টি২০ বিশ্বকাপ খেলতে রোববার রাতে ওমান যাচ্ছে মাহমুদউল্লাহরা। মাসকটের কন্ডিশনিং ক্যাম্প ও বিশ্বকাপ মিশন মিলিয়ে প্রায় দেড় মাসের সফর টাইগারদের। বাংলাদেশ বিমানের চার্টার্ড ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে এদিন রাত পৌঁনে ১১টায় মাসকটের উদ্দেশে দেশ ছাড়বেন মাহমুদুল্লাহরা।
মাসকটে এক দিনের কোয়ারেন্টাইন শেষ করে কন্ডিশনিং ক্যাম্পের অনুশীলন হবে চার দিন। বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশন শুরু হবে ১৭ অক্টোবর স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে কোয়ারিফাইং রাউন্ডের ম্যাচ দিয়ে।
টাইগারদের এবারের বিশ্বকাপযাত্রা একটু ব্যতিক্রম। করোনার কারণে অনেকটা অনাড়ম্বর। বিশ্বকাপ দলের ফটোসেশন নেই। মিডিয়া ব্রিফিংও হবে না ঘটা করে।
মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে স্পন্সর প্রতিষ্ঠানের জন্য শুক্রবার রুদ্ধদ্বার যে ‘ফটোশুট’ হলো, খেলোয়াড়দের সে আলোকচিত্রগুলো এখনও প্রচারের আলোয় আসেনি।
বিসিবির মিডিয়া ম্যানেজার রাবীদ ইমাম শনিবার জানান, বিমানবন্দরে সবাইকে একসঙ্গে জড়ো করে একটি ছবি তোলা গেলে মিডিয়া গ্রুপে পাঠিয়ে দেবেন। অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ বা দলের প্রতিনিধি হয়ে খেলোয়াড়দের কেউ একজন কথা বলবেন- সেই ভিডিও বার্তাও পাওয়া যাবে। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের এমন বিশ্বকাপযাত্রা আগে কখনও দেখেনি মানুষ। ক্রিকেটাররাও অতীতে কোনো বিশ্বকাপে এভাবে যাননি। নিউ নরমাল সময়ে সব মিলিয়ে এ যেন অদ্ভুত এক বিশ্বকাপযাত্রার সাক্ষী হতে চলেছে দেশ।
করোনা শুধু মানবপ্রাণই নয়, উৎসবের উপলক্ষটুকুও কেড়ে নিয়েছে। মহাকালের ইতিহাসে নিশ্চয়ই লেখা থাকবে বাংলাদেশ দলের উৎসবহীন একটি বিশ্বকাপযাত্রার কাহিনি। মানুষের ছোঁয়া বাঁচিয়ে, জনসমাগম এড়িয়ে, মুখোশ পরে টি২০ বিশ্বকাপ স্কোয়াডের খেলোয়াড়দের সন্ধ্যায় পৌঁছাতে বলা হয়েছে বিমানবন্দরে। এই প্রত্যাগমন যতই অনাড়ম্বর হোক, টাইগারদের সঙ্গে থাকছে ১৬ কোটি মানুষের শুভকামনা। তাদের যাত্রা উপলক্ষে ঘরে ঘরে মঙ্গল প্রদীপ না জ্বললেও খেলোয়াড়দের পথ দেখাবে স্বপ্নের আলোর মিছিল।
বাছাই রাউন্ড খেলতে হওয়ায় বাংলাদেশ দল বিশ্বকাপ মিশন শুরু করবে ওমান থেকে। বাংলাদেশ, স্কটল্যান্ড, ওমান ও পাপুয়া নিউগিনিকে নিয়ে ‘বি’ গ্রুপের ম্যাচগুলো হবে মাসকটে ১৭ থেকে ২১ অক্টোবর। মাহমুদুল্লাহদের আগেভাগে বিশ্বকাপযাত্রার কারণ কন্ডিশনিং ক্যাম্প। মরুর দেশে মানিয়ে নিতে মাসকটে পাঁচ দিনের একটি কন্ডিশনিং ক্যাম্পের ব্যবস্থা করেছে বিসিবি। ৫ থেকে ৮ এই চার দিন হবে অনুশীলন। ৭ ও ৮ অক্টোবর ওমান ‘এ’ দলের বিপক্ষে দুটি গা গরমের ম্যাচ খেলার কথা রয়েছে বিশ্বকাপ ভেন্যুতে। কন্ডিশনিং এই ক্যাম্প পরিচালিত হবে বিসিবির টাকায়। টি২০ বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডের আটটি দল আইসিসির তত্ত্বাবধানে হোটেলে উঠবে ৯ অক্টোবর।
আইসিসির অফিসিয়াল দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে মাহমুদুল্লাহরা এদিন ওমান থেকে আরব আমিরাতে পাড়ি জমাবেন। আইপিএল খেলতে আমিরাতে থাকা সাকিব আল হাসান ও মুস্তাফিজুর রহমান দলের সঙ্গে যোগ দেবেন আবুধাবিতে। ১০ অক্টোবর কোয়ারেন্টাইনে থেকে পরদিন দলীয় অনুশীলন ১৭ ক্রিকেটারের। ১২ তারিখ শ্রীলঙ্কা আর ১৪ তারিখ আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দুটি ম্যাচ খেলে মাহমুদুল্লাহরা আবার যাবেন মাসকটে প্রথম রাউন্ডের ম্যাচ খেলতে।
ক্রিকেটারদের মাসকটে পৌঁছে দিতে আস্ত একটি বিমান ভাড়া করলেও পুরো দল একসঙ্গে যাচ্ছে না। আইপিএলে থাকায় সাকিব-মুস্তাফিজ ওমানের কন্ডিশনিং ক্যাম্পে থাকছেন না। ছুটিতে থাকা বিদেশি কোচিং স্টাফের সদস্যরা সরাসরি মাসকটে টিম হোটেল সাংগ্রি-লায় যোগ দেবেন। ২৪ ঘণ্টার কোয়ারেন্টাইন শেষ হলে কোচদের সঙ্গে দেখা হবে ক্রিকেটারদের। মূলত দেশ থেকে ক্রিকেটারদের নিয়ে যাচ্ছেন ম্যানেজার সাব্বির খান। নির্বাচক হাবিবুল বাশার ও মিডিয়া ম্যানেজার রাবীদ ইমাম দলের সঙ্গে যাবেন। প্রস্তুতি পর্বের আনুষ্ঠানিকতা শেষে করে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করবেন টাইগাররা। বাংলাদেশের বিশ্বকাপ শুরু ১৭ অক্টোবর স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। ১৯ অক্টোবরের প্রতিপক্ষ স্বাগতিক ওমান। টাইগাররা বাছাই পর্বের শেষ ম্যাচটি খেলবে পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে ২১ অক্টোবর।
এই গ্রুপ থেকে দুটি দল উন্নীত হবে সুপার টুয়েলভে। বাংলাদেশ কোয়ালিফাই করলে গ্রুপের এক নম্বর হিসেবে সুপার টুয়েলভে খেলবে গ্রুপ টুতে ভারত, পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে।