মিডিয়া কাভারেজ পেতে বিএনপি আন্দোলনে আসে

নিজস্ব প্রতিবেদক

মিডিয়া কাভারেজ পেতে বিএনপি আন্দোলনে সিচুয়েশন তৈরি করে বলে দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, হ্যাঁ- আমি শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করলে কাউকে কিছু না বলার জন্য বলেছি। পুলিশকে বলেছি কিছু না বলার জন্য; এটা ঠিক। কিন্তু পুলিশ তো আগ বাড়িয়ে কিছু করেনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে বিএনপি-জামায়াত জোটের নৃশংসতার অডিও-ভিজ্যুয়াল ও ছবি দেখিয়ে জানতে চেয়েছেন, ন্যূনতম মানবতা আছে এমন মানুষ কিভাবে বিএনপিকে সমর্থন করতে পারে। তিনি বলেন,‘আপনারা (আইন প্রণেতারা) বিএনপির শাসনামলের ছবি দেখেছেন। তাহলে বলুন, যাদের ন্যূনতম মানবিকতা আছে তারা কীভাবে বিএনপিকে সমর্থন করেন? তাদের সাথে হাত মেলাবেন কিভাবে? এটা আমার প্রশ্ন?’ সংসদের এই অধিবেশনে তাঁর সমাপনী ভাষণ দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী এই প্রশ্ন তোলেন।

আরও পড়ুন…মিয়ানমার নিয়ে সতর্ক বাংলাদেশ, অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নির্দেশনা

বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) একাদশ জাতীয় সংসদের ১৯তম অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। শেখ হাসিনা আরও বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনের পর বিএনপি-জামায়াত জোট কর্তৃক সংঘটিত বর্বরতা ও নির্যাতনের এই কয়েকটি ঘটনা আমি তাদের দেখাতে পেরেছি।

তিনি বলেন,‘এই ভিডিও এবং ছবির মত, শত শত ঘটনা আছে। এটা বিএনপি এবং বিএনপি-জামায়াত জোটের শাসনের বাস্তব চিত্র যে তারা কিভাবে ১৯৭৫ সাল থেকে মানুষকে নির্যাতন ও হত্যা করেছে।’ ।হাউজে তিনি জেনারেল জিয়ার সশ¯্র বাহিনীর সদস্যদের হত্যা, গুম, খুন এবং জেনারেল এরশাদের শাসনামলে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী নির্যাতনের ভিডিও এবং স্থির চিত্রও তুলে ধরেন।

প্রধানমন্ত্রী সংসদের সমাপনী অধিবেশনে আরও বলেন, ‘পুলিশ যদি আক্রান্ত হয় তার নিজেকে বাঁচাবার অধিকার আছে। সেটা কি নাই? না পুলিশ হলে তার আক্রান্ত হলেও তার নিজেকে রক্ষা করার কোনো অধিকার থাকবে না? আমি তো আন্দোলন করার কথা বলেছি। মিছিল করেন, আন্দোলন করেন, কিন্তু শান্তিপূর্ণভাবে করেন। কেউ কিছু বলবে না। যেখানে শান্তিপূর্ণভাবে হচ্ছে সেখানে তো কেউ কিছু বলছে না।’

বিএনপিদলীয় সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা বিএনপির ওপর হামলার তথ্য তুলে ধরে সরকারের কড়া সমালোচনা করেন। জবাবে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, রুমিন ফারহানা বলে গেল খুব খারাপ নাকি অবস্থা। ভোলার ঘটনা নিয়ে চিৎকার চেঁচামেচি করে গেল, প্রতিবাদ করে গেছে। বাংলাদেশে কী হতো? ৭৫-এ জাতির পিতাকে হত্যা করা হলো, খুনিদের আরও উৎসাহিত করা হলো। বিচারের হাত থেকে রেহাই দেওয়া হলো।

বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, তাদের কথা শুনে মনে হয় তারা বোমা ছুড়বে, লাঠি মারবে, ঢিল মারবে, গুলি করবে। সব করবে। তাদের কিছু বলা যাবে না। আমি তো আন্দোলন করার কথা বলেছি, মিছিল করেন, আন্দোলন করেন। শান্তিপূর্ণভাবে করলে কেউ কিছু বলবে না। যেখানে শান্তিপূর্ণভাবে হচ্ছে সেখানে তো কেউ কিছু বলছে না। কিন্তু এরা তো মাঠে নেমেই আগে কোথায় কাকে আক্রমণ করবে, কীভাবে একটা সিচুয়েশন তৈরি করবে।

আরও পড়ুন…গন্ডগোলের পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছে বিএনপি

হ্যাঁ- এটা করে, একটা কারণ আছে। কারণ হলো এমনি মিছিল করলে তো মিডিয়া কাভারেজ পাবে না। মিডিয়াতে কাভারেজ করার জন্যই তারা এমন ঘটনা ঘটায়। তিনি বলেন, এখন গুম, খুন হত্যা নিয়ে কথা হয়। বাংলাদেশে ৭৫-এর পর কী ঘটেছে। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর বরিশালের আগৈলঝাড়া গৌরনদী থেকে ২৫ হাজার লোক টুঙ্গিপাড়ায় আশ্রয় নিয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ডিজেল বেশি দামে কিনে অল্পমূল্যে দিচ্ছি। প্রত্যেকটা খাতে আমরা দিচ্ছি, কারণ কৃষক উৎপাদনটা বাড়াবে। দুই কোটি কৃষক উপকারভোগী কার্ড পায়। অর্থনীতির প্রত্যেকটা খাতে ভর্তুকি দিচ্ছি। যারা সাধারণ মানুষ তাদের জন্য। যারা উচ্চবিত্ত তারা হয়ত একটু অখুশি হতে পারেন। সাধারণ মানুষের যাতে কষ্ট না হয় সেদিকেই বেশি দৃষ্টি দিয়ে থাকি, এটাই আমার নীতি এবং সেটাই আমি করে যাচ্ছি। হতাশাব্যঞ্জক কথা ছড়িয়ে মানুষের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়ানো সেটা মোটেই সমুচিত না।

ইবাংলা/টিএইচকে/১সেপ্টেম্বর,২০২২

আন্দোলনেসিচুয়েশন তৈরি করে