চীনের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি)২০তম জাতীয় কংগ্রেস রোববার সকালে ১০টায় বেইজিংয়ের গণমহাভবনে শুরু হয়েছে। ২৩০০ জনেও বেশি প্রতিনিধি ও বিশেষ আমন্ত্রীত অতিথিরা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। কংগ্রেস চলবে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত।
উদ্বোধনী অধিবেশনে সিপিসি’র সাধারণ সম্পাদক সি চিন পিং সিপিসি’র উনবিংশ কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে প্রতিবেদন পেশ করেন। প্রতিবেদনে তিনি বলেন, “সিপিসি’র অষ্টাদশ জাতীয় কংগ্রেসের পর ১০ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে।
গত এক দশক পার্টি ও জনগণের জন্য অত্যন্ত তাৎক্ষণিক গুরুত্ব এবং গভীর ঐতিহাসিক তাৎপর্যের তিনটি প্রধান ঘটনা চিহ্নিত করেছে। আমরা চীনের কমিউনিস্ট পার্টির শতবর্ষকে আলিঙ্গন করেছি; আমরা চীনা বৈশিষ্ট্যসহ সমাজতন্ত্রের একটি নতুন যুগের সূচনা করেছি, এবং আমরা চরম দারিদ্র্য দূর করেছি এবং সর্বক্ষেত্রে একটি মাঝারি সমৃদ্ধ সমাজ নির্মাণ শেষ করেছি, এইভাবে প্রথম শতবর্ষের লক্ষ্য পূরণ করেছি।”
আরও পড়ুন…নড়াইলে কলেজ এমপিও হলেও দু’শিক্ষকের পদ নিয়ে দ্ব›েদ্বর নিরসন হয়নি
সিপিসির কেন্ত্রীয় কর্তব্য প্রসঙ্গে প্রেসিডেন্ট সি বলেন, ‘এখন থেকে সিপিসি’র কেন্দ্রীয় কর্তব্য হল দেশের সমস্ত জাতিগোষ্ঠীর জনগণকে একত্রিত করে একটি শক্তিশালী আধুনিক সমাজতান্ত্রিক দেশ গড়ে তোলা, সংগ্রামের দ্বিতীয় শতবছরের লক্ষ্য অর্জন করা এবং ব্যাপকভাবে চীনা-শৈলীর আধুনিকীকরণের মাধ্যমে চীনা জাতির মহান পুনর্জাগরণ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।
চীনের উন্নয়নের পরিকল্পনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সার্বিকভাবে আধুনিক সমাজতান্ত্রিক শক্তিশালী দেশ গড়ার সামগ্রিক কৌশলগত ব্যবস্থা দুটি পদক্ষেপ রয়েছে।
প্রথমত, ২০২০ থেকে ২০৩৫ সাল পর্যন্ত সমাজতান্ত্রিক আধুনিকীকরণ বাস্তবায়ন। দ্বিতীয়ত, ২০৩৫ সাল থেকে এ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে শক্তিশালী, সমৃদ্ধ, গণতান্ত্রিক, সভ্যতা-সম্পন্ন, সম্প্রীতিমূলক ও সুন্দর আধুনিক সমাজতান্ত্রিক দেশ গড়ে তোলা।
সি চিন পিং জনগণের মঙ্গল ও জীবনযাত্রার মান আরও উন্নত করার অঙ্গীকার করেছেন। প্রেসিডেন্ট সি বলেন, ‘এই দেশটি এর জনগণ; জনগণই দেশ। সিপিসি যেহেতু গণপ্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়নের লড়াইয়ে জনগণকে নেতৃত্ব দিয়েছে, এটি সত্যিই তাদের সমর্থনের জন্য লড়াই করছে’।
সি বলেন, জনগণের কল্যাণসাধন শাসনের মৌলিক নীতি। জনকল্যাণ ও সুশাসন কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিশ্রুতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
প্রেসিডেন্ট সি বলেন, দেশের উন্নয়ন অভিযাত্রায় অবশ্যই জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করতে হবে। একটি উন্নত জীবনের জন্য, জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য সবাইকে একসাথে কঠোর পরিশ্রম করার আহ্বান জানান পার্টির সাধারণ সম্পাদক।
তাইওয়ান বিষয় প্রেসিডেন্ট সি বলেন, তাইওয়ান সমস্যার সমাধান চীনা জনগণের নিজস্ব ব্যাপার এবং কেবল চীনা জনগণ এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। দেশের একীকরণ ও জাতির পুনরুদ্ধার সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। চীনের পুনরেকত্রীকরণ বাস্তবায়ন হতে পারে এবং হবে।
এবারের জাতীয় কংগ্রেসে সিপিসি’র ঊনবিংশ কেন্দ্রীয় কমিটির প্রতিবেদন, কেন্দ্রীয় ডিসিপ্লিন ইন্সপেকশন কমিশনের কর্মপ্রতিবেদন, আর সিপিসি’র সংশোধিত প্রবিধান পর্যালোচনা করা হবে এবং নতুন পর্যায়ের সিপিসি’র কেন্দ্রীয় কমিটি ও কেন্দ্রীয় ডিসিপ্লিন ইন্সপেকশন কমিশন নির্বাচন করা হবে।
আরও পড়ুন…ক্রস ফায়ারে যুবদল নেতার মৃত্যু: ৫ বছর পর স্ত্রীর মামলার আবেদন
গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত টানা ৭৩ বছর ধরে ক্ষমতাসীন পার্টি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছে সিপিসি। সিপিসি’র জাতীয় কংগ্রেস প্রতি ৫ বছর অন্তর একবার অনুষ্ঠিত হয়। সূত্র: সিএমজি।
ইবাংলা/জেএন/১৬ অক্টোবর ২০২২