মুন্সিগঞ্জে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের করা দুই মামলায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব কামরুজ্জামান রতন, সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়কসহ ৩ শতাধিক নেতাকর্মী আগাম জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেছেন।
মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে এ আবেদন দায়ের করা হয়েছে। অ্যাডভোকেট মো. কামাল হোসেন ও অ্যাডভোকেট রোকনুজ্জামান সুজা এ আবেদনগুলো দায়ের করেছেন। বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) জামিন আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে।
গত ২২ সেপ্টেম্বর মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলায় বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষে ঘটনায় দলটির নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে দুটি পৃথক মামলা হয়। মামলা দুটিতে ১ হাজার ৩৬৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে বিএনপির নেতা–কর্মী ও অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি আছেন। দুটি মামলায় ২৬ জনকে গ্রেপ্তার করে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন…অক্টোবর মাসের প্রথম দিকে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়তে পারে
পুলিশ জানায়, একটি মামলায় মুন্সিগঞ্জ সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাইনউদ্দিন বাদী হয়ে সরকারি অস্ত্র–গুলি লুট ও মোটরসাইকেল পোড়ানোর অভিযোগে ৩১৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় ৭০০ থেকে ৮০০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। এ মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব কামরুজ্জামান রতনকে। মামলায় ২৪ জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে এরইমধ্যে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে মুক্তারপুরে শ্রমিক লীগের কার্যালয় ভাঙচুর, ককটেল বিস্ফোরণ ও মারধর করে গুরুতর জখম করার অভিযোগে মামলা করেন মুক্তারপুর বাগবাড়ি এলাকার বাসিন্দা ও শ্রমিক লীগের নেতা আবদুল মালেক। এ মামলায় সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন আহম্মেদকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। মামলায় ৫২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় ১৫০ থেকে ২০০ জনকে আসামি করা হয়। এ মামলায় দুজনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
২১ সেপ্টেম্বর বিকেল তিনটার দিকে জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দামের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদ এবং ভোলা ও নারায়ণগঞ্জে বিএনপির তিন নেতা-কর্মী হত্যার বিচার দাবিতে মুন্সিগঞ্জ শহরের মুক্তারপুর এলাকায় বিক্ষোভ কর্মসূচি আয়োজন করে জেলা বিএনপি। সেখানে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও দলীয় নেতা-কর্মীরা জানান, ২১ সেপ্টেম্বর বিকেল তিনটার দিকে পূর্বনির্ধারিত সমাবেশে যোগ দিতে বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা বিএনপির নেতা-কর্মীরা মুক্তারপুর মোড়ে জড়ো হতে থাকেন। পুলিশ তাদের সেখানে জড়ো হতে নিষেধ করলে তারা মুক্তারপুর থেকে ট্রাকে পুরোনো ফেরিঘাট এলাকায় যান।
সেখানে বিভিন্ন এলাকা থেকে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে নেতা-কর্মীরা আসতে শুরু করেন। তখন সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিনহাজুল ইসলাম একটি মিছিলের ব্যানার ধরে টান দিলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। সেই ঘটনায় বিএনপির নেতা–কর্মী, সাংবাদিক ও পুলিশ সদস্যসহ প্রায় ৮০ জন আহত হন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে মুক্তারপুর ওয়ার্ড যুবদলের কর্মী শাওন খান (২২) মারা গেছেন।
ইবাংলা/জেএন/২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২