মা-মেয়েকে পিলারে বেঁধে টিকটক!

নোয়াখালী প্রতিনিধি

নোয়াখালীর হাতিয়ায় জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে মা ও মেয়েকে পিলারের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের দৃশ্য ভিডিও করে টিকটকে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় মামলা হয়েছে।

বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ভুক্তভোগী মেয়ের বাবা বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে হাতিয়া থানায় এ মামলা দায়ের করেন।

মামলায় বুড়িরচর ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. জিল্লুর রহমানকে (২৫) প্রধান আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া মামলায় অজ্ঞাতনামা হিসেবে আরও তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। তবে এ মামলায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এর আগে গতকাল দুপুরে ভুক্তভোগী মেয়ের বাবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেন।

আরও পড়ুন…ফুলপরীর কাছে ক্ষমা চাইলেন অভিযুক্তরা

গত ৯ ফেব্রুয়ারি উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নে নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী নারী (৪০) ও তার কিশোরী মেয়ে (১৬) ওই ইউনিয়নের বাসিন্দা। ঘটনার পর কিশোরীকে প্রথমে হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

সেখানে তিন দিন থাকার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য নোয়াখালীর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই হাসপাতালে আরও তিন দিন চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফেরে ওই কিশোরী।

কিশোরীর বাবা বলেন, ৯ ফেব্রুয়ারি জমির বিরোধের জেরে জিল্লুর, তার চাচা নবীরসহ কয়েকজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি তার স্ত্রী ও স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে রশি দিয়ে একটি খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মারধর করেন। নির্যাতনের ঘটনার দিনই তিনি নবীর উদ্দিনসহ চারজনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা করেন।

তিনি মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে থাকা অবস্থায় আসামিরা আদালত থেকে আগাম জামিন নেন। এদিকে নির্যাতনের সময় জিল্লুর তার মুঠোফোনে নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করে রাখেন। গত মঙ্গলবার তার মেয়ে ও স্ত্রীকে চোর অপবাদ দিয়ে ভিডিওটি টিকটকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। ভিডিওর বিষয়টি জানার পর গতকাল তিনি ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। পরে ইউএনও অভিযোগটি তাৎক্ষণিক হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) দেন।

আরও পড়ুন…ফুটবল ক্যাটাগরিতে ‘অস্কার’ মনোনয়ন মেসির

ওই কিশোরীর বাবা অভিযোগ করে বলেন, তার স্ত্রী ও মেয়েকে নির্যাতনের পরও অভিযুক্ত ব্যক্তি ও তাদের স্বজনেরা বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। এ পরিস্থিতিতে তিনি পরিবার-পরিজন নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় আছেন। বিষয়টি তিনি হাতিয়া থানা-পুলিশকেও জানিয়েছেন। তবে মামলার আসামিদের পুলিশ এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এদিকে তার মেয়েও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে।

হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমির হোসেন বলেন, জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে মা–মেয়েকে বেঁধে রেখে নির্যাতনের ভিডিও চিত্র ধারণ এবং পরে তা টিকটকে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামি জিল্লুর পলাতক। পুলিশ আসামিকে গ্রেফতারে চেষ্টা চালাচ্ছে।

ইবাংলা/টিএইচকে

টিকটকপিলারে বেঁধে