আশা জাগিয়েও হারলো বাংলাদেশ

 

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ব্যাট ও বল দুই দিকেই দারুণ শুরু করেছিল বাংলাদেশ। তবে সেটি ধরে রাখতে না পারার মাশুল গুণতে হয়েছে হার দিয়ে। মিরপুরে ৩ উইকেটের হতাশার হার দিয়ে সিরিজ শুরু করেছে টাইগাররা।
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৪৭.২ ওভারে ২০৯ রানে অল আউট হয় বাংলাদেশ। জবাবে ৭ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছায় ইংল্যান্ড। দলটির হাতে ছিল আরো ৮ বল। ইংলিশদের জয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন ডেভিড মালান।

রান তাড়া করতে নেমে ইনিংসের প্রথম ওভারেই আউট হন জেসন রয়। এরপর আরেক ওপেনার ফিল সল্টকে ১২ রানে বোল্ড করেন তাইজুল ইসলাম। তার বলে ৬ রান করে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েন জেমস ভিন্স।

চতুর্থ উইকেট হিসেবে জস বাটলারকে হারালে আরো চাপে পড়ে ইংল্যান্ড। দলীয় ৬৫ রানে তার বিদায়ের পর ম্যাচ কিছুটা বাংলাদেশের দিকে ঝুঁকে পড়ে। বিপর্যয়ের মুখে ২৮ রানের জুটি গড়েন ডেভিড মালান ও উইল জ্যাকস।

২৬ রানে জ্যাকস ফেরার পরও ম্যাচ ছিল ইংল্যান্ডের হাতে। যেখানে মালান ও মঈন আলীর ব্যাটে ধীরে ধীরে লক্ষ্যের দিকে এগোচ্ছিল ইংলিশরা। নিজের কোটার একদম শেষ ডেলিভারিতে ১৪ রান করা মঈনকে বোল্ড করেন মিরাজ।

এর কিছু পরই ৭ রান করে ক্রিস ওকস ফিরলে ম্যাচে আবারো ফিরে আসে বাংলাদেশ। তবে এরপর টাইগারদের আর সুযোগ দেননি মালান ও আদিল রশিদ। অবিচ্ছেদ্য ৫১ রানের জুটি গড়ে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন তারা।

মূলত মালানের অপরাজিত ১১৪ রানের ইনিংসের কাছেই হেরেছে বাংলাদেশ। ১৬ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এটি তার চতুর্থ সেঞ্চুরি। বাংলাদেশের হয়ে তাইজুল ইসলাম তিনটি, মেহেদী মিরাজ দুটি এবং সাকিব ও তাসকিন একটি করে উইকেট শিকার করেন।

এর আগে মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম ইকবাল। দলের হয়ে তার সঙ্গে ইনিংস উদ্বোধনে নামেন লিটন দাস।

ব্যাট হাতে শুরুটা ভালোই করে টাইগাররা। প্রথম চার ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে আসে ২৭ রান। ক্রিস ওকসের করা পঞ্চম ওভারের চতুর্থ বলে স্কয়ার লেগ অঞ্চল দিয়ে ছক্কা হাঁকান লিটন। তবে পরের বলেই লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে পড়েন তিনি।

আউট হওয়ার আগে ৭ রান করেন লিটন। অন্যপ্রান্তে বেশ সাবলীল ছিলেন তামিম ইকবাল। তবে মার্ক উডের গতির সামনে পরাস্ত হন এ ব্যাটার। দশম ওভারে বোল্ড হওয়ার আগে ২৩ রান করেন টাইগার ক্যাপ্টেন।

তৃতীয় উইকেটে বড় জুটির ইঙ্গিত দিলেও মুশফিকুর রহিমের ব্যর্থতায় তা আর হয়ে ওঠেনি। আদিল রশিদকে সুইপ করতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে মার্ক উডের তালুবন্দী হন মিস্টার ডিপেন্ডেবল। ১৭ রানে তার বিদায়ে ভাঙে শান্তর সঙ্গে ৪৪ রানের জুটি।

এদিন ব্যাট হাতে সাফল্যের দেখা পাননি সাকিব আল হাসান। পাঁচ নম্বরে নেমে মাত্র ৮ রানে মঈন আলীর বলে বোল্ড হন টাইগার অলরাউন্ডার। তার বিদায়ের পর দলকে ধীরেসুস্থে এগিয়ে নিতে থাকেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

একপ্রান্ত আগলে রেখে দারুণ এক হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন শান্ত। ৬৭ বলে ফিফটির মাইলফলকে পৌঁছান তিনি। রিয়াদের সঙ্গে তার পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের জুটিতে বড় সংগ্রহে চোখ ছিল টাইগারদের। তবে এমন সময়েই ৫৮ রানে সাজঘরে ফেরেন শান্ত।

তার বিদায়ের পর অল্প সময়ের ব্যবধানে একে একে ফেরেন রিয়াদ (৩১), আফিফ হোসেন (৯) ও মেহেদী হাসান মিরাজ (৭)। ফলে বড় সংগ্রহের বদলে লড়াকু পুঁজি পাওয়াই বড় লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায় স্বাগতিকদের সামনে।

এ অবস্থায় তাইজুল ইসলাম ও তাসকিন আহমেদের ব্যাটে কোনোমতে ২০০ পেরোয় বাংলাদেশ। ১৪ রানে তাসকিনকে ফিরিয়ে দুজনের ২৬ রানের জুটি ভাঙেন জফরা আর্চার।

মঈন আলীর বলে ১০ রান করা তাইজুল ইসলাম তারই তালুবন্দী হলে শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস। ইংল্যান্ডের হয়ে আর্চার, উড, রশিদ ও মঈন আলী দুটি করে এবং ক্রিস ওকস ও উইল জ্যাকস একটি করে উইকেট শিকার করেন।