পোশাককে আল্লাহ তাআলা নেয়ামত হিসেবে দান করেছেন। এর দ্বারা দুটো লক্ষ্য অর্জিত হয়। একটি হলো লজ্জাস্থান আবৃত করা হয়। আর দ্বিতীয়টি হলো মানুষের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ব্যক্তিকে তার অবস্থা অনুযায়ী পোশাক পরতে বলতেন। পোশাক পরার ব্যাপারে কৃপণতা করতে নিষেধ করতেন।ইসলামের প্রধান ইবাদত নামাজ। ঈমানের পরই নামাজের স্থান। নামাজে মুমিন মুসলমানের পোশাক কেমন হবে? এ সম্পর্কে ইসলামের দিকনির্দেশনাই বা কী?
আরও পড়ুন…ইতিহাস রচনা করে সেমিতে মরক্কো, পর্তুগালের বিদায়
হাদিসে এসেছে, হজরত আহওয়াস তার বাবা থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে নিম্ন মানের একটি পোশাক পরে উপস্থিত হলাম। তখন নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে বললেন, তোমার কোনো সম্পদ আছে কি? তিনি বললেন, হ্যা। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন তাকে বললেন, কি ধরনের সম্পদ আছে? তিনি বললেন, আল্লাহ তাআলা আমাকে উট, ছাগল, ঘোড়া এবং গোলাম দান করেছেন।
নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, যেহেতু আল্লাহ তায়ালা তোমাকে সম্পদ দান করেছেন তাই আল্লাহর এ অনুগ্রহের নমুনা ও মর্যাদা তোমার মধ্যে প্রকাশ পাওয়া আবশ্যক।’ (আবু দাউদ)
পোশাকের প্রধান উদ্দেশ্যই হল সতর ঢাকা। আল্লাহ তাআলা বলেন,
يَا بَنِي آدَمَ قَدْ أَنزَلْنَا عَلَيْكُمْ لِبَاسًا يُوَارِي سَوْءَاتِكُمْ وَرِيشًا
‘হে বনী আদম! আমি তোমাদের জন্য অবতীর্ণ করেছি পোশাক, যা তোমাদের লজ্জাস্থান আবৃত করে এবং সৌন্দর্য দান করে।’ (সূরা আ’রাফ ২৬)
আলোচ্য আয়াত থেকে বোঝা যায়, যে পোশাক পরিধানের পরও সতর দেখা যায় কিংবা সতরের আকৃতি পোশাকের উপরে ফুটে উঠে তা-ও সতর আবৃত না করার কারণে নাজায়েয পোশাকের অন্তর্ভুক্ত। এ ধরনের পোশাক পরিধান করা হারাম; সুতরাং নামাজে এ ধরণের পোশাক পরিধান করা যাবে না।
পক্ষান্তরে যে পোশাক পরিধানের পর সতরের আকৃতি পোশাকের উপরে ফুটে উঠে না, তা নামাজে পরিধান করা যাবে। তবে নামাজে কেবল সতর আবৃত করতেই নির্দেশ দেওয়া হয়নি, বরং সাজসজ্জার পোশাকও পরিধান করতে বলা হয়েছে।
যেমন, আল্লাহ তাআলা বলেন,
يَا بَنِي آدَمَ خُذُواْ زِينَتَكُمْ عِندَ كُلِّ مَسْجِدٍ
‘হে বনী-আদম! তোমরা প্রত্যেক নামাজের সময় সাজসজ্জা পরিধান করে নাও।'(সূরা আ’রাফ ৩১) সুতরাং এমন পোশাক পরেও নামাজ পড়া মাকরুহ, যা পরিধান করে বন্ধু মহল কিংবা সাধারণ লোকের সামনে যাওয়া লজ্জাজনক মনে করা হয়।
উল্লেখ্য, পুরুষের সতর হল নাভির নিচ থেকে নিয়ে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত। পক্ষান্তরে মহিলাদের হাত, পা, মুখ ছাড়া পূর্ণ শরীরই সতর।
ইবাংলা/জেএন/১০ ডিসেম্বর, ২০২২