যশোর: যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষার সনদপত্র নিয়ে বিপাকে পড়েছে কর্তৃপক্ষ। সনদপত্রে ইংরেজিতে ‘হাইয়ার’ শব্দের বানান ভুলের কারণে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। প্রায় এক লাখ ২৬ হাজার সনদে এই ভুল হয়েছে। ফলে সময় মতো সনদপত্র পাবেন না শিক্ষার্থীরা।
এদিকে এই ভুল সংশোধন করে নতুন সনদপত্র ছাপতে শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষকে গুনতে হবে প্রায় সোয়া কোটি টাকা। তবে বোর্ড কর্তৃপক্ষ বলছে, ক্ষতির দায়ভার বোর্ড কর্তৃপক্ষ নেবে না, যার বা যাদের দায়িত্বে অবহেলার কারণে এ ভুল হয়েছে, দায়টা তারাই বহন করবে।
আরও পড়ুন…রাজধানীর নয়াপল্টনে সমাবেশ করছে বিএনপি , তীব্র যানজট
শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা যায়, যশোর শিক্ষা বোর্ড থেকে এসএসসি বা এইচএসসি পরীক্ষার যে সনদপত্র বা সার্টিফিকেট দেওয়া হয়, তার কাগজ কেনা হয় সাধারণত অস্ট্রেলিয়া থেকে।
কোটেশনের মাধ্যমে কাগজ কেনার পর সরকার নিয়ন্ত্রিত সিকিউরিটি প্রিন্টিং প্রেস থেকে বোর্ডের মনোগ্রাম, তার নিচে বড় অক্ষরে শিক্ষা বোর্ডের ও পরীক্ষার সালসহ নাম ছাপানো হয়। এর নিচের অংশ ছাপা হয় শিক্ষা বোডের্র কম্পিউটার বিভাগ থেকে। সেখানে শিক্ষার্থীর নাম, পিতা-মাতার নাম, কেন্দ্রের নাম ও নম্বর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম, প্রাপ্ত জিপিএসহ পরীক্ষার নাম এবং ফল প্রকাশের তারিখসহ অন্যান্য বিষয়গুলো ছাপা হয়।
আরও পড়ুন…বিসিএল টুর্নামেন্টের আলোচনায় মাঠ
নিচের অংশ ছাপানোর জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতির পর একটি নমুনা সনদপত্র তৈরি করা হয়। ওই নমুনা ছেপে সংশোধনের জন্য পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ বিভাগসহ সংশোধনের দায়িত্ব প্রাপ্তদের কাছে পাঠানো হয়। এরপর পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক চূড়ান্ত করলে ছাপার কাজ শুরু হয়।
তদ্রুপ ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ক্ষেত্রে এ সকল পদ্ধতি অনুসরণ করার পরও সনদপত্রের নিচের অংশে রোল নম্বরের পর যেখানে পরীক্ষার নাম লেখা হয়েছে, সেখানে ‘Higher’ (উচ্চ) শব্দটি ভুল বানানে ‘Highre’ লেখা থাকা অবস্থায় এক লাখ ২৫ হাজার ৭৪১টি সনদ ছাপানো হয়েছে। পরে সনদপত্রের ভুল পর্যবেক্ষণ ও নিরীক্ষণ করার সময় বানানের ভুলটি ধরা পড়ে।
এ বিষয়ে যশোর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মাধব চন্দ্র রুদ্র সনদপত্রে ভুলের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, যে কোনোভাবে ভুল রয়ে গেছে। এই সার্টিফিকেট দেওয়া হবে কিনা তা এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ২০২১ সালে পাস করা এক লাখ ২৫ হাজার ৭৪১ জন শিক্ষার্থীর জন্যে এই সার্টিফিকেট তৈরি করা হয়েছে।
যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আহসান হাবীব বলেন, এর দায় বোর্ড নেবে না। তদন্ত করা হবে। এ ভুল যে বা যাদের কারণে হয়েছে প্রত্যেককে এর দায় বহন করতে হবে, বোর্ড কোনো আর্থিক ক্ষতির শিকার হবে না।
তিনি আরও জানান, শিক্ষার্থীদের নির্ভুল সনদপত্র দেওয়ার চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে। এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে সনদপত্র পেতে শিক্ষার্থীদের কিছুটা দেরি হলেও তারা ক্ষতিগ্রস্ত হোক তা চাই না।
আরও পড়ুন…টাঙ্গাইলে বাসচাপায় স্বামী-স্ত্রী নিহত
শিক্ষাবোর্ডের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, একটি সনদপত্র তৈরিসহ শিক্ষার্থীর হাতে পৌঁছাতে বোর্ডের ব্যয় হয় ৮৯ টাকা। এ হিসেবে ১ লাখ ২৫ হাজার ৭৪১টি সনদপত্রের জন্য যশোর শিক্ষাবোর্ডের ব্যয় ১ কোটি ১১ লাখ ৯০ হাজার ৯৪৫ টাকা।
ইবাংলা/জেএন/১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২