বিশ্বময় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে আল্লাহর সৃষ্টির লীলারহস্য। এই সৃষ্টিরহস্য ও ঐতিহাসিক নিদর্শনাদি মানুষকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে প্রতি মুহূর্ত। বিখ্যাত পর্যটক ইবনে বতুতা বলেছেন, ভ্রমণ স্রষ্টার সৃষ্টিরহস্য জানায়, ভ্রমণ আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ায়। প্রত্যেক মানুষেরই সাধ্যানুসারে কাছে কিংবা দূরে ভ্রমণের মাধ্যমে স্রষ্টার বৈচিত্র্যময় সৃষ্টিকে দেখে অন্তরকে বিকশিত করা উচিত।
মহান আল্লাহর বিশাল সৃষ্টি দর্শন, উপার্জন, জ্ঞান আহরণ, রোগ নিরাময় এবং আত্মশুদ্ধির জন্য ভ্রমণ করার নির্দেশ রয়েছে ইসলামে। কেউ যদি সওয়াবের নিয়তে ভ্রমণ করে, পুরো ভ্রমণেই তার সওয়াব অর্জন হবে। জ্ঞানার্জনের জন্য স্বামী-স্ত্রী সপরিবারে বা দলবদ্ধভাবে ভ্রমণে বা পর্যটনে যাওয়ায় কল্যাণ ও পুণ্য নিহিত রয়েছে।
আরও পড়ুন…করোনা টিকার প্রথম ডোজ ৩ অক্টোবরের পর পাওয়া যাবে না
পৃথিবীজুড়ে রয়েছে আল্লাহর কুদরতের নানা কীর্তি। এসব দেখে মানুষ চিন্তা ও গবেষণা করবে। দৃঢ় করবে ঈমান ও আমল। তবে কোনো খারাপ উদ্দেশ্যে সফর করার অনুমতি ইসলাম প্রদান করেনি।
সফরের প্রতি ইসলাম কখনো নিরুৎসাহ করেনি। পবিত্র কোরআনের অসংখ্য আয়াতে দেশ-বিদেশে ভ্রমণের প্রতি তাগিদ দেওয়া হয়েছে। এক আয়াতে আল্লাহ বলেন-
‘বলো, তোমরা পৃথিবীতে পরিভ্রমণ করো এবং দেখো, তোমাদের আগের লোকদের কী পরিণাম হয়েছিল! তাদের বেশির ভাগই ছিল মুশরিক।’ -(সুরা : রুম, আয়াত : ৪২)
ভ্রমণে চিন্তার জগৎ প্রসারিত হয় এবং এতে থাকে শিক্ষণীয় উপাদান। ভ্রমণে এই শিক্ষণীয় দিকটার প্রতি কোরআন বিশেষ নজর দিয়েছে।
ইরশাদ হয়েছে, ‘বলে দাও, তোমরা পৃথিবীতে পরিভ্রমণ করো, অতঃপর দেখো, যারা সত্যকে মিথ্যা বলেছে, তাদের পরিণাম কী হয়েছিল?’ (সুরা : আনআম, আয়াত : ১১)
মূলত সফরের মাধ্যমে দেশ-বিদেশের নানা বৈচিত্র্য বিষয় অবলোকন করে জীবনের পাথেয় সঞ্চয় করা খুবই সহজ। সফরের কারণে মানুষের চোখ-কান খুলে যায়। সত্য, সঠিক পথ ও পন্থা গ্রহণে সহায়ক হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন,
‘তবে কি তারা পৃথিবীতে পরিভ্রমণ করে না, যাতে তাদের অন্তর অনুধাবন করতে পারত এবং তাদের কান (সত্য কথা) শুনে নিত।’ -(সুরা : হজ, আয়াত : ৪৬)
আরও পড়ুন…পতাকার সঙ্গে লাঠি লাগিয়ে রাস্তায় নামলে খবর আছে
নির্দিষ্ট ভূখণ্ড থেকে বের না হলে সৃষ্টিজগতের অনেক কিছুই অজানা থেকে যায়। পৃথিবীর একেক স্থান একেক বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। চিত্তবিনোদনের পাশাপাশি সেসব স্থানে চিন্তাশীলদের জন্যও রয়েছে চিন্তার খোরাক।
আল্লাহ বলেন, ‘বলে দাও, তোমরা ভূপৃষ্ঠে ভ্রমণ করো এবং দেখো, কিভাবে আল্লাহ প্রথমবারে সৃষ্টি করেছেন। আবার তিনি শেষবারেও সৃষ্টি করবেন।’ (সুরা : আনকাবুত, আয়াত : ২০)
ইমাম শাফেয়ি (রহ.) ভ্রমণের পাঁচটি উপকারিতা উল্লেখ করেছেন। এক. দুশ্চিন্তা দূর হয়। দুই. জীবিকা অর্জন করা যায়। তিন. জ্ঞানার্জন করা যায়। চার. সৌজন্যতা ও শিষ্টাচার শেখা যায়। পাঁচ. শারীরিক সুস্থতা অর্জন হয়।
ইবাংলা/জেএন/২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২