বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে জাপানি চিত্রকলা ‘মাঙ্গা’ কমিক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

মশিউর আনন্দ-

বাংলাদেশ-জাপান বন্ধুত্বের ৫০ বছর পূর্তি উদ্‌যাপনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রামী জীবন নিয়ে জাপানি চিত্রকলা (গ্রাফিকস নোবেল জাপানিজ’মাঙ্গা’ ফর্মে) একটি কমিক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে।

বুধবার (৫ মে) রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে ‘ফাদার অব দ্য ন্যাশন বঙ্গবন্ধু’ নামের বইটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়। বইটি যৌথভাবে লিখেছেন স্কলার্স বাংলাদেশ সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি এম ই চৌধুরী শামীম এবং শাইন পার্টনারস করপোরেশন জাপান এর প্রধান নির্বাহী ইয়েমতো কিয়েতা। বইটি প্রকাশ করেছে এনআরবি স্কলার্স পাবলিশার্স লিমিটেড।

আরও পড়ুন… রেল খাতে আরও বিনিয়োগ বাড়াতে আগ্রহী চীন

জাপানিদের কমিক ও কার্টুন ধাঁচের চিত্রকলার একটি ধরন হচ্ছে মাঙ্গা। বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দীর্ঘ সংগ্রাম এই মাঙ্গা ফর্মে তুলে ধরা হয়েছে বইটিতে। বর্ণনা এবং ব্যতিক্রমী ছবিতে বঙ্গবন্ধুর বর্ণাঢ্য জীবন তুলে ধরা হয়েছে। বইটিতে একই সঙ্গে বাংলাদেশের জন্মের কথা এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা বর্ণনা করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত আইওয়ামা কিমিনোরি। মূল প্রবন্ধ উপাস্থপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফর পিস অ্যান্ড লিবার্টির পরিচালক অধ্যাপক ফখরুল আলম। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নূরুল হুদা, ম্যাক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান ও বুয়েট গ্র্যাজুয়েটস ক্লাবের সভাপতি গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন স্কলার্স বাংলাদেশ সোসাইটির সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী দিলারা আফরোজ খান রূপা।

আরও পড়ুন… ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেটগুলো চিহ্নিত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে

প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, এম ই চৌধুরী শামীম ও ইওয়ামোটো কেইটা যৌথভাবে রচনা করেছেন শিশু-কিশোরদের উপযোগী বই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু। বইটিতে বঙ্গবন্ধুর কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথার মাধ্যমে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাংলাদেশের মহান স্থপতি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। পাশাপাশি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর অবিস্মরণীয় অবদানের ফলে বাংলাদেশ যে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে সে কথাও বলা হয়েছে। ব্যতিক্রমী এই বইটি পাঠ করে পাঠকেরা জানতে পারবে বাংলাদেশের কাহিনি এবং বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসামান্য অবদানের কথা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বইটির ব্যাপক প্রচার ও প্রসার কামনা করছি।

ম্যাক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান ও বুয়েট গ্র্যাজুয়েটস ক্লাবের সভাপতি গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, জাপান আমাদের দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত বন্ধু। বাংলাদেশের জন্ম থেকে জাপান আমাদের উন্নয়নে সহায়তা করে আসছে। তাই জাপানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে জনপ্রিয় মাঙ্গা ফর্মে বইটি প্রকাশ করা হয়েছে।

বিশেষ অতিথি বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত আইওয়ামা কিমিনোরি বলেন, স্কলার্স বাংলাদেশ সোসাইটি এবং এনআরবি স্কলার্স পাবলিশার্স-এর প্রেসিডেন্ট এম ই চৌধুরী শামীম-এর বিশেষ উদ্যোগে এবং শাইন পার্টনার্স কোম্পানি লিমিটেড-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিস্টার ইওয়ামোতো কেইটার সহযোগিতায় ফাদার অব দ্য নেশন বঙ্গবন্ধু গ্রন্থটি প্রকাশ করার জন্য আন্তরিক অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানাই। এটা অত্যন্ত অর্থবহ ও শিক্ষণীয় যে শিশুরা বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ সংগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের কাহিনি মাঙ্গার মাধ্যমে জানতে পারবে। ইংরেজি, বাংলা এবং এমনকি জাপানি ভাষায় বইটির প্রকাশনা জাপানি শিশুদেরও জানার সুযোগ করে দিয়েছে।

আরও পড়ুন… চাষীদের কাছে চাঁদা নিতে গিয়ে গণপিটুনি খেলেন ছাত্রলীগ নেতা

স্কলার্স বাংলাদেশ সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি এম ই চৌধুরী শামীম বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাংলাদেশের মহান স্থপতি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রামী জীবনের সর্বোত্তম সাফল্য বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন। তাঁর একনিষ্ঠ সাধনা, দেশপ্রেম দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশ স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্ব মানচিত্রে নিজ আসন প্রতিষ্ঠিত করেছে। সে বিবেচনায় বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ সমার্থক। ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু’ বইটিতে আমরা বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশকে তুলে ধরেছি।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী ও অকৃত্রিম বন্ধু রাষ্ট্র জাপান। বাংলাদেশ-জাপান বন্ধুত্বের পঞ্চাশ বছরের (১৯৭২-২০২২) প্রকাশনা এই বইতে দুই দেশের দুজন লেখকের বঙ্গবন্ধু বিষয়ে ভাবনাকে যূথবদ্ধ করা হয়েছে। বইটি রচনা ও প্রকাশনায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশে অবস্থিত জাপানি দূতাবাস ও ম্যাক্স গ্রুপের সহযোগিতার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ।

ইবাংলা/এইচআর/৫ এপ্রিল ২০২৩

চিত্রকলাজাপানিবঙ্গবন্ধু