বাংলাদেশের নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ায় মো. সাহাবুদ্দিনকে অভিনন্দন জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে তিনি নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতিকে ফোন করে এ অভিনন্দন জানিয়েছেন ।রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, আবদুল হামিদ নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতিকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। ফোনালাপে তারা পরস্পর কুশলবিনিময় করেন।
দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন দুদকের সাবেক কমিশনার মো. সাহাবুদ্দিন। তিনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদেরও সদস্য। অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ তিনি।
রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকালে তাকে নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দপ্তরে যায় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে একটি টিম। সেখানে মনোনয়ন ফরম তোলা ও জমাদানের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা হয়।
মো. সাহাবুদ্দিন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তার জন্ম ১৯৪৯ সালে পাবনা শহরের জুবিলি ট্যাঙ্কপাড়ায়। বাবা মরহুম শরফুদ্দীন আনসারী এবং মা মোসাম্মৎ খায়রুন্নেছা। বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের অধিকারী সাহাবুদ্দিন একাধারে আইনজীবী, অধ্যাপক, সাংবাদিক ও বিচারক ছিলেন।
আরও পড়ুন…নোয়াখালীতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রাখায় ৭০ হাজার টাকা অর্থদন্ড
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার প্রতিবাদ করার পর ২০ আগস্ট সামরিক আইনের ৭ ধারায় আটক হয়ে প্রায় তিন বছর কারাভোগ করেন সাহাবুদ্দিন।
মো. সাহাবুদ্দিন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএসসি ও এলএলবি ডিগ্রি অর্জনের মাধ্যমে শিক্ষাজীবন শেষ করেন। ছাত্রাবস্থায় ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন।
স্বাধীন বাংলা ছাত্র পরিষদের পাবনা জেলার নেতা হিসেবে পাবনায় স্বাধীন বাংলার প্রথম পতাকা উত্তোলনকারীদের অন্যতম মো. সাহাবুদ্দিন।
পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন তিনি। এরপর ১৯৭১ সালে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৮২ সালে বিসিএস (বিচার) বিভাগে যোগদান করেন তিনি।
১৯৯৫ সালে জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব হিসেবে নির্বাচিত হন মো. সাহাবুদ্দিন। কর্মজীবনে তিনি সহকারী জজ, যুগ্ম জেলা জজ, অতিরিক্ত জেলা জজ ও জেলা জজ হিসেবে বিভিন্ন জেলায় দায়িত্ব পালন করেন। শহীদ বুলবুল কলেজের অধ্যাপকও ছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন…নোয়াখালীতে ইঁদুরের ফাঁদে তরুণের মৃত্যু
অধুনালুপ্ত বাংলার বাণী পত্রিকার পাবনা জেলা প্রতিনিধি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন সাহাবুদ্দিন। এছাড়া প্রেষণে আইন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
২০০১ সালের নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা তদন্তের জন্য বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তখন সরকারের কাছে এ বিষয়ে ১৩৯৭ পৃষ্ঠার রিপোর্ট পেশ করেছিলেন ।
আরও পড়ুন…ঘরে আগুন দেওয়ার ভিডিওর বিষয়ে পুলিশ সুপারের সংবাদ সম্মেলন
মো. সাহাবুদ্দিনের স্ত্রী ড. রেবেকা সুলতানা বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা হিসেবে সরকারের যুগ্ম সচিব থেকে অবসর নিয়েছেন। তিনি বর্তমানে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত। এ দম্পতির একমাত্র সন্তান মো. আরশাদ আদনান একটি বেসরকারি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
ইবাংলা/ জেএন/১৩ ফেব্রুয়ারি , ২০২৩