দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুরের অভিযোগে মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর নয়াপল্টনে প্রতিবাদ সমাবেশ এবং একই সঙ্গে সারাদেশে গণমিছিল করবে বিএনপি। সোমবার নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে এ ঘোষণা দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। গত ৭ ডিসেম্বরের পর আজই (সোমবার) প্রথম নয়াপল্টনের কার্যালয়ে আসেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। এ সময় তারা কার্যালয়ের প্রতিটি কক্ষ পরিদর্শন করেন।
সোমবার (১২ ডিসেম্বর) নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। গত ৭ ডিসেম্বরের ঘটনার পর আজই প্রথম নয়াপল্টনের কার্যালয়ে আসেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। এসময় তারা কার্যালয়ের প্রতিটি কক্ষ পরিদর্শন করেন।
আরও পড়ুন…মেলোনির বান্ধবীসহ ৩ নারীকে গুলি করে হত্যা
পরে সংবাদ সম্মেলনে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, ১০ তারিখের সমাবেশের লক্ষ্য ছিল মানুষের সামনে বর্তমান সরকারের চরিত্র তুলে ধরা। বিরোধীদল সরকারের একটি অঙ্গ, তাদের নিশ্চিহ্ন করে দিলে রাষ্ট্রব্যবস্থা থাকতে পারে না এবং নেইও।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সরকারের নির্দেশে তাদের দলের (আওয়ামী লীগের) কর্মীরা ১০ তারিখ ঘিরে এমন কোনো অপকর্ম নাই যা করেনি। সরকার আতঙ্ক তৈরি করলেও বিএনপি শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করে দেখিয়েছে। আমরা গণতান্ত্রিক আন্দোলন গণতান্ত্রিকভাবে করবো এবং এই সরকারের বিদায় জানাবো।
সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন অভিযোগ করেন, পুলিশ ও আওয়ামী লীগের পেটোয়া বাহিনী নজিরবিহীন বর্বরতা চালিয়েছে বিএনপি কার্যালয়ে।ফাইলপত্র ও গুরুত্বপূর্ণ নথি, কম্পিউটার, হার্ডডিস্ক, অর্থ লুট, সব অঙ্গ সংগঠনের অফিস ভাঙচুর, জিয়াউর রহমানের ম্যুরাল পর্যন্ত ভেঙে ফেলেছে। ৭ তারিখে অর্তকিত হামলা চালায় পুলিশ।
আরও পড়ুন…আ.লীগের সম্মেলনে চেয়ার ছোড়াছুড়ি, সাবেক সভাপতিসহ আহত ৬
যেভাবে হামলা চালিয়েছে তা বিশ্বে নজিরবিহীন। নিন্দা করার ভাষা নেই। দলীয় কার্যালয় থেকে সিনিয়র নেতাদের গ্রেফতার করেছে। চার শতাধিক নেতা-কর্মী গ্রেফতার করা হয়েছে। এসব গ্রেফতারের উদ্দেশ্য ছিল ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ পণ্ড করা। মধ্যমপন্থি গণতান্ত্রিক দল হিসেবে বিএনপি তাদের কর্মসূচি করেছে। প্রতিটি সমাবেশে বাধা দিয়েছে সরকার। সরকারকে কোন ভিত্তিতে এই ঘটনা ঘটাতে হবে তা আমাদের হিসেবে মেলে না।
দলের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা ও গ্রেফতারই সরকারের খেলা; আর এ খেলার কথাই তারা বলে আসছিল- এ কথা জানিয়ে মোশাররফ বলেন, ১০ ডিসেম্বর গণসমাবেশকে পণ্ড করতেই দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম ও সিনিয়র নেতা মির্জা আব্বাস ছাড়াও তৃণমূলের অসংখ্য নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের হিসেবে খেলা, কিন্তু বিএনপি এই খেলায় বিশ্বাস করে না।
জনগণ বিক্ষুব্ধ, জনগণ রায় দিয়েছে দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় আনা আওয়ামী লীগের পক্ষে সম্ভব না। জনগণ সরকারকে আর চায় না। ৭ ডিসেম্বরের আচরণ প্রমাণ করে গায়ের জোরের সরকার। ১০ দফা দিয়েছি। এই ১০ দফাকে সমর্থন করে যারা যুগপৎ আন্দোলন করবে তারাও কর্মসূচি দিয়েছে। নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবিতে ১৩ ডিসেম্বর নয়াপল্টন অফিসের সামনে বিক্ষোভ করবে বিএনপি।
আরও পড়ুন…পদ্মা সেতু দেখতে গিয়ে কোম্পানীগঞ্জের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র তিন মাস নিখোঁজ
খন্দকার মোশাররফ আরও বলেন, গতকাল কার্যালয়ে আসতে পেরেছি, কী কী খোয়া গেছে তার তালিকা করছি। তারপর সিদ্ধান্ত নেবো কী করবো। ১০ ডিসেম্বরে যা প্রত্যাশা করেছিলাম তার থেকে বেশি জনসমাগম হয়েছে। তারপর সরকার যদি এটাকে ব্যর্থ বলে তাহলে কিছু বলার নাই। সরকার দিশেহারা, তারা কোন সময় কী বলবে তা নিয়ে আমরা ভ্রুক্ষেপ করি না। দেশের জনগণও জানে সরকার যা বলে তা করে না।
এ সময় ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে বিএনপি কর্মী-পুলিশ সংঘর্ষে নিহত মকবুলের পরিবারকে ১ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে বলেও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে। মকবুলের একমাত্র সন্তান ৮ বছরের মিথিলার পড়াশোনার দায়িত্বভার নিয়েছেন দলের মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক।
আরও পড়ুন…চেকপোস্টে ৮ কেজি গাঁজা ও বিদেশী মদ সহ যুবক গ্রেফতার
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, কেন্দ্রীয় নেতা অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, আমিরুজ্জামান খান শিমুল, মিডিয়া সেলের শায়রুল কবির খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ইবাংলা/জেএন/১২ ডিসেম্বর, ২০২২