নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় স্থানীয় থানার তৎকালীন ওসি কামরুজ্জামান শিকদার, একজন এসআই ও এএসআইকে সাময়িক বরখাস্ত (সাসপেন্ড) করে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। স্বরাষ্ট্র সচিবকে এই নির্দেশ দেওয়া হয়।
এছাড়া স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) সচিবকে পৃথক নির্দেশে বেগমগঞ্জের ইউপি সদস্য এবং চৌকিদারকে সাসপেন্ড করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লা সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এই রায় দেন।
গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ঘরে ঢুকে স্বামীকে বেঁধে রেখে ৩৭ বছরের এক নারীকে বিবস্ত্র করে ধর্ষণের চেষ্টা করে উপজেলার একলাশপুর এলাকার দেলোয়ার বাহিনী। তারা ওই নারীকে বিবস্ত্র করে নির্মম নির্যাতনের ভিডিও চিত্র ধারণ করে এবং ৪ অক্টোবর তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। ঘটনাটি জানাজানি হলে সারা দেশে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। এ পর্যায়ে পরদিন ঘটনাটি আদালতের নজরে আনা হয়।
তখন হাইকোর্ট এক আদেশে রুল জারিসহ অবিলম্বে ওই নারীর পরিবারকে সব ধরনের নিরাপত্তা দিতে নোয়াখালীর পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন। পাশাপাশি ভিকটিমের বক্তব্য গ্রহণে পুলিশের কোনো অবহেলা আছে কিনা তা অনুসন্ধান করতেও একটি কমিটি করে দেন।
কমিটির প্রধান ছিলেন চৌমুহনী সরকারি এস এ কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আবুল বাশার। সদস্য ছিলেন নোয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইসরাত সাদমীন এবং জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম চৌধুরী।
এছাড়া অবমাননাকর নারীর ওই ভিডিও অপসারণ করতেও বিটিআরসির চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
পরে তদন্ত কমিটি এক প্রতিবেদনে ঘটনার দায়িত্বে অবহেলা পাওয়ায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পুলিশ কর্মকর্তা ও স্থানীয় চৌকিদারের বিষয়ে আদালত যৌক্তিক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দিতে পারে বলে মতামত দেয়। এরই ধরাবাহিকতায় ওই কমিটির দেওয়া প্রতিবেদন অনুসারে রুলের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার রায় দেন হাইকোর্ট।
আদালতে শুনানি করেন ঘটনাটি নজরে নিয়ে সুষ্ঠ বিচার দাবির পক্ষে আবেদনকারী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জেড আই খান পান্না, অনীক আর হক ও আবদুল্লাহ আল মামুন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।