এই বিশ্বে, মানুষের এই জীবনে, সব সুখ পরিশ্রমের মাধ্যমে সৃষ্ট হয়। আসলে প্রত্যেক শ্রমিক, প্রত্যেক সাধারণ মানুষের পরিশ্রমের গল্পই মনোমুগ্ধকর ও অসাধারণ। আজ আপনাদের সঙ্গে চীনের ভিন্ন পদের কয়েকজন সাধারণ শ্রমিকের গল্প শোনাবো। ২০১৯ সালের গ্রীষ্মকালে চীনের কানসু প্রদেশের কু লিয়াং জেলার বাবুশা বন খামারে একজন বিশেষ ‘মরুকরণ প্রতিরোধ কর্মী’ এসেছেন। তিনি হলেন চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং।
আরও পড়ুন…কেন্দ্রীয় কমিটি ঐক্যবদ্ধ হয়ে সার্বিক সমাজতান্ত্রিক আধুনিক দেশ গঠন করবে সি চীন পিং
বন খামারের তৃতীয় প্রজন্মের মরুকরণ প্রতিরোধকর্মী কুও সি জানান, তখন আমরা খামারে মরুকরণ প্রতিরোধের কাজ করছিলাম, প্রেসিডেন্ট একটি লাঙ্গল দিয়ে অল্প সময়ের মধ্যে দুই মিটারেরও বেশি লম্বা একটি নালা তৈরি করেন।
বা বু শা, এই শব্দটির অর্থ হল- বাসা থেকে বের হলে আট ধাপ পরই বালি ও মরুভূমি দেখা যায়। কম বৃষ্টি ও খরায় এখানে একসময় কোনো ঘাসও হতো না। ১৯৮১ সালে কুও সি’র দাদা কুও ছাও মিং এবং অন্যান্য ৫জন কৃষক যৌথভাবে বা বু শা বন খামার স্থাপন করেন। তখন থেকে সেখানে মরুকরণ প্রতিরোধের কাজ শুরু হয়। এই গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক নিরাপত্তা দেয়ালের নির্মাণকাজ, বন খামারের কর্মীদের জীবনের নিশ্চয়তা, এসব বিষয়ে অনেক গুরুত্ব দেন প্রেসিডেন্ট সি।
কুও সি জানান, প্রেসিডেন্ট সি বলেছিলেন, নিজের ভালো শারীরিক অবস্থা নিশ্চিত করলে মরুকরণ সমস্যা সমাধান করা যায়। জীবনের জন্য মরুকরণ প্রতিরোধ করাই উত্তম কাজ।
প্রেসিডেন্ট সি’র কথা বন খামারের কর্মীদের অনেক উত্সাহ দিয়েছে। এখন বা বু শা খামার যেন সবুজ সমুদ্রের মত সুন্দর। এত বছরে স্থানীয় মরুকরণ প্রতিরোধ করা হয়েছে। এ কারণে জীবন অনেক সুন্দর হয়েছে। চীনের অষ্টাদশ জাতীয় কংগ্রেসের পর থেকে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং সবসময় ব্যাপক শ্রমিকদের জীবনের ওপর অনেক গুরুত্ব দিয়েছেন।
আরও পড়ুন…হু হু করে বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং হ্য নান প্রদেশের কুয়াং সান জেলার সি মা কুয়াং টি অয়েল ক্যামেলিয়া ফল বাগান পরিদর্শন করেন এবং স্থানীয় কৃষকদের খোঁজখবর নেন।
টি অয়েল ক্যামেলিয়া ফল সাবেক দরিদ্র জেলা কুয়াং সা জেলায় শুধু প্রাকৃতিক সম্পদই নয়, বরং বর্তমানে তা আরো ভালো আর্থিক মুনাফা তৈরি করেছে। টি অয়েল ক্যামেলিয়া ফল থেকে উত্পাদিত পণ্য বিক্রি করে কৃষকরা ধনী হওয়ার পথ খুঁজে পেয়েছেন।গত তিন বছরে স্থানীয় মানুষের জীবনে অনেক উন্নত হয়েছে। প্রত্যেক পরিবারে পানি পাইপ পৌঁছে গেছে, ভালো পথ তৈরি হয়েছে, অনেকেই বাসার সামনে থেকে টাকা উপার্জন করতে পারছে।
এবারে শেয়ার করবো চীনের একজন ওয়েল্ডারের গল্প।চাং হুয়াই হুং চীনের সুইচৌ কনস্ট্রাকশন মেশিনারি গ্রুপ কোম্পানির একজন ওয়েল্ডার বা বৈদ্যুতিক ঝালাই মিস্ত্রি। নিজের কাজকে ‘লোহার থালায় সূচিকর্ম করা’ বলে বর্ণনা করেন তিনি।
২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে সি চিন পিং কোম্পানিতে এসে আদর্শ শ্রমজীবীসহ নানা শ্রমিকের সঙ্গে দেখা করেছেন। চাং হুয়াই হুং বলেন, প্রেসিডেন্ট সি আসার দিন আবহাওয়া অনেক ঠান্ডা ছিল, তবে আমাদের মন ছিল ভীষণ উষ্ণ। প্রেসিডেন্ট সি আমার মনের কথা বলেছেন। শিল্প প্রতিষ্ঠান উন্নত করতে চাইলে কর্মী হিসেবে আমাদের উচিত ভালোভাবে নিজের কাজ করা।
নিজের শরীরের স্থিতিশীলতা জোরদার করা এবং ওয়েল্ডিংয়ের কাজ যেন শরীরে অস্ত্রোপচার করার মত সূক্ষ্ম কাজ। এজন্য চাং নিজেই শরীরচর্চার পদ্ধতি খুঁজে পেয়েছেন। সময় পেলে তিনি কিছুক্ষণ শরীরচর্চা করেন।নিরলস চেষ্টার পর চাং-এর পেশাদারী সামর্থ্য অনেক উন্নত হয়েছে। ২০২০ সালে চাংকে দেশের শ্রেষ্ঠ আদর্শ শ্রমজীবী হিসেবে নির্বাচন করা হয়।
আরও পড়ুন…ক্ষমতার বদল চাইলে বিএনপিকে নির্বাচনে আসতে হবে
দশ বছরে ব্যাপক শ্রমিকের প্রতি চীনের প্রেসিডেন্ট সি’র গুরুত্বারোপ এবং যত্ন নেওয়ার কারণে নতুন যুগে সবাই পরিশ্রমী শক্তিতে পরিণত হয়েছে।জীবনের সুন্দর স্বপ্নগুলো, সত্যনিষ্ঠ শ্রমের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা যায়।উন্নয়নের বিভিন্ন সমস্যা, সত্যনিষ্ঠ শ্রমের মাধ্যমে সমাধান করা যায়।জীবনের সব গর্ব, সত্যনিষ্ঠ শ্রমের মাধ্যমে অর্জন করা যায়। সূত্র:সিএমজি।
ইবাংলা/জেএন/২৩ অক্টোবর ২০২২