বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচির সমালোচনা করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, বিএনপির মরণযাত্রা শুরু হয়ে গেছে। এভাবেই তারা পরাজিত হবে। আন্দোলনে হবে, আগামী নির্বাচনেও তাদের মরণ হবে। রাজনৈতিক মরণ।
তিনি আরও বলেন, এত লাফালাফি, এত ছোটাছুটি, এত লোটা-কম্বল, এত কাঁথা-বালিশ। সমাবেশ হলে সাতদিন ধরে সমাবেশস্থলে শুয়ে পড়ে, আর পাতিলের পর পাতিল খাবার তৈরি হয়, কোথায় গেল সে দিন। কোথায় গেল লালকার্ড? কোথায় গেল গণঅভ্যুত্থান? কোথায় গেল গণজোয়ার? গণজোয়ারে এখন ভাটার টান। তাই এটা পদযাত্রা নয়, পেছনযাত্রা। এটা পদযাত্রা নয়, মরণযাত্রা।
শনিবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে উত্তরা আজমপুর আমির কমপ্লেক্সের সামনে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের আয়োজিত শীতবস্ত্র বিতরণ ও সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ।
আরও বলেন, বিএনপি তো এখন কথার রাজা। মির্জা ফখরুল, কাজ নেই শুধু কথা আর কথা। শুধু কথার মালার চাতুরী। কাজ করছি, আর বাধ্য হয়ে তাদের কথার জবাব দিচ্ছি। তারা একতরফা মিথ্যাচার করবে। আমরা কী চুপচাপ বসে থাকব? আমাদের অবশ্যই জবাব দিতে হবে।
আরও পড়ুন…যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মেলায় বাংলাদেশের ১০টি প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুল রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, কার্যনির্বাহী সদস্য সানজিদা খানম, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকী, ঢাকা ১৮ আসনের সংসদ সদস্য হাবিব হাসান প্রমুখ।
তিনি বলেন, আজকে শান্তি সমাবেশ থেকে বলব, ডাক দিলে চলে আসবেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা লড়াই করছি। রাজপথে আছি, রাজপথে থাকব, আগামী নির্বাচন পর্যন্ত রাজপথ আমরা ছাড়ব না। আমরা মানুষের পাশে ছিলাম, এ শীতের কষ্টেও মানুষের পাশে আছি। মানুষের দুঃখে, মানুষের কষ্টে, দুর্যোগে, ঝড়ে, বন্যায় মানুষের পাশে ছিলাম।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু থেকে শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের ৭০ বছরের ইতিহাস, মানুষের পাশে থাকা, মানুষের পাশে আছি। নির্বাচনে জিতলেও আছি, নির্বাচনে হেরে গেলেও আছি। হার-জিত আল্লাহ পাকের ইচ্ছা। জনগণের ইচ্ছা। জনগণ চাইলে আমরা নির্বাচিত হব। আর জনগণ না চাইলে ২০০১ সালের মতো আমরা বিদায় নেব। এটাই তো আওয়ামী লীগের রাজনীতি।
সেতুমন্ত্রী বলেন, এ দলের শিকড় বাংলাদেশের মাটির অনেক গভীরে। অনেক গভীরে। তাই আওয়ামী লীগকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেবেন, এ দিবাস্বপ্ন দেখে লাভ নেই। আওয়ামী লীগ পালাবে না। আওয়ামী লীগ পালাবার দল নয়, এ দেশেতে জন্ম আমার যেন এ দেশেতে মরি।
ষাটের দশকে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধুকে যখন কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে যাচ্ছিল, কুর্মিতলা জেল গেটে কুয়াশা ভেজা একখণ্ড মাটি কপালে ঠেকালেন। কপালে ঠেকিয়ে বঙ্গবন্ধু বললেন, হে বাংলার মা আমি যেন জীবনে মরণে সবসময় তোমার পাশে থাকি। আজ কোথায় নিয়ে যাচ্ছে, আমি জানি না। কিন্তু বলতে চাই, এ দেশেতে জন্ম আমার যেন এ দেশেতে মরি। এটা বঙ্গবন্ধুর কথা।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বলব, এ শীতে মানুষ কষ্টে আছেন, আর তারা (বিএনপি) পদযাত্রা করছে, আমরা শীতবস্ত্র দিচ্ছি। তারা বাড্ডাতে, আমরা উত্তরায়।
আরও পড়ুন…ফ্রান্সের বিপক্ষে মার্টিনেজের ‘কুকীর্তি’তে পেনাল্টিতে নিয়ম বদল ফিফার!
খেলা হবে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, খেলা হবে! এটা না বললে জমে না। হবে তো খেলা। আন্দোলনে খেলা হবে, নির্বাচনে হবে বিএনপির বিরুদ্ধে, খেলা হবে। বলে ৫৪ দল, আবার বলে ১০ দফা, আবার বলে রাষ্ট্র মেরামতের ২৭ দফা। গতকাল দেখলাম ১৪ দফা। ৫১ দফার আন্দোলন চলছে, দল হচ্ছে ৫৪টা জগাখিচুড়ি, ঐক্যজোট জগাখিচুড়ি। কর্মসূচি কোনো দিনও এদেশে সফল হবে না।
ইবাংলা/জেএন/২৮ জানুয়ারি, ২০২৩