১৮ সেপ্টেম্বর চীন সময় বিকাল ৫টা ৪৭ মিনিটে প্রায় ৫ ঘন্টার স্পেস ওয়াকের পর চীনের শেনচৌ ১৪ নং নভোচারী ছেন তুং, লিউ ইয়াং ও ছাই সুই চ্য মহাকাশ স্টেশনের বাইরে সব নির্ধারিত কর্তব্য সম্পন্ন করেছেন। নভোচারী ছেন তুং ও ছাই সুই চ্য নিরাপদে ওয়েনথিয়ান পরীক্ষা মডিউলে ফিরে এসেছেন। মহাকাশ স্টেশনের বাইরে চীনা নভোচারীর সব কার্যক্রম সফল হয়েছে।
চীন সময় রোববার দুপুর ১টা ৩৫ মিনিটে নভোচারী ছাই সুই চ্য ওয়েন থিয়ান পরীক্ষা মডিউলের হ্যাচ দরজা খুলে বাইরে বের হন। এটা তাঁর প্রথম স্পেস ওয়াক।
আরও পড়ুন…চীনা প্রযুক্তি দিয়ে আফ্রিকায় স্থানীয়দের জীবিকা উন্নয়নে সহায়তা
নভোচারী মডিউলের বাইরে মহাকাশে যথাক্রমে মডিউলের বুস্টার হ্যান্ডেল ইন্সটলেশন (Booster handle installation), মডিউলের বাইরে মহাকাশে উদ্ধার কাজের পরীক্ষা ইত্যাদি কাজ সম্পন্ন করেন। পুরো প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সফল হয়েছে। যা আবারও নভোচারী এবং ক্ষুদ্র মেশিন আর্মের সমন্বিত কাজ করার সামর্থ্য যাচাই করেছে, ওয়েনথিয়ান পরীক্ষা মডিউল এবং মহাকাশে সংশ্লিষ্ট যন্ত্রের অবস্থা যাচাই করা হয়েছে।
চীনের মানববাহী মহাকাশ প্রকল্পের নভোচারী সিস্টেমের প্রধান ডিজাইনার হুয়াং ওয়েই ফেন জানান, শেনচৌ ১৪নং নভোচারীরা চমতৎকারভাবে তাদের কর্তব্য সম্পন্ন করেছেন। তিনি বলেন, মহাকাশে নভোচারীদের প্রথম স্পেস ওয়াকের পর সংশ্লিষ্ট কর্মদল সময়মত এবং দ্রুত প্রথম স্পেস ওয়ার্ক পর্যালোচনা করেছে এবং এই কর্তব্যকে আরো সুসংহত করেছে। বিভিন্ন প্রোগ্রামের ডিজাইন আরো সুনির্দিষ্টভাবে হচ্ছে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন পক্ষ নিখুঁতভাবে সহযোগিতা করেছে। কেবিনের বাইরে কাজের দক্ষতা অনেক বেড়েছে।
এবারের স্পেস ওয়াক দু’টি রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। একটি হল প্রথমবারের মত ওয়েনথিয়ান পরীক্ষামূলক মডিউলের বাইরে বুস্টার হ্যান্ডেল ইন্সটলেশন করেছে এবং প্রথমবারের মত কেবিনের বাইরে উদ্ধারকাজ যাচাই করা হয়েছে।
কেবিনের বাইরে বুস্টার হ্যান্ডেল আকস্মিক অবস্থায় ব্যবহৃত একটি যন্ত্র।যা নভোচারীদের মহাকাশে নিরাপত্তামূলক একটি ব্যবস্থা। ইন্সটলেশনের পর নভোচারী কেবিনের বাইরে থেকে সহজে কেবিনের দরজা খুলতে পারেন। চীনের মহাকাশ প্রযুক্তি একাডেমির মহাকাশ স্টেশন ব্যবস্থার উপ-প্রধান ডিজাইনার চু কুয়াং ছেন জানান, কেবিনের বাইরে থেকে দরজা খোলার ব্যবস্থা স্থাপনের উদ্দেশ্য হল আকস্মিক প্রয়োজনে বিশেষ চাহিদা পূরণ করা।
আরও পড়ুন… ঘুমের ঔষধ না দেয়ায় ফার্মেসীর মালিককে পেটালেন ক্রেতা
কেবিনের বাইরে উদ্ধার কর্তব্য মানে কেবিনের বাইরে একজন নভোচারী ‘মুভমেন্টের সামর্থ্য হারানোর অবস্থায়’ পড়া অনুভব করলে, আরেকজন নভোচারী হামাগুড়ি দিয়ে তাঁকে কেবিনের ভিতরে ফিরিয়ে আনতে পারবেন। এবার কেবিনের বাইরে উদ্ধার কাজের নেতৃত্ব দিয়েছেন নভোচারী ছেন তুং।
কর্তব্যের এলাকা ওয়েনথিয়ান এয়ারলক থেকে ওয়ার্কিং কেবিন পর্যন্ত। এর মোট দৈর্ঘ্য ৫ মিটারের মতো। চীনের মানববাহী মহাকাশ প্রকল্পের নভোচারী সিস্টেমের প্রধান ডিজাইনার হুয়াং ওয়েই ফেন জানান, সবাই দেখেছে যে, নভোচারী ছাই সুই চ্য অচলাবস্থায় পড়ার মতো হয়েছেন, তখন তাঁর দুই হাত হ্যান্ডেল থেকে সরে যায়। এ অবস্থা সবার জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। এই কর্তব্য তাঁরা নিখুঁতভাবে সম্পন্ন করেছেন।
সুষ্ঠুভাবে কর্তব্য সম্পন্ন করার পর তিনজন নভোচারী নিজের অনুভূতিও শেয়ার করেছেন। তাঁরা বলেন, এবার কেবিনের বাইরে কর্তব্য পালনের সময় পৃথিবীর অসাধারণ দৃশ্য উপভোগ করেছেন, অসীম মহাকাশের সৌন্দর্য দেখতে পেয়েছেন, তাঁরা একই সঙ্গে নিজেদের কাঁধে বিশাল দায়িত্ব-কর্তব্য উপলব্ধি করেছেন। চীনের মহাকাশ স্টেশন যেন- মহাকাশের সবচেয়ে উজ্জ্বল তারা!সূত্র সিএমজি।
ইবাংলা/জেএন/১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২