প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে গত ২৮ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া করোনা টিকার বিশেষ কর্মসূচির সময় বাড়ানো হয়েছে। সোমবার (৩ অক্টোবর) এই কর্মসূচি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা চলবে আগামী ৮ অক্টোবর পর্যন্ত। অর্থাৎ আরও তিন দিন করোনা টিকার প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ নিতে পারবে মানুষ। পাশাপাশি টিকার তৃতীয় বা বুস্টার ডোজ কার্যক্রম আগের মতোই চলবে।
সোমবার (৩ অক্টোবর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আগামী ৮ অক্টোবর পর্যন্ত করোনা টিকার এই বিশেষ কর্মসূচিতে আগের নিয়মেই টিকা পাবেন মানুষ।
আরও পড়ুন…গাজীপুরে ডাকাত ও দুই মাদক কারবারি গ্রেফতার
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সব মানুষকে করোনা টিকার আওতায় আনতে কর্মসূচির মেয়াদ আরও তিন দিন বাড়ানো হয়েছে। এই বিশেষ কর্মসূচিতে এখন পর্যন্ত সব মিলে এক কোটির বেশি ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। প্রথম ডোজ নেননি এমন অনেকে আছেন এরমধ্যে। আমরা অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি। মানুষ টিকা নিতে চায়। এ জন্যই আরও কিছু মানুষকে এর আওতায় আনতে কর্মসূচি আরও তিন দিন চলবে।
আগামী ৫ ও ৭ অক্টোবর সরকারি ও সাধারণ ছুটি থাকায় আগামীকাল ৪ অক্টোবর এবং ৬ ও ৮ অক্টোবর এই তিন দিন টিকাদান কর্মসূচি চলবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর আরও বলেন, দেশে করোনা টিকাদান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। এই কর্মসূচিতে সর্বস্তরের মানুষকে সম্পৃক্ত করতে হবে। দেশের বিপুলসংখ্যক মানুষকে ইতিমধ্যে টিকার আওতায় আনা হয়েছে। টিকা নেওয়ার কারণে করোনায় আক্রান্ত হলেও হাসপাতালে ভর্তি কম হচ্ছে। মৃত্যুহারও অনেক কম।
সরকারের করোনা টিকাদান ব্যবস্থাপনা টাস্কফোর্স কমিটির সদস্যসচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের টিকা কর্মসূচির পরিচালক ডা. শামসুল হক সংবাদ সম্মেলনে জানান, গত ২৮ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া করোনা টিকার বিশেষ কর্মসূচিতে রবিবার পর্যন্ত প্রথম ডোজ পেয়েছেন ৬ লাখ ২ হাজার ৪৮ জন, দ্বিতীয় ডোজ ১৫ লাখ ৪ হাজার ৬৩৮ জন ও তৃতীয় বা বুস্টার ডোজ পেয়েছেন ৮১ লাখ ৯৭ হাজার ৯২৯ জন।
ডা. শামসুল হক বলেন, ৮ অক্টোবরের পর টিকার প্রথম এ দ্বিতীয় ডোজের জন্য কোনো কর্মসূচি চালানো হবে না। তবে কেউ যৌক্তিক কারণে টিকা নিতে না পারলে তাকে দেওয়া হবে। তাদের জন্য নির্দিষ্ট টিকাদান কেন্দ্র থাকবে। তিনি আরও বলেন, সময়সীমা বাড়ানোর কারণে প্রয়োজনীয় টিকা স্থানীয়ভাবে পৌঁছে দিয়েছি।
আমাদের হাতে পর্যাপ্ত টিকা আছে। আমরা সময় বাড়িয়েছি যাতে সবাই টিকা পায়। এই সুযোগ আশা করছি আমাদের জন্য অনেক ভালো সুফল বয়ে আনবে। এ জন্য আমাদের জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। সাধারণ মানুষে টিকা দেওয়ার গুরুত্ব বোঝাতে হবে।
আরও পড়ুন…আমরা যুদ্ধ চাই না, সবার সঙ্গে মিলেমিশে থাকতে চাই: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে গত ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে সারা দেশে করোনা টিকার বিশেষ কর্মসূচি শুরু করে সরকার। এই কর্মসূচির পর করোনা টিকার প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম। বিশেষ এই টিকাদান কর্মসূচি গতকাল ৩ অক্টোবর শেষ হওয়ার কথা ছিল। এই কর্মসূচির সময় আরও তিন দিন বাড়ানো হলো।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমানে (২০২১ সালের ১ জুলাইয়ের হিসেবে) দেশে মোট জনসংখ্যা ১৭ কোটি ৩ লাখ ১৭ হাজার ৭৭ জন। এরমধ্যে গত ২ অক্টোবর পর্যন্ত প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন ১৩ কোটি ১৮ লাখ ৯৭ হাজার ৭৬৬ জন, দ্বিতীয় ডোজ ১২ কোটি ৩২ লাখ ৯২ হাজার ২৬৮ জন এবং তৃতীয় বা বুস্টার ডোজ নিয়েছেন ৫ কোটি ৩৮ লাখ ৫৮ হাজার ২৫৩ জন।
ইবাংলা/টিএইচকে