নাকের ডগা দিয়েই হচ্ছে টাকা পাচার!

নিজস্ব প্রতিবেদক:

>> মূলত নামমাত্র কর, অর্থের উৎস জানানোর বাধ্যবাধকতা না থাকা ও আইনি সুরক্ষার ঢালে, টাকা পাচার করছে দুর্নীতিবাজরা।

বাংলাদেশ থেকে ৩৬ দেশে পাচার হচ্ছে টাকা। সবচেয়ে বেশি যাচ্ছে ১০ দেশে। মূলত নামমাত্র কর, অর্থের উৎস জানানোর বাধ্যবাধকতা না থাকা ও আইনি সুরক্ষার ঢালে, টাকা পাচার করছে দূর্নীতিবাজরা। আর ৮০ শতাংশ অর্থ পাচার হচ্ছে আমদানি-রপ্তানির আড়ালে। বিদেশি বাণিজ্যের মাধ্যমে টাকা পাচার ঠেকাতে কাস্টমসের ভ্যালুয়েশন ইউনিটকে শক্তিশালী করার পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা।

বাসিন্দা না হয়েও, কানাডায় বাড়ির মালিক হওয়া সহজ। মোট দামের উপর মাত্র ১৫ শতাংশ কর দিতে হয়। জানাতে হয়না টাকাও উৎসও। আর তাই ক্রমাগত কানাডা হয়ে উঠছে দুর্নীতিবাজদের টাকা পাচারদের পছন্দের গন্তব্য।

কানাডার সরকারি সংস্থা ফিনট্রাকের তথ্য এই মহামারির মধ্যে, দেশটিতে গত এক বছরে ১ হাজার ৫৮২টি টাকা পাচার ঘটনা ঘটেছে। মূলত করছাড়, প্রশ্নবিহীন বিনিয়োগের অবাধ সুযোগের প্রলোভন দিয়ে উন্নয়নশীল দেশের টাকা নিজেদের অর্থনীতিতে নিতে আগ্রহী উন্নত দেশগুলো। অর্থ পাচারের খোঁজ খবর রাখে, এমন সব বৈশ্বিক সংস্থার তথ্য উপাত্ত বলছে, বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচার হয় বিশ্বের ৩৬টি দেশে। তবে, সবচেয়ে বেশি হৃষ্টপুষ্ট হয়েছে ১০ দেশের অর্থনীতি।

এসব দেশের মধ্যে রয়েছে সিঙ্গাপুর, কানাডা, মালয়েশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সুইজারল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত, অস্ট্রেলিয়া, হংকং এবং থাইল্যান্ড।

এ বিষয়ে কোম্পানি আইন বিশ্লেষক ব্যারিস্টার এম এ মাসুম বলেন, 'আমাদের দেশ থেকে উন্নত দেশগুলোতে টাকা পাচারের ঘটনায় যেভাবে উৎস সন্ধান করা উচিত তারা সেভাবে করে না। পাচারের টাকা তারা বিভিন্নভাবে তাদের দেশের অর্থনীতিতে কাজে লাগাতে পারে সেজন্য উন্নত দেশগুলো এ বাপারে কোনও উদ্যং নেয় না।'

আমদানিতে মূল্য বেশি দেখানো বা ওভার ইনভয়েসিং, রপ্তানিতে কম মূল্য কম দেখানো বা আন্ডার ইনভয়েসিং, আর হুন্ডি টাকা পাচারের জনপ্রিয় মাধ্যম। গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটিসহ বিভিন্ন সংস্থা বলছে, প্রায় ৮০ শতাংশ অর্থ পাচার হয় এসবের মাধ্যমে। কিন্তু এই কৌশল প্রতিরোধে ব্যাংকের কিছু করার নেই, বরং যা করার তা কাস্টমসকেই করতে হবে বলে মত অর্থনীতিবিদদের।

পিআরআই এর নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর জানান, কোনও পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দেয়া সম্ভব না। আবার ব্যাংকের মাধ্যমেও মূল্য নির্ধারণ করা সম্ভব না। তাই যা করার কাস্টমসকেই করতে হবে।

পরিমাণে অল্প হলেও, টাকা পাচারের নতুন মাধ্যম হয়ে উঠছে বিভিন্ন অ্যাপস। সম্প্রতি বিগো লাইভ ও লাইকির মাধ্যমে প্রতিমাসে শতকোটি টাকা পাচারের ঘটনাও সামনে এসেছে।

দেশ উন্নত হচ্ছে, বাড়ছে জীবনযাত্রার মান। তবুও কেন বাড়ছে টাকা পাচার? এমন প্রশ্নের উত্তর হিসেবে ৫ কারণকে সামনে এনেছেন বিশ্লেষকরা। বলছেন, বিনিয়োগের পরিবেশের অভাব, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার শঙ্কা, রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোর দুর্বল নজরদারি, আইনের শাসনের ঘাটতি এবং বেপরোয়া দুর্নীতির ফলাফল অর্থ পাচার। << ই বাংলা/ আইএইচ/ ১৭ জুন, ২০২১

টাকাডগানাকেরপাচার
Comments (0)
Add Comment