২০১৬ সালে শেষবারের মতো ঘরের মাঠে সিরিজ হেরেছিল বাংলাদেশ। এরপর একে একে কেটে গেছে ৭ বছর। অবশেষে দীর্ঘ সময় পর ইংল্যান্ডের কাছে টানা দুই ম্যাচের পরাজয়ে ফের ঘরের মাঠে সিরিজ হারের তেতো স্বাদ পেলো টাইগাররা।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করতে নেমে সাত উইকেটে ৩২৬ রান সংগ্রহ করেছিল ইংল্যান্ড। জবাবে ৪৪.৪ ওভারে ১৯৪ রানে অল আউট হয় বাংলাদেশ। টাইগারদের হার ১৩২ রানে।
আরও পড়ুন…‘লুটপাটে জড়িতরাই আজকে বাংলাদেশে নিরাপদ’
এই জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিশ্চিত করেছে ইংল্যান্ড। ৭ বছর আগে ইংলিশদের কাছেই ঘরের মাঠে সবশেষ সিরিজ হারের তেতো স্বাদ পেয়েছিল টাইগাররা।
বাংলাদেশের হয়ে রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা হয় দুঃস্বপ্নের মতো। মুখোমুখি প্রথম বলেই আউট হন লিটন দাস। পরের বলে বাটলারের হাতে ধরা পড়েন নাজমুল হোসেন শান্ত। নিজের পরের ওভারে এসেই মুশফিকুর রহিমকে ফেরান আগের দুই উইকেট নেয়া স্যাম কুরান।
মাত্র ৯ রানে তিন উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারায় চলে যায় বাংলাদেশ। সেখান থেকে বিপর্যয় সামাল দিতে লড়াই করেন সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবাল। বিচ্ছিন্ন হওয়ার আগে দুজনে গড়েন ৭৯ রানের জুটি।
সাকিব-তামিমের জুটিতে যখন ম্যাচে ফেরার স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ, তখনই বিদায় নেন টাইগার ওপেনার। ৩৫ রানে তামিম ফেরার কিছু পরই আউট হন সাকিব। সাজঘরে ফেরার আগে ৫৮ রান করেন এ অলরাউন্ডার।
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ৩২ বা আফিফ হোসেন ধ্রুবর ২৩ রানের ইনিংস দলের দাবি মেটাতে যথেষ্ট ছিল না। শেষদিকে তাসকিন আহমেদের ২১ রানের ইনিংস শুধু হারের ব্যবধানটাই কমিয়েছে। ইংল্যান্ডের হয়ে স্যাম কুরান ও আদিল রশিদ দুজনেই চারটি করে উইকেট শিকার করেন। এছাড়া মঈন আলী নেন এক উইকেট।
এর আগে টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম ইকবাল। ইংল্যান্ডের হয়ে জেসন রয়ের সঙ্গে ইনিংস উদ্বোধনে নামেন ফিল সল্ট। প্রথম ছয় ওভার নির্বিঘ্নে কাটিয়ে দেন দুই ওপেনার।
সপ্তম ওভারে এসে আনন্দের উপলক্ষ পায় স্বাগতিক দল। তাসকিন আহমেদের বল সল্টের ব্যাট ছুঁয়ে চলে যায় স্লিপে দাঁড়ানো নাজমুল হোসেন শান্তর কাছে। দারুণ দক্ষতায় ডাইভ দিয়ে বলটি তালুবন্দী করেন তিনি। সল্ট ফেরেন ৭ রানে।
আরও পড়ুন…সাকিব-তামিমের ব্যাটে এগোচ্ছে বাংলাদেশ
দ্বিতীয় উইকেটে ৫৮ রানের জুটি গড়েন রয় ও আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান ডেভিড মালান। ১১ রানে মালান ফিরলে ভাঙে এ জুটি। এর আগে ৫৪ বলে অর্ধশতক পূরণ করেন রয়। চারে নেমে এদিনও সুবিধা করতে পারেননি জেমস ভিন্স। এ ব্যাটার ৫ রান করে সাজঘরে ফেরেন।
এরপর রয়কে সঙ্গে নিয়ে দারুণভাবে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলার। দুজনের ১০৯ রানের জুটিতে দ্রুতগতিতে এগোতে থাকে ইংল্যান্ড। মাঝে ১০৪ বলে ক্যারিয়ারের দ্বাদশ সেঞ্চুরির দেখা পান রয়।
ভয়ংকর হয়ে ওঠা রয়কে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন সাকিব আল হাসান। আউট হওয়ার আগে ১২৪ বলে ১৩২ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন এ ওপেনার। তার জায়গায় নেমে ১ রানের বেশি করতে পারেননি উইল জ্যাকস।
ইনিংসের বাকি অংশে ঝড় তোলেন বাটলার ও মঈন আলী। মূলত এ দুজনের তাণ্ডবে ইংলিশদের সংগ্রহ ৩০০ ছাড়ায়। যেখানে বাটলার ৬৪ বলে ৭৬ ও মঈন আলী ৩৫ বলে ৪২ রানের ইনিংস উপহার দেন।
শেষদিকে স্যাম কুরানের অপরাজিত ৩৩ রানের ক্যামিওতে ইংল্যান্ডের বড় সংগ্রহ নিশ্চিত হয়। বাংলাদেশের হয়ে তাসকিন আহমেদ তিনটি, মেহেদী হাসান মিরাজ দুটি এবং সাকিব আল হাসান ও তাইজুল ইসলাম একটি করে উইকেট শিকার করেন।
ইবাংলা/এসআরএস