সেচ ব্যবস্থাপনার কারনে পাল্টে গেল কৃষকের ভাগ্য

নুরুল কবির-বান্দরবান

বান্দরবান সদর উপজেলা রাজবিলা ইউনিয়নে উদালবনিয়া এলাকায় চাষীরা বোরো চাষের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক নির্মান করে দেওয়া সেচ নালাকে বোরো চাষীদের জন্য আর্শিবাদ স্বরুপ বলেছেন। বোরো মৌসুমে শত শত একর জমি যেখানে খালি পড়ে থাকতো এখন সেখানে শত একর দৃষ্টি জুড়ে বিস্তির্ণ বোরো ধানের ফসলী জমি।

বান্দরবানে বোরো চাষে কৃষকদের এখন দম ফেলার ফুসরত নেই, স¤প্রতি রাজবিলা ইউনিয়নে সরেজমিনে গেলে দেখা যায় কেউ বোরো বীজতলা থেকে চারা উত্তোলন করছেন, কেউ রোপন করছেন, কেউ ড্রেনের পানির লাইন ঠিক করে দিচ্ছেন,মহা কর্মযজ্ঞ উৎসব চলছে বোরো ধান চাষে।

উদাল বনিয়া এলাকায় বোরো চাষে ১১ সদস্য বিশিষ্ট পাম্প হাউজ পরিচালনা কমিটি করা হয়েছে। তার মধ্য মং শৈ থুই মারমা ও থুই নু চিং মারমা পাম্প হাউজের রক্ষনাবেক্ষণ, কার জমিতে কখন পানি দেবেন সবকিছু তদারকি করেন বলে জানান এলাকার চাষি পুলু চিং মারমা।

আরও পড়ুন…কৃষক সমিতির সম্মেলন অনুষ্ঠিত, নানু সভাপতি ও সুলতান সাধারণ সম্পাদক মনোনীত

কৃষক ধুংরি মং মারমা বলেন আগে এই রাজবিলা ইউনিয়নে হেডম্যান বিলের শত একর জায়গা এমনেই পড়ে থাকতো পানির অভাবে কোন চাষী বোরে চাষ করতো না কিন্তু এবার পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড থেকে এক হাজার মিটারের অধিক দীর্ঘ পানি সেচ এর ড্রেইন নির্মাণ করে দেওয়ার কারনে প্রায় ৭০জন কৃষক বোরো চাষ করছেন তিনি নিজেই এলাকায় এবারই প্রথম কাটারিভোগ এক একর জায়গায় চাষ করেছেন বলে জানান।

বর্তমানে কাটারিভোগ চালের দাম প্রতি কেজি ১২০টাকা প্রতি হেক্টরে পাঁচ মেট্রিক্টন ধান উৎপাদনে বাম্পার ফলন হবে তিনিও যথেষ্ট লাভবান হবেন এমন আশা করছেন।

আরও পড়ুন…চুরির পর গৃহবধূকে ধর্ষণ: চিনে ফেলায় হত্যা,গ্রেফতার ২

কৃষক পুলুচিং মারমা ২একর চাষ করছেন, কৃষক উহ্লা প্রæ মারমা ২ একর, চাউগ্য মারমা ৩ একর, লু লু মং চৌধুরী ৪একর, রুই প্রæ অং চৌধুরী ৪ একর চাষ করেছেন এভাবে রাজবিলা ইউনিয়নের উদালবনিয়া এলাকায় ৭০জন কৃষক প্রায় একশ একর জায়গায় বীণা-১২।

বীণা-২৫,ব্রীধান-৬৭,৭৪,৭৫,৮৯,৯২, বঙ্গবন্ধু-১০০, হাই ব্রিড এর মধ্য শংকর,আফতাব -৭০৫,এসএইচএম-৮ সহ বিভিন্ন উচ্চ ফলন জাতের বোরো ধানের আবাদ করেছেন এবং তারা সবাই বাম্পার ফলনের আশা করছেন।

রাজবিলা ইউনিয়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা লু লু মং চৌধুরী বলেন বিভিন্ন উচ্চফলন জাতের ধানের সাথে এবারই প্রথম রপ্তানিযোগ্য কাটারি ভোগ জাতের ধান এক একর জায়গায় চাষ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। ধানের গড় পড়তা ফলন প্রতি হেক্টরে ৭মেট্রিক টন আশা করছেন তিনি।

আরও পড়ুন…বাংলাদেশের ওপরে আর কালো মেঘের ছায়া যেন না পড়ে: প্রধানমন্ত্রী

রাজবিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য অং প্রæ মারমা বলেন ইউনিয়নে রাবার ড্যাম ও সেচ নালা ড্রেইন নির্মাণ রাজবিলা ইউনিয়নে কৃষি উৎপাদনে অভুতপূর্ব উন্নতি সাধিত হয়েছে, অনাবাদি জমি আবাদ হয়েছে।

খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে এখন ইউনিয়নে খাদ্য উদ্ধৃত থাকে। এবারও বাম্পার ফলনের আশা করছেন এবং সবকিছুই পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈ সিং এমপির অবদানে হচ্ছে বলে উল্ল্যেখ করেন তিনি।

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবান ইউনিট এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বিন ইয়াছির আরাফাত বলেন এলাকাবাসীর চাহিদার প্রেক্ষিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবান ইউনিট কর্তৃক ২০২০ থেকে ২০২৩ তিন অর্থ বছরে ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা বরাদ্ধ ব্যয়ে রাজবিলা ইউনিয়নে প্রায় ১শত একর জমিতে চাষাবাদ করার জন্য ১হাজার ১৬ দশমিক ১ মিটার দীর্ঘ সেচ নালা নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন…রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সাথে প্রধানমন্ত্রী, নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতির সৌজন্য সাক্ষাৎ

এছাড়া কৃষকদের জন্য কম্বাইন্ড হারবেস্টার, রাইস ট্রান্সপ্ল্যাান্টার ও পাওয়াটিলার বিতরন করা হয় তাই এলাকাবাসী উপকৃত হয়েছে।

ইবাংলা/ জেএন/১৫ ফেব্রুয়ারি , ২০২৩

পাল্টে গেল কৃষকের ভাগ্য