তৈরি পোশাকের রপ্তানি বাড়ছে। গেল সেপ্টেম্বরে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় এখাতের রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ৪২ শতাংশ। তবুও স্বস্তিতে নেই রপ্তানিকারকরা। আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি শিপমেন্টে খরচ বাড়ায় উদ্বিগ্ন তারা।
বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। খুলছে কল-কারখানা, বাড়ছে কাঁচামালের চাহিদা। ফলে হঠাৎ করেই চাপ তৈরি হয়েছে সামগ্রিক যোগানের ওপর। আর চাহিদা ও যোগানের মধ্যে বিস্তর ফারাক থাকায় লাগামহীন কাঁচামালের দাম। সাথে যোগ হয়েছে শিপমেন্টের বাড়তি খরচ।
এমন পরিস্থিতিতে নিট পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ’র নেতারা বলছেন, পর্যাপ্ত ক্রয়াদেশ থাকার পরও স্বস্তিতে নেই তারা।
বিকেএমইএ নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, দ্রব্যমূল্যের যে বৃদ্ধি এবং কনটেইনারের ভাড়া বৃদ্ধি, জাহাজভাড়া বৃদ্ধি এয়ারফ্রেড বৃদ্ধি- এসব কিছু আমাদেরকে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দিয়েছে।
তাদের মতে, এই মুহূর্তে পণ্যের ক্রয়াদেশ বাড়ানোর চেয়ে কাঁচামালের নতুন উৎস খুঁজে বের করা জরুরি।
মোহাম্মদ হাতেম আরও বলেন, আফ্রিকার দেশ হতে পারে বা চায়নার বিকল্প তাইওয়ান, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, হংকং এমনকি নিউজিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার দিকেও আমরা সোসিং করতে পারি।
বিকেএমইএ সহ-সভাপতি গাওহার সিরাজ জামিল বলেন, আতঙ্ক তৈরি না করে আগামী দেড় বছর স্থিতিশীল থাকলে মার্কেটের উন্নতি হবে।
এদিকে, সমুদ্রে পণ্য পরিবহন ব্যয়ও বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। আমদানি-রপ্তানি পণ্যের বাড়তি চাপের ওপর জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন রপ্তানিকারকরা।
গাওহার সিরাজ জামিল বলেন, কনটেইনারের স্বল্পতা রয়েছে, ফ্রেড ব্যয় বেড়েছে চারগুণ। তিন হাজার ডলার থেকে ১৯ হাজার ডলারে চলে গেছে। তাও পাওয়া যাচ্ছে না।
স্প্যারো গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শোভন ইসলাম বলেন, আমাদের যে কাস্টমস-এনবিআর সিস্টেম রয়েছে এখানে একটি ব্যাপার বার বার আসছে। সেটি হলো ওভেনের ক্ষেত্রে তারা বার বার অডিট করছে যে, আমরা কত পরিমাণ আমদানি-রপ্তানি করলাম। এটি নিয়ে নানা ধরনের জটিলতা সৃষ্টি করা হচ্ছে।
তবে স্থানীয় বাজারে ডলারের মূল্যবৃদ্ধির ঘটনা বৈদেশিক বাণিজ্যের চাপ মোকাবেলায় রপ্তানিকারকদের কিছুটা সহায়তা করছে বলে মত বিশ্লেষকদের।