ২৬ এর ১ ও ২ এবং ২৭ ও ৩১ অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করে এ বিধান। এ রায়ের ফলে এখন থেকে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের গ্রেফতার করতে কোনো অনুমতি লাগবেনা। মন্ত্রিপরিষদ যে প্রজ্ঞাপন দেয় তা অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্ট।
ইবাংলা/জেএন/২৫ আগস্ট,২০২২